আনলকের দ্বিতীয় পর্যায়ে দেশে লাফিয়ে বেড়েছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। বহু রাজ্যে কোথাও আগামী এক সপ্তাহ কোথাও দশদিনের জন্য ফের লকডাউন ঘোষণা হয়েছে। মহারাষ্ট্র, যেখানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দেশের নিরিখে সবচেয়ে বেশি সেখানেও আগামী আরেক সপ্তাহ লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। শুধু মহারাষ্ট্রেই নয়, তামিলনাড়ু, গৌহাটি, বেঙ্গালুরু, হায়দ্রাবাদ কিংবা পশ্চিমবঙ্গ-করোনা রুখতে সব রাজ্যেই ভরসা রেখেছে লকডাউনে।
যদিও এটা এখনই সেই সময় নয় যেখানে লকডাউনের কার্যকারীতা নিয়ে কথা বলা যায়। কারণ এই ধাপে লকডাউন সবে শুরু হয়েছে। তবে এটা ঠিক যে রাজ্যগুলিতে যদি লকডাউন বিধি কার্যকর না করা হত সেক্ষেত্রে করোনা সংক্রমণের হার আরও দ্রুততার সঙ্গে বৃদ্ধি পেত। তবে একটা বিষয় ভেবে দেখতে হবে। লকডাউন জারি হলেও তা কঠোরভাবে জারি হয়েছে নির্দিষ্ট কিছু এলাকায়। প্রথম এবং দ্বিতীয় ধাপে সারা দেশব্যাপী যেভাবে লকডাউন চলছিল সেখানে করোনা রুখতে পারা সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু এখন কতটা সম্ভব তা প্রশ্ন জাগিয়ে তুলছে। সেই সময় দেশব্যাপী লোক গৃহবন্দি ছিল। তাই ১৪০ কোটির দেশে করোনাকে অনেকটা সহজে আটকে রাখা গিয়েছিল।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2020/07/explained-lead.jpg)
কিন্তু আনলকের স্রোতে ফের নতুন করে জেগে উঠেছে কোভিড-১৯ ভাইরাস। পশ্চিমবঙ্গে শুক্রবার একদিনে আক্রান্ত হয়েছে ১২০০ জন। কিন্তু এই লকডাউনে কি মানুষ বুঝতে পারবে যে এখনও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি? এখনও সেই 'পুরানো সেই দিনের কথাই' ভাবতে হবে, ফিরে পাওয়া যাবে না? এই লকডাউন কি তেমন কিছু ভাবতে বাধ্য করছে মানুষকে? প্রশ্নটা থেকে যাচ্ছে।
সম্প্রতি বিহারে বিয়ের অনুষ্ঠান হোক কিংবা জন্মদিনের পার্টি, অথবা হায়দ্রাবাদের অনুষ্ঠান পর্ব যেখানে আমন্ত্রিত হয়ে এসে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে পড়েন বহু মানুষ। শুধু তাই-ই নয়, মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন একাধিক। একটাই শব্দ মনে আসে সেখানে কতটা সচেতন আমরা? এখনও মাস্ক পরা আমাদের কাছে বিলাসিতা। সঠিক মাস্ক ব্যবহার অনেকেই শিখে উঠতে পারেনি। নিয়ম মেনে সামাজিক দূরত্ববিধি তো আনলকে শিকেয় উঠেছে। প্রয়োজন নেই, তবুও ভ্রমণে যাচ্ছেন অনেকেই। কিন্তু এবারের লকডাউন থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত। ভেবে দেখা উচিত যতটা সহজ করে দেখছি করোনা পরিস্থিতি, আসলে ততটা সহজ নয়।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2020/07/exp.1-inline.jpg)
অন্তত এটা সহজ সময় নয়। দেশে একদিনে আক্রান্ত হয়েছে ২৭ হাজার জন। প্রতিদিন বেড়েই চলেছে সেই সংখ্যা। গত ন 'দিনে আক্রান্ত হয়েছে ২ লক্ষ মানুষ। বিশ্বের নিরিখে করোনা আক্রান্তে ভারত আজ তৃতীয়স্থানে। মনে করাচ্ছে এটাই, এবারের লকডাউনকে সহজভাবে নেওয়া উচিত নয়। দেশের ১০টি রাজ্যের মধ্যে ৬টি রাজ্যে ফের নতুন করে আসর জমিয়েছে এই জীবাণু। দিল্লি, তেলেঙ্গানায় সংখ্যা কমতির দিকে গেলেও পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপ্রদেশের চিত্র আশঙ্কা তৈরি করছে। মৃত্যু বাড়ছে দেশে। এবারের লকডাউন থেকে কি সেই শিক্ষা নিতে পারব?
Read the story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন