বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইট করে বলেছেন, "দেশ স্বাধীন করতে পণ্ডিত মদনমোহন মালব্য যে বহু প্রচেষ্টা করেছেন তার জন্য ভারত সর্বদা কৃতজ্ঞ থাকবে। একইসঙ্গে তিনি ছিলেন একজন শিক্ষাবিদ ও চিন্তাবিদ যিনি আমাদের নাগরিকদের মধ্যে শিক্ষার প্রসারে কাজ করেছেন। আজ সকালে সংসদ ভবনে মহামানার উদ্দেশে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছি।"
২৫ ডিসেম্বর মদন মোহন মালব্যের জন্মবার্ষিকী। খ্যাতনামা ভারতীয় শিক্ষাবিদ ও স্বাধীনতা সংগ্রামীকে মাহমানা নামে উল্লেখ করা হয়ে থাকে।
মদনমোহন মালব্য বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। স্বাধীনতা সংগ্রামে তিনি ছিলেন অগ্রগণ্য। কংগ্রেসের মধ্যেকার নরমপন্থী ও চরমপন্থীদের মধ্যে তিনি ছিলেন সেতু।
এলাহাবাদে জন্মেছিলেন তিনি। তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা ছিল পাঠশালায়। সংস্কৃতে তিনি ছিলেন অতি দক্ষ। ১৮৭৯ সালে মুইর কেন্দ্রীয় কলেজ (বর্তমান এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে তিনি স্নাতক হবার পর স্থানীয় হাই স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন।
রাজনীতিতে আকৃষ্ট হয়ে তিনি ১৮৮৬ সালে ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের কলকাতা সেশনসের সময়ে সে দলে যোগ দেন।
চারবার তিনি কংগ্রেসের সভাপতি হয়েছিলেন, লাহোর (১৯০৯), দিল্লি (১৯১৮), ফের দিল্লি (১৯৩০), এবং কলকাতা (১৯৩২)। মালব্য কংগ্রেসের সঙ্গে ছিলেন প্রায় অর্ধশতাব্দী জুড়ে।
হিন্দু মহাসভার প্রথম দিকের নেতাদের অন্যতম ছিলেন মালব্য। ১৯০৬ সালে এই সংগঠন স্থাপনের ব্যাপারে তিনি যথেষ্ট সাহায্য করেছিলেন। মালব্য একজন সমাজ সংস্কারক ছিলেন, ছিলেন সফল এক আইনপ্রণেতাও। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আইনসভার সদস্য হিসেবে তিনি কাজ করেছেন ১১ বছর (১৯০৯-২০) ধরে।
১৯১৬ সালে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করবার পর, ১৯১৯ থেকে ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত সেখানকার উপাচার্য ছিলেন তিনি।
মালব্য বিনা খরচে বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষার পক্ষে ছিলেন, সমর্থন করেছিলেন রেলের জাতীয়করণে।
স্বাধীনতা সংগ্রামে তিনি ছিলেন লিবারেল ও জাতীয়তাবাদীদের মধ্যে, মধ্যস্থতা করেছিলেন নরমপন্থী গোখলে সমর্থক ও চরমপন্থী ও তিলক সমর্থকদের মধ্যে।
১৯৩০-এ মহাত্মা গান্ধী লবণ সত্যাগ্রহ ও অসহযোগ আন্দোলন শুরু করবার পর, মালব্য সে আন্দোলনে যোগ দেন ও গ্রেফতার হন।
২০১৫ সালে, তাঁর মৃত্যুর ৬৮ বছর পর সরকার মালব্যকে ভারত রত্ন উপাধি দেয়।
২০১৬ সালে ভারতীয় রেল মালব্যের সম্মানে বারাণসী-নয়া দিল্লি মহামানা এক্সপ্রেস চালু করে।