২০১৮ সালে লোকসভার একটি কমিটি প্রস্তাব দেয় যারা ওয়েলে প্রবেশ করবেন অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে চেঁচামেচি করে অধ্যক্ষের নিষেধ সত্ত্বেও বার বার অধিবেশনে অসুবিধে সৃষ্টি করবেন, তাহলে তাঁরা সাসপেন্ড হবেন।
লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা সংসদে বিশৃঙ্খলার জন্য দুজন কংগ্রেস সদস্যকে বরখাস্ত করেছেন। এ ঘটনা সাংসদদের ব্যবহার ও সে সম্পর্কিত বিষয়কে সামনে এনে দিয়েছে। এ সম্পর্কিত আইনে বলা রয়েছে, অধ্যক্ষ নিজের সিদ্ধান্ত কার্যকরী করার জন্য নির্দেশ জারি করতে এবং সে নির্দেশ কার্যকর করতে সমস্তরকম ব্যবস্থা নিতে পারেন।
Advertisment
আইন মোতাবেক, অধ্যক্ষ যদি মনে করেন কোনও সদস্যের আচরণ অতীব বিশৃঙ্খল, সে ক্ষেত্রে তিনি ওই সদস্যকে বরখাস্ত করতে পারেন, এবং একবার তেমন নির্দেশ জারি হলে, ওই সদস্য সেদিনের অধিবেশনে অনুপস্থিত থাকবেন।
আইনে বলা হয়েছে, ১) যদি অধ্যক্ষ মনে করেন যে কোনও সদস্য তাঁর পদের অসম্মান অথবা কক্ষের নিয়মভঙ্গের মত ঘটনা বারবার ঘটিয়ে সভার কার্যপ্রণালীতে বাধা সৃষ্টি করছেন, তাহলে তিনি উক্ত সদস্যের নামোল্লেখ করতে পারেন।
২) যদি কোনও সদস্যের নাম অধ্যক্ষের দ্বারা উল্লিখিত হয়, তাহলে অধ্যক্ষ উক্ত সদস্যের বিষয়ে মোশন আনবেন এবং তাঁকে অধিবেশনের পুরো সময়কাল পর্যন্ত সাসপেন্ড করতে পারবেন। তবে অধিবেশন মোশন এনে এই সাসপেনশন প্রত্যাহার করতে পারে।
এ বছরের জানুয়ারি মাসে অধ্যক্ষ সুমিত্রা মহাজন লোকসভায় টিডিপি এবং এআইডিএমকের ৪৫ জন সদস্যকে ক্রমাগত সবার কাজে বাধা সৃষ্টি করার জন্য বরখাস্ত করেছিলেন। পাঁচবার পরপর ধর্না দেওয়ার জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছিল ২৪ জন এআইডিএমকে সাংসদকে। একদিন পর তিনি ২১ জন এআইডিএমকে ও টিডিপি সদস্যকে সাসপেন্ড করেন।
এআইডিএমকে সদস্যরা ক্রমাগত অধ্যক্ষের আসনের দিকে কাগজ ছুড়ছিলেন। সতর্ক করা সত্ত্বেও তাঁর কর্ণপাত না করায় অধ্যক্ষ তাঁদের সংসদের মেয়াদ চলাকালীন পুরো সময় পর্যন্ত তাঁদের সভায় হাজিরার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
২০১৪ সালে তৎকালীন অধ্যক্ষ মীরা কুমার সে সময়ের অবিভক্ত অন্ধ্রপ্রদেশের ১৮জন সদস্যকে সাসপেন্ড করেন। সাসপেন্ড হওয়া বিধায়করা কেউ তেলেঙ্গানা গঠনের পক্ষে, কেউ বা বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছিলেন।
২০১৮ সালে লোকসভার একটি কমিটি প্রস্তাব দেয় যারা ওয়েলে প্রবেশ করবেন অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে চেঁচামেচি করে অধ্যক্ষের নিষেধ সত্ত্বেও বার বার অধিবেশনে অসুবিধে সৃষ্টি করবেন, তাহলে তাঁরা সাসপেন্ড হবেন।
তবে আইনের কথা যদি ছেড়েও দেওয়া হয়, তাহলে দেখা গিয়েছে নীতির থেকেও যৌক্তিকতার নিরিখে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকে। শাসক দল সর্বদাই শৃঙ্খলা রক্ষার পক্ষে সওয়াল করে থাকে, বিরোধীরা প্রতিবাদের অধিকারে বিষয়ে সরব হয়। অবস্থান পরিবর্তন হলে ভূমিকারও সেই অনুসারে বদল ঘটে থাকে।