বুধবার (৩ মে) মণিপুরের অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (এটিএসইউএম)-এর ডাকা ‘উপজাতি সংহতি মার্চ’ চলাকালীন মণিপুরের বিভিন্ন স্থানে হিংসাত্মক সংঘর্ষ হয়। সেনা ও আসাম রাইফেলস সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন এলাকায় পতাকা মিছিল করে। মেইতেই সম্প্রদায়কে রাজ্যের তফসিলি উপজাতির (এসটি) তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার দীর্ঘদিনের দাবির বিরোধিতা করার জন্য ওই বুধবারে মিছিল ডাকা হয়েছিল। মেইতেইদের এই দাবি, তার আগের মাসে মণিপুর হাইকোর্টের আদেশে উত্সাহ পেয়েছিল।
আদালতের নির্দেশের বিরোধিতা করেছিল বিভিন্ন উপজাতি সংগঠন
হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি মেইতেইদের দাবি গ্রহণ করেছিলেন। তাঁর আদেশের বিরোধিতা করেছিল উত্তর-পূর্বের একাধিক রাজ্যের উপজাতি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলো। আদালতের নির্দেশ ১৪ এপ্রিল প্রকাশিত হয়েছিল। আদালত সরকারকে দাবিটি বিবেচনা করতে বলেছিল। সেই নির্দেশই মণিপুর উপত্যকায় বসবাসকারী মেইতেই সম্প্রদায় এবং পার্বত্য রাজ্যের পাহাড়ি উপজাতিদের মধ্যে ঐতিহাসিক উত্তেজনাকে ফুটিয়ে তোলে।
মণিপুরে বসবাসকারী প্রধান সম্প্রদায় কোনগুলো?
মণিপুরের সবচেয়ে বড় সম্প্রদায় হল মেইটিস বা মেইতেই। এই পার্বত্য রাজ্যে ৩৪টি স্বীকৃত উপজাতি রয়েছে। যাদের বেশিরভাগকেই 'কোনও কুকি উপজাতি' এবং 'নাগা উপজাতি' হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে। পার্বত্য রাজ্যের কেন্দ্রীয় উপত্যকাটি মণিপুরের প্রায় ১০% ভূখণ্ডজুড়ে। এটি প্রাথমিকভাবে মেইতেই এবং মেইতেই পাঙ্গালদের বাসভূমি। যারা পার্বত্য রাজ্যের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬৪.৬%। মণিপুরের অবশিষ্ট ৯০% ভৌগোলিক অঞ্চল উপত্যকার পার্শ্ববর্তী পাহাড় নিয়ে গঠিত। যা স্বীকৃত উপজাতিদের আবাসস্থল। এই অঞ্চলে মণিপুরের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩৫.৪% মানুষ বসবাস করেন।
আরও পড়ুন- ট্রোলিং, ব্যক্তিগত জীবনে নজরদারি, প্রযুক্তির এই সব অপব্যবহারের বিরুদ্ধে সরব প্রধান বিচারপতি
মেইতেই সম্প্রদায় কেন এসটি মর্যাদা চায়?
অন্তত ২০১২ সাল থেকে মেইতেইদের তফসিলি উপজাতি দাবির সমর্থনে একটি সংগঠিত চেষ্টা চলছে মণিপুরে। এই দাবির পিছনে রয়েছে মেইতেইদের সংগঠন, মণিপুরের তফসিলি উপজাতি দাবি কমিটি (এসটিডিসিএম)। মণিপুর হাইকোর্টের সামনে কমিটির সাম্প্রতিক আবেদনটি ছিল, মেইটিস বা মেইতেইদের যাতে উপজাতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ভারতীয় সংবিধানের তফসিলি উপজাতির তালিকায় যাতে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কেন্দ্রীয় তফসিলি উপজাতি মন্ত্রকের কাছে যেন এমনই আবেদন জানায় মণিপুর সরকার। কারণ, মণিপুর সরকারের সেই সুপারিশ পাওয়ার পরই কেন্দ্রীয় সরকার মেইতেইদের উপজাতির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে।