Advertisment

Explained: সংবিধানের ৩৭০ ধারা একটা আইনি চ্যালেঞ্জ, কী তা, যার মুখোমুখি হল সুপ্রিম কোর্ট?

১৬ দিনের শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট শুনেছে যে ৩৭০ ধারার সাংবিধানিক প্রতিশ্রুতি তিনটি মৌলিক গ্যারান্টির ওপর নির্ভরশীল। সেগুলো হল- অসম ফেডারেলিজম, স্বায়ত্তশাসন এবং জম্মু ও কাশ্মীরের জনগণের সম্মতি। এই সম্মতি রাজ্যের আইনসভা (বিধানসভা)-র মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Kashmir

জম্মু ও কাশ্মীর, ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের একমাত্র রাজ্য, যা সংযুক্ত হওয়ার আগে যোগদানের শর্তাবলি নিয়ে আলোচনা করেছে। ১৯৪৯ সালে, গণপরিষদ এই চুক্তি অনুমোদন করেছিল।

সংবিধানের ৩৭০ ধারার সংশোধনী, সুপ্রিম কোর্টের সামনে একটি আইনি চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ তৈরি করে গিয়েছেন সংবিধান প্রণেতারাই। অবশ্য শুধু সংবিধান প্রণেতারাই নন। জম্মু-কাশ্মীরও ভারতে যুক্ত হওয়ার আগে একটি আইনি প্রতিশ্রুতি রক্ষার চুক্তি সংবিধান প্রণেতাদের থেকে সই করিয়ে নিয়েছিল। আর, এজন্যই ১৬ দিনের শুনানিতে, সুপ্রিম কোর্টকে বারবার শুনতে হয়েছে যে সংবিধানের ৩৭০ ধারা সংক্রান্ত সাংবিধানিক প্রতিশ্রুতি তিনটি মৌলিক গ্যারান্টির ওপর নির্ভরশীল। সেই মৌলিক গ্যারান্টিগুলো হল- অসম ফেডারেলিজম, স্বায়ত্তশাসন এবং জম্মু ও কাশ্মীরের জনগণের সম্মতি। যে সম্মতি এর আইনসভা বা জম্মু-কাশ্মীরের বিধানসভার মাধ্যমেই প্রতিফলিত হয় বা হবে।

Advertisment

১৯৪৯ সালের ২৭ মে, ভারতের গণপরিষদ ৩৭০ ধারায় ছাড়পত্র দিয়েছিল। এই ধারা তৈরি হয়েছিল ১৯৪৭ সালে স্বাক্ষরিত হওয়া ইনস্ট্রুমেন্ট অফ অ্যাকসেশন-এর শর্ত অনুযায়ী। সংবিধান বিশেষজ্ঞ এজি নুরানির মতে, ৩৭০ ধারা নিয়ে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু ও তাঁর সহকর্মীরা, জম্মু ও কাশ্মীরের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ এবং তাঁর সহকর্মীদের সঙ্গে মে-অক্টোবর, ১৯৪৯ পর্যন্ত পাঁচ মাস ধরে আলোচনা করেছিলেন। জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্য ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের একমাত্র রাজ্য, যেটি ভারতের সঙ্গে সদস্য হওয়ার আগে শর্তাবলি নিয়ে আলোচনা করেছে। সেই শর্তের ফসল ৩৭০ ধারা। যে ধারা বা কার্যত চুক্তিকে, ভারতের গণপরিষদ অপরিপক্কতার সঙ্গেই মঞ্জুর করেছিল।

যে তিনটি গ্যারান্টির কথা এই মামলার বিচারে সুপ্রিম কোর্টে বারবার উঠেছে, তার প্রথম হল অসম ফেডারেলিজম। যার অর্থ হল, ভারত তিনটি বিষয় ছাড়া জম্মু ও কাশ্মীরে আইন প্রণয়ন করবে না। সেই তিনটি বিষয় হল- প্রতিরক্ষা, বহিরাগত বিষয় এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার বিষয়। ভারতের সংসদ তার বাইরেও আইন প্রণয়ন করতে পারে। কিন্তু, সেই আইন প্রণয়ন করতে গেলে 'জম্মু ও কাশ্মীর গণপরিষদের সম্মতি' লাগবে বলেই চুক্তিতে উল্লেখ আছে।

আরও পড়ুন- হইচই শুধু ৩৭০ নিয়ে! মোদী সরকার জম্মু-কাশ্মীরে আইনের খোলনলচেই বদলে দিয়েছে?

শুধু জম্মু-কাশ্মীরই নয়। বেশ কয়েকটি রাজ্যের বিভিন্ন সাংবিধানিক গ্যারান্টি আছে। যেমন- অন্ধ্রপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, গুজরাট এবং উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি। তার জন্য ৩৭১ বা ৩৭১এ ধারা আছে। এই যুক্তি দেখিয়ে ৩৭০ ধারা অপসারণের পক্ষে বলা হয়েছে, অসম যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে কখনও 'বিশেষ মর্যাদা' বলা যায় না। আর, সেই কারণেই জম্মু ও কাশ্মীরকে ভারতের বাকি অংশের সঙ্গে 'সমান' করার জন্য ৩৭০ ধারা অপসারণ করা প্রয়োজন।

jammu and kashmir Supreme Court of India Modi Government
Advertisment