জনস্বাস্থ্য, অর্থনীতি, এবং পরিবেশকে কতটা প্রভাবিত করেছে কোভিড মহামারী, তা এখনও সম্পূর্ণ স্পষ্ট নয়। এই সময়েই সামনে এলো এক নতুন তথ্য: যানবাহন জনিত দূষণ কমলেও লকডাউনের দৌলতে সম্ভবত জন্ম নিচ্ছে এক বিপজ্জনক নতুন দূষণকারী, যার নাম 'আরবান ওজোন', অর্থাৎ শহুরে ওজোন, যা কিনা মানবদেহের ভিতরে বায়ু চলাচলের পথে ঘটাতে পারে প্রদাহ (inflammation)।
এই সংক্রান্ত গবেষণা আপাতত ব্রিটেনেই সীমিত। ইউনিভার্সিটি অফ ম্যানচেস্টার থেকে বায়ুমণ্ডলীয় রচনার অধ্যাপক হিউ কো, এবং ম্যানচেস্টারের আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস বিভাগের বায়ুদূষণ বিশেষজ্ঞ জেমস অ্যালান-এর নেতৃত্বে একটি দল বর্তমানে এই গবেষণায় রত। গবেষণার আবিষ্কার সংক্রান্ত তথ্য জমা দেওয়া হয়েছে ব্রিটিশ সরকারের পরিবেশ, খাদ্য ও গ্রামীণ বিষয়ক বিভাগের কাছে।
আরও পড়ুন: সার্স মহামারীর থেকে শিখেছিল পূর্ব এশিয়া; করোনার থেকে কী শিখবে ভারত?
নাইট্রোজেন অক্সাইড: মার্চের মাঝামাঝি থেকে এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত ব্রিটেনের অধিকাংশ স্থানেই দেখা যায়, হ্রাস পেয়েছে বাতাসে নাইট্রোজেন অক্সাইডের মাত্রা। এই হ্রাসের পরিমাণ ২০ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত। তবে গ্রামাঞ্চলে এই হ্রাসের মাত্রা বেশি, এবং দিনের শুরুতে বাতাসে যে পরিমাণ নাইট্রোজেন অক্সাইড থাকে, দিনের শেষে ততটা থাকে না।
পিএম ২.৫: বাতাসে ভাসমান এই বস্তুকণার হ্রাস পাওয়ার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায় নি। অধ্যাপক কো জানিয়েছেন, "এই বস্তুকণা মূলত যানবাহনেরই সৃষ্টি, তবে ঘরোয়া কাঠের আগুন, বা শিল্প এবং কৃষিক্ষেত্রে কিছু রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া থেকেও উৎপন্ন হতে পারে। সুতরাং বাতাসের গুণগত মান সেভাবে উন্নত হয় নি।"
আরবান ওজোন: নাইট্রোজেন অক্সাইড হ্রাস পাওয়ার ফলে ফোটোকেমিক্যাল উৎপাদনের মাধ্যমে বাতাসে বাড়তে পারে ক্ষতিকারক ওজোন গ্যাসের মাত্রা, বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে। এর প্রধান কারণ, উচ্চতর তাপমাত্রার ফলে গাছপালার মতো প্রাকৃতিক সূত্র থেকে বাড়বে বায়োজেনিক হাইড্রোকার্বনের নিঃসরণ, যার ফলে উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়বে ওজোনের মাত্রা, বিশেষ করে শহরাঞ্চলে।
আরও পড়ুন: ভারতে রাসায়নিক দুর্ঘটনা বিষয়ে কী ধরনের সুরক্ষাকবচ রয়েছে?
বায়ুমণ্ডলের উচ্চস্তরে সূর্যের ক্ষতিকারক আলট্রা-ভায়োলেট রশ্মির প্রভাব ঠেকাতে ওজোনের উপস্থিতি অতি আবশ্যক, কিন্তু মাটির কাছাকাছি তার বিচরণ বিপজ্জনক হতে পারে। বহু জৈব অণুর (biological molecule) ক্ষেত্রে পরিবর্তন বা ক্ষতি সাধন করতে পারে ওজোন গ্যাস।
তথ্যসূত্র: ইউনিভার্সিটি অফ ম্যানচেস্টার
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন