Advertisment

পঙ্গপালের উপদ্রব, প্রকোপ ও প্লেগ- এসবের মধ্যে ফারাক কী?

ইন্দো-পাক সীমান্ত থেকে আসা বসন্তের এই পঙ্গপাল যারা উত্তরের রাজ্যগুলির দিকে রওয়ানা দিয়েছে, তারা বর্ষা শুরু হলে রাজস্থানে ফিরে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Locust Situation

মরু পঙ্গপাল সর্বদাই ভারত ও মরিশিয়ানার মধ্যবর্তী কোনো মরুভূমিতে অবস্থান করে

পঙ্গপাল হানা নিয়ে আরও চার সপ্তাহ ভারতকে হাই অ্যালার্টে থাকতে হবে, সাবধান করেছে ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন (ফাও)। গত ২৬ বছরের মধ্যে এরকম পঙ্গপাল হানার মুখে পড়েনি ভারত।

Advertisment

শুক্রবারের সাম্প্রতিকতম আপডেটে ফাও বলেছে বসন্তের এই পঙ্গপাল যারা ইন্দো-পাক সীমানা থেকে এসে উত্তরের রাজ্যগুলির দিকে রওয়ানা দিয়েছে, তারা বর্ষা শুরু হলে রাজস্থানে ফিরে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। ফাও এই মরু পঙ্গপাল পরিস্থিতিকে তিনভাগে ভাগ করেছে। উপদ্রব (outbreak), প্রকোপ (upsurge) এবং প্লেগ (plague)।

পঙ্গপালের উপদ্রব

উপদ্রব শুরু হবার আগে ফাও প্রথমে মরু পঙ্গপালের ঝুঁকির কথা জানায়, যা জাতীয় নিরীক্ষণ, রিমোট সেন্সিং ইমেজারি, কন্ট্রোল ডেটা ও ঐতিহাসিক রেকর্ডের মাধ্যমে স্থিরীকৃত হয়। এ ধরনের ঝুঁকির কথা ২০১২, ২০১৩ ও ২০১৫ সালে জানানো হয়েছিল। তবে কোনওবারই তা প্রকোপে পরিণত হয়নি।

মরু পঙ্গপাল সর্বদাই ভারত ও মরিশিয়ানার মধ্যবর্তী কোনো মরুভূমিতে অবস্থান করে। ভাল বৃষ্টি হলে এবং সবুজ তৈরি হলে, মরু পঙ্গপাল সংখ্যায় বাড়তে থাকে এবং নিয়নত্রণ কার না গেলে এক দু মাসের মধ্যে  তাদের মধ্যে ডানাহীন পঙ্গপালের ছোট দল ও ডানাওলা পঙ্গপালের ঝাঁক তৈরি হয়।

এই পরিস্থিতিকে বলে উপদ্রব। এরকম পরিস্থিতি কোনও একটি দেশের একটি অংশের ৫০০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে তৈরি হয়। ফাওয়ের ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে ২০১৮, ২০১৬, ২০১৪, ২০১৩, ২০১২, ২০০৯, ২০০৮, ২০০৭ ও ২০০৬ সালে মোট ৯টি এরকম ঘটনা ঘটেছে।

পঙ্গপালের প্রকোপ

মরু পঙ্গপালের আরও গুরুতর পরিস্থিতি হল প্রকোপ এবং এ অবস্থায় একটি এলাকা সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রকোপ শুরু হয় যদি একটি বা একাধিক পরপর উপদ্রবকে সামলানো না যায় এবং যদি সন্নিহিত এলাকায় অস্বাভাবিক ধরনের ভারি বৃষ্টিপাত হয়, পরপর কয়েক মরশুম বংশবিস্তারের জেরে পঙ্গপালের ঝাঁক তৈরি হতে পারে। ফাওয়ের ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে ২০০৪-০৫, ১৯৯৬-৯৮, ১৯৯৪-৯৬, ১৯৯২-৯৪ ও ১৯৭২-৭৪-এ এ ধরনের প্রকোপ দেখা দিয়েছিল। ১৯৯২-৯৪-এর প্রকোপে ভারত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সেবার লোহিত সাগরের উপকূলে মরু পঙ্গপালের কয়েকটি প্রজন্মের বংশবিস্তার করার পর ১৯৯২ সালের শীতে আরবের মধ্য দিয়ে ভারত ও পাকিস্তানে ধেয়ে আসে।

পঙ্গপালের প্লেগ

সবচেয়ে মারাত্মক পরিস্থিতি তৈরি হয় প্লেগের সময়ে, যখন কোনও একটি প্রকোপকে সামলানো যায় না এবং প্রজননের পরিবেশগত সুবিধা মেলে। এ সময়ে পঙ্গপালের সংখ্যা ও আকার বাড়তে থাকে এবং এদের ঝাঁকের উপদ্রব দেখা যায়।

এমনটা রাতারাতি ঘটে না। একাধিক উপদ্রব ও প্রকোপের ঘটনা অন্তত এক বছর ধরে ঘটনার পর প্লেগ পরিস্থিতি তৈরি হয়। বড় ধরনের প্লেগ পরিস্থিতি দুটি বা তার বেশি এলাকায় ঘটে এবং একই সঙ্গে ঘটে। প্লেগ পরিস্থিতি তৈরি হয় ২৯ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে এবং তা ৫৮টির বেশি দেশে একই সঙ্গে ঘটতে পারে।

১৯০০-য় এরকম ৬টি বড়সড় প্লেগের ঘটনা ঘটেছে, যা ১৩ বছর পর্যন্ত স্থায়ী ছিল বলে ফাওয়ের ওয়েবসাইট থেকে জানা গিয়েছে।

Advertisment