অক্টোবর ২০১৯ থেকে সেপ্টেম্বর ২০২০ পর্যন্ত ২৭ জন কেন্দ্রীয় চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারের যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে তাতে এম এস ধোনির নাম নেই। এ ঘটনা অপ্রত্যাশিত নয়। প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ক গত প্রায় ৬ মাস ধরে খেলার মধ্যে নেই।
বিসিসিআই যে বার্ষিক চুক্তি করে, তা ভারতের হয়ে যাঁদের পাওয়া যাবে তাঁদের নিয়ে। ধোনি ২০১৯ সালের বিশ্বকাপের পর থেকে এখনও কোনও প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে খেলেননি। গত এক বছর তিনি ৫ কোটি টাকার গ্রেড এ চুক্তিবদ্ধ ছিলেন।
একজন চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড় আহত না হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে পাওয়া যাচ্ছে না, এ ঘটনা কী ভাবে ঘটে, তা নিয়ে এমনকি বিসিসিআইয়ের মধ্যেও গুঞ্জন শুরু হয়েছে। ধোনি বিশ্বকাপে পিঠে ব্যথা নিয়ে গিয়েছিলেন, যা টুর্নামেন্টের মধ্যেই বেড়েছিল।
বিশ্বকাপের সময়ে তাঁর কব্জিতেও চোট লেগেছিল। কিন্তু একজন চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড়কে সেরে ওঠা ও রিহ্যাবে যাওয়ার জন্য ন্যাশনাল ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে যেতে হয়। ধোনি তা করেননি। তার বদলে সাম্মানিক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ধোনি বিশ্বকাপের পরে কাশ্মীরে ভারতীয় সেনার প্যারা রেজিমেন্টে যোগ দেন।
বিষয়টিকে এখান থেকে দেখা দরকার।
বর্তমানে খেলার মধ্যে নেই, এমন কারও হাতে চুক্তিপত্র তুলে দিতে পারে না বিসিসিআই। একই সঙ্গে এটাও ঘটনা যে নতুন চুক্তি ধোনির ক্রিকেটার কেরিয়ার খতম করে দিল, এমন নয়। অন্তত টি২০ আন্তর্জাতিকের ক্ষেত্রে তো তেমনটা নয়ই।
দীর্ঘদিন আগেই ধোনি টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন। পরবর্তী ৫০ ওভারের বিশ্বকাপের এখনও তিন বছর দেরি আছে, সে ফর্ম্যাটের পরিকল্পনায় তিনি খাটবেনও না। নির্বাচকরা এবং ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট ঋষভ পন্থকে তৈরি করছেন, তাঁকেই ভবিষ্যৎ হিসেবে ভেবে নেওয়া হচ্ছে।
তবে আইসিসি টি ২০ বিশ্বকাপ এ বছরের অক্টোবর-নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ায় হতে চলেছে। ধোনি যদি এবারের আইপিএলে বড়সড় কিছু করতে পারেন, তাহলে তাঁর পক্ষে ব্যাপারটা অন্যরকম হতেই পারে। সে কারণেই ধোনি এখনও তাঁর সাদা বলের ক্রিকেটকে বিদায় জানাননি। মনে রাখতে হবে, অস্ট্রেলিয়ায় সিরিজ চলাকালীনই তিনি অবসর ঘোষণা করেছিলেন। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে অধিনায়কত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্তও একই রকমভাবে হঠাৎ এসেছিল।
পন্তের এখনও সময় লাগছে। এতদিনে তিনি একটা ক্যাচমিস করলে বা স্টাম্পিং ফসকালে অথবা রিভিউ কলে ভুল করলে ভারত জুড়ে ধোনি ধোনি চিৎকারের সঙ্গে সড়গড় হয়ে গিয়েছেন।
এমনকী অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ওয়াংখেড়েতে পন্ত আহত হবার পর স্ট্যান্ড বাই হিসেবে উইকেটের পিছনে দাঁড়ানো কে এল রাহুলকেও ধোনি ধোনি নিনাদ শুনতে হয়েছে।
জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডে পাঁচটি টি ২০ ও তিনটি একদিনের আন্তর্জাতিক খেলবে ভারত। এই পুরো সীমিত ওভারের ক্রিকেটই ভারতকে খেলতে হবে সম্পূর্ণ অন্য কন্ডিশনে। পন্তের বিশাল পরীক্ষা এখানেই। তিনি ব্যর্থ হলেই ধোনিকে ফেরানোর আওয়াজ উঠবে।
এরপরেই আইপিএল। ধোনি খেলবেন চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে। এ বছর যদি ৩৮ বছরের ধোনি কামব্যাক ঘটাতে পারেন, টি ২০ বিশ্বকাপের জন্য নিশ্চিতভাবেই তাঁর নাম উঠে পড়বে। এমনকী ভারতীয় দলের হেড কোট রবি শাস্ত্রীও এ ব্যাপারে একরকম স্পষ্ট ইঙ্গিতই দিয়ে রেখেছেন।
ধোনির ভবিষ্যৎ নিয়ে বিসিসিআইয়ের এক শীর্ষকর্তা যে কোনও মন্তব্য করতে চাইলেন না, তাতে বিস্ময়ের কিছু নেই।