২০২৩ শেষ হওয়া, যেন একটা অশান্ত তিন বছরের সমাপ্তি। এক শতাব্দীতে একবারের জন্য আসা অতিমারি, দুটি রক্তাক্ত যুদ্ধ, আন্তর্জাতিক মুদ্রাস্ফীতি, সুরক্ষার ওপর জোর দেওয়া, অতিমারি-পরবর্তীতে পরিস্থিতি পুনরুদ্ধার, বিশ্বায়নের ওপর দীর্ঘস্থায়ী ঐকমত্য- এই সব কিছু ছেড়ে যেন এবার এগিয়ে চলার সময়।
বিশ্বের ৪০ দেশে নির্বাচন
২০২৪-এ বিশ্বের ৪০টি দেশে নির্বাচন হবে। জানুয়ারিতে তাইওয়ান থেকে নভেম্বরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এপ্রিল-মে মাসে এদেশেও লোকসভা নির্বাচন প্রত্যাশিত। সেই ভোটের প্রস্তুতি এবং নতুন সরকারের অর্থনৈতিক এজেন্ডা ভারতীয় অর্থনীতির ওপর একাধিক প্রভাব ফেলবে। তারই মধ্যে প্রাক-নির্বাচনী ব্যয়ে উদ্দীপনার অভাব, কল্যাণবাদ বনাম চুঁইয়ে পড়া বৃদ্ধির বিতর্ক, এসব যেন ভারতের নির্বাচনের আগে আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠতে চলেছে। খাদ্যদ্রব্যের মূল্যস্ফীতি, গ্রামীণ বিকাশ, পরিষেবায় মন্থরতা, নতুন প্রযুক্তিতে জোর ভারতের জনসংখ্যাকে কীভাবে কাজে লাগানো যায়, সেই প্রশ্নও ইতিমধ্যে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।
গ্রামীণ বৃদ্ধি ক্ষতিগ্রস্ত
মার্কিন বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান শ্যাস আগামী বছরের প্রথমার্ধে বৃদ্ধি বাড়ানোর পূর্বাভাস দিয়েছে। নির্বাচনের আগে খরচের ধাক্কা, বিনিয়োগ বৃদ্ধির সম্ভাবনার পুনরুজ্জীবন বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। নির্বাচন মেটার পর, যে বিনিয়োগ শুরু হয়। যাইহোক, অর্থনীতিবিদরা একটি সম্ভাব্য মন্দারও আশঙ্কা করছেন। একইসঙ্গে তাঁরা জানিয়েছেন, নির্বাচন যত কাছে আসবে, রাজনৈতিক কার্যকলাপের ততই অগ্রগতি ঘটবে। আর, আর্থিক বৃদ্ধি ব্যাহত হবে। বিশেষ করে ক্ষতিগ্রস্ত হবে গ্রামীণ বৃদ্ধি। যার সঙ্গে খরচের একটি বিশেষ যোগাযোগ রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের কথা
অ্যাক্সিস ব্যাংকের বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, প্রাক-অতিমারীর প্রবণতা বনাম ভারতের আউটপুট ব্যবধান ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭% কমেছে। এভাবে গোটা বিশ্বই ব্যবধান কমানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। ভারতের যত শতাংশ ব্যবধান কমেছে, তা বিশ্বের গড়ের সমান। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, ২০২৪ অর্থবর্ষের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের জিডিপি কিছুটা স্পষ্ট এবং ইতিবাচক হতে চলেছে। নির্মাণ খাতে গতি আসবে। খনি, বিদ্যুৎ, আর পরিষেবা ক্ষেত্রে সম্প্রসারণ ঘটবে। পাশাপাশি দ্রব্যমূল্য হ্রাস হতে পারে। পাশাপাশি, বাড়তে পারে জিডিপি।
আরও পড়ুন- মোদী জমানায় ভারত নাকি অর্থনীতিতে বিরাট সফল! কথাটা আদৌ সত্যি?
বিনিয়োগে ভারত
বাজারের বৃদ্ধির গতি একটি সংকেত যে বিনিয়োগকারীরা, বিশেষ করে গার্হস্থ্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য উৎপাদনে ইচ্ছুক বিনিয়োগকারীরা, তালিকাভুক্ত কোম্পানি এবং তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলির ওপর বাজি ধরতে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা বিনিয়োগ বাড়াবে। মিউচুয়াল ফান্ড সেক্টর এবং বিমা কোম্পানিগুলোতেও বড় বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করবে। যদিও এই সুবিধা ভারতে সীমাবদ্ধ থাকবে। সেক্ষেত্রে দেশীয় শিল্পপতিরাই মূল সুবিধা ভোগ করবেন।