Advertisment

৪ মে ঠিক কোথায় কোথায় মদের দোকান খোলার অনুমতি দিয়েছে সরকার?

লকডাউনের তৃতীয় পর্বে অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করার স্বার্থে যে নির্দিষ্ট কিছু অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে, মদ বিক্রি তারই আওতায় পড়ে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
liquor stores open

প্রতীকী ছবি

শুক্রবার সারা দেশে মদ বিক্রির অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্র সরকার, যদিও ৪ মে থেকে দেশব্যাপী লকডাউনের মেয়াদ আরও ১৪ দিন বাড়ানো হয়েছে। লকডাউনের তৃতীয় পর্বে অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করার স্বার্থে যে নির্দিষ্ট কিছু অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে, মদ বিক্রি তারই আওতায় পড়ে। এর ফলে রাজ্য সরকারগুলির প্রবল অর্থ সঙ্কট কিছুটা লাঘব হওয়ার আশাও রয়েছে।

Advertisment

কিন্তু এই মদ কি অবাধে বিক্রি হবে, না কিছু নিষেধাজ্ঞা এখনও রয়েছে? সব দোকান খুলবে কি? সমস্ত শহরে, গঞ্জে, গ্রামে, সর্বত্র খুলবে?

কোথায় কোথায় খুলবে মদের দোকান?

কন্টেইনমেন্ট জোন বাদে সর্বত্র খুলবে, তবে কন্টেইনমেন্ট জোনে এখনও কড়াভাবে বজায় থাকবে এলাকা নিয়ন্ত্রণ বিধি, এবং জরুরি প্রয়োজন ছাড়া জনসাধারণের গতিবিধির ওপর প্রায় সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা।

দেশের সমস্ত গ্রীন জোন, অর্থাৎ যেখানে গত ২১ দিনে কোনও COVID-19 সংক্রমণের ঘটনা ঘটে নি, সেখানে শপিং মল বাদে সর্বত্রই খুলবে মদের দোকান, যেহেতু শপিং মলগুলি বন্ধ। এই নিয়ম শহর এবং গ্রামাঞ্চলে একইভাবে প্রযোজ্য।

অরেঞ্জ জোন, অর্থাৎ যেখানে এখনও COVID-19 এর সংক্রমণের হার অনেকটাই কম, সেখানেও গ্রীন জোনের বিধি মেনেই খুলবে মদের দোকান। এর আওতায় পড়বে দেশের প্রায় সমস্ত গ্রাম, এবং অধিকাংশ গঞ্জ শহর, যেহেতু এগুলি অরেঞ্জ জোনের অন্তর্ভুক্ত।

liquor stores open রেড জোনের নিয়মাবলী। অলঙ্করণ: অভিজিৎ বিশ্বাস

রেড জোনেও খুলবে দোকান। এটা অনুমেয়, কারণ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের জারি করা নির্দেশিকায় কোথাও বলা নেই যে রেড জোনে দোকান খুলতে পারবে না। তবে অবশ্যই সব দোকান খুলবে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে খবর, রেড জোনে কেবলমাত্র মল বা বাজারের থেকে পৃথক মদের দোকান, বা কোনও কলোনির মধ্যে অবস্থিত দোকানই খুলবে। বাজার বা মল-এর ভেতরে দোকান হলে খুলবে না।

এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে মুম্বই, দিল্লি, কলকাতা, জয়পুর, ইন্দোর, এবং হায়দরাবাদের মতো বড় শহরে, অতি বেশি মাত্রায় COVID সংক্রমণের কারণে যেগুলি সবই রেড জোন, এবং এইসব শহরে শুধুমাত্র অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের দোকানই খোলা থাকবে। তবে রেড জোনেরও গ্রামাঞ্চলে কিছুটা শিথিল করা হয়েছে নিয়ম, সুতরাং এসব অঞ্চলে খুলবে বাজার এলাকায় (শপিং মল বাদে) অবস্থিত মদের দোকানও।

নির্দেশিকায় রেড জোনে মদের দোকানের কথা আলাদা করে বলা হয়নি কেন?

নির্দেশিকা জারি হয় মূলত নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রেই - অনুমোদনের ক্ষেত্রে নয়। অতএব, যা কিছু নিষিদ্ধ নয়, তাই অনুমোদিত।

রেড জোনে যে সমস্ত বাণিজ্যিক কার্যকলাপ অনুমোদিত, সে সম্পর্কে নির্দেশিকায় বলা হয়েছে: "সমস্ত একক দোকান, কলোনির ভেতরের দোকান, এবং আবাসিক কমপ্লেক্সের ভেতরের দোকান খোলা থাকতে পারে, জরুরি অথবা কম জরুরি পণ্য নির্বিশেষে।।"

যখন মদের দোকান খোলার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়, তখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশিকার শেষ পর্বে ওই একই জায়গায় বলা হয়েছিল, শুধুমাত্র "শপস অ্যান্ড এস্টাবলিশমেন্ট আক্ত-এর আওতাধীন" দোকানগুলিই খোলা থাকতে পারে। সুতরাং এক্সাইজ অ্যাক্ট-এর আওতাধীন দোকানগুলি বন্ধ থাকবে।

এই শর্ত উঠে যাওয়ায় এখন খুলতে পারে মল এবং বাজার এলাকা বাদে সব মদের দোকানই।

publive-image গ্রীন এবং অরেঞ্জ জোনের নিয়মাবলী। অলঙ্করণ: অভিজিৎ বিশ্বাস

তাহলে এটাই চূড়ান্ত ধরে নেওয়া যায়?

না, ঠিক তা নয়। এখনও নয়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক রাষ্ট্রীয় স্তরে নির্দেশিকা জারি করেছে। এবার সেই নির্দেশিকার ভিত্তিতে বিভিন্ন রাজ্য তাদের পরিস্থিতি অনুযায়ী পৃথক নির্দেশিকা জারি করবে। এবং তাদের যদি মনে হয় মদের দোকান খুলবে না, তবে এই সংক্রান্ত রাষ্ট্রীয় নির্দেশিকা উপেক্ষাও করতে পারে তারা।

এর কারণ, ২০০৫ সালের বিপর্যয় মোকাবিলা আইন অনুযায়ী, প্রয়োজন বুঝলে COVID-19 নিয়ন্ত্রণ বিধি আরও কড়া করতে পারে যে কোনও রাজ্য। কেন্দ্রের জারি করা নিষেধাজ্ঞাকে লঘু করতে না পারলেও শিথিলতার ক্ষেত্রে উপেক্ষা করার ক্ষমতা তাদের আছে।

তবে একথা বলা বাহুল্য যে রাজস্বের যা হাল, তাতে কোনও রাজ্যই এ সময় মদের দোকান বন্ধ রাখার পথ বেছে নেবে না বলেই মনে হয়। দেশের অধিকাংশ রাজ্যেই রাজস্বের অন্যতম প্রধান উৎস হলো মদের ব্যবসা। এবং অধিকাংশ রাজ্যেই এই ব্যবসা থেকে রাজস্ব আয় হয় ২৫ থেকে ৪০ শতাংশ।

তাহলে ৪ মে কি বাড়ির কাছাকাছি মদের দোকানে চলে গেলেই হবে?

না, হবে না। এবং করোনা মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের যা চিত্র সামনে এসেছে, তাতে যাওয়া উচিতও নয়।

কড়া সামাজিক দূরত্ব-বিধি মানতেই হবে। দুই গ্রাহকের মধ্যে ছয় ফিটের দূরত্ব বজায় রাখতেই হবে। এবং মদের দোকানের আশেপাশে এক এক বারে পাঁচজনের বেশি মানুষের জমায়েত করা যাবে না। সকলকেই মাস্ক পরতে হবে, এবং ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে হবে।

সুতরাং দোকানে যদি যানও, সমস্ত সাবধানতা অবলম্বন করে তবেই, এবং লম্বা লাইনে দাঁড়ানোর প্রস্তুতি নিয়েই।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Advertisment