ভারতীয় জন সংঘের প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। এই জনসংঘকে ভারতীয় জনতা পার্টির পূর্বসূরি বলে ধরা হয়। ১৯৫৩ সালের ২৩ জুন, শ্যামাপ্রসাদ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর সময় শ্যামাপ্রসাদ জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের হেফাজতে ছিলেন। সেরাজ্যে প্রবেশের চেষ্টা করার অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ফলস্বরূপ, আজও মুখার্জির মৃত্যু ষড়যন্ত্রের বাতাসে আবৃত রয়েছে। বিজেপির অনেকেই আজও সেই মৃত্যুকাণ্ড নিয়ে তদন্তের দাবি জানিয়ে আসছেন।
শ্যামাপ্রসাদের মৃত্যু সম্পর্কে সরকারের দাবি
সরকার অবশ্য দাবি করেছিল, শ্যামাপ্রসাদ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তবে, অনেকেই বিশ্বাস করেন যে নেহরুর বিরোধিতা এবং কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার প্রতিশ্রুতি বা ৩৭০ অনুচ্ছেদের বিরুদ্ধে তাঁর লড়াইয়ের জন্যই শ্যামাপ্রসাদকে নীরব করা হয়েছিল। শ্যামাপ্রসাদের বিখ্যাত উক্তি ছিল, 'এক দেশ মে দো বিধান, দো প্রধান অর দো নিশান নেহি চলেঙ্গে।' নেহরু এবং কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁর বিরোধিতা সত্ত্বেও শ্যামাপ্রসাদ অবশ্য নেহেরুর প্রধানমন্ত্রিত্বে প্রথম কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন।
কেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করা হয়েছিল?
দেশভাগের রক্তপাতের পর, নেহেরু হিন্দু রাষ্ট্রের পথ না-নেওয়ার ব্যাপারে দৃঢ় ছিলেন। মুসলমানদের জন্য একটি স্বদেশ হিসেবে পাকিস্তানের জন্ম হয়েছিল। মহান উদারপন্থী রাজনীতিবিদ হিসেবে নেহেরু দেশে মতামত ও পরিচয়ের বৈচিত্র্যকে প্রতিফলিত করার জন্য সরকারের কণ্ঠস্বরে বৈচিত্র্যের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতন ছিলেন।
আরও পড়ুন- নিজের তৈরি অশান্তি, তাতেই টলমল পুতিনের সিংহাসন
তিন বছরের মন্ত্রী
ফলে, কংগ্রেসের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও, নেহেরু তাঁর মন্ত্রিসভায় যোগদানের জন্য দলের বাইরে থেকে দু'জন সদস্যকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তাঁরা হলেন ড. বি আর আম্বেদকর এবং শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি। হিন্দু মহাসভার সদস্য মুখার্জি, ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট, শিল্প ও সরবরাহ মন্ত্রী হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকারে অন্তর্ভুক্ত হন। বিতর্কিত নেহেরু-লিয়াকত চুক্তির কারণে তিনি ১৯৫০ সালের এপ্রিলে পদত্যাগ করেন। মাত্র তিন বছরের কম সময়ের জন্য তাঁর মন্ত্রিত্ব বজায় ছিল।