Advertisment

মধ্য প্রদেশ বিধানসভায় কী ঘটে গেল?

কংগ্রেসের বিজয়রাজে সিন্ধিয়ার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত অধ্যক্ষ এতদিনে মাত্র ৬ বিধায়কের (সকলেই রাজ্য সরকারের মন্ত্রী পদাসীন) পদত্যাগপত্র মঞ্জুর করেছেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Madhya Pradesh, Scindia

মধ্যপ্রদেশের রাজ্যপাল লালজি ট্যান্ডন ও অধ্যক্ষ এনপি প্রজাপতি

মধ্যপ্রদেশ বিধানসভার অধ্যক্ষ এন পি প্রজাপতি সোমবার অধিবেশন শুরুর এক ঘণ্টার মধ্যে তা মুলতুবি ঘোষণা করে দিয়েছেন। বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিন সবার নজর ছিল অধ্যক্ষ কমল নাথ সরকারকে আস্থাভোটের পরীক্ষায় ডাকেন কিনা সে দিকে।

Advertisment

করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণ দেখিয়ে অধ্যক্ষ আগামী ২৬ মার্চ পর্যন্ত অধিবেশন মুলতুবি ঘোষণা করে দেন। রাজ্যের সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী গোবিন্দ সিং বিধানসভা মুলতুবির প্রস্তাব আনেন। ঘটনাক্রমে, বিজেপি বিধায়করা ছাড়া, অধ্যক্ষ, মুখ্যমন্ত্রী ও কংগ্রেস বিধায়করা এদিন মুখে মাস্ক বেঁধে অধিবেশনে যোগ দেন।

মধ্যপ্রদেশ আস্থা ভোট- সংখ্যার খেল

রাজ্যে সংকট শুরু হয় গত সপ্তাহে ২২ বিধাায়ককে সঙ্গে নিয়ে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যাবার পর। ওই বিধায়করা অধ্যক্ষের কাছে তাঁদের পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন। কংগ্রেসের সঙ্গে ওই বিধায়করা যাতে আর যোগাযোগ না করতে পারেন এবং নিজেদের পদত্যাগ প্রত্যাহার না করতে পারেন, সে কারণে তাঁদের বেঙ্গালুরুর এক হোটেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

মধ্যপ্রদেশের রিসর্ট কৌশল, ভারতীয় রাজনীতির পুরনো অভ্যেস

সোমবার বিধানসভায় ওই ২২ জন ছাড়া সকলে উপস্থিত ছিলেন।

কংগ্রেসের বিজয়রাজে সিন্ধিয়ার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত অধ্যক্ষ এতদিনে মাত্র ৬ বিধায়কের (সকলেই রাজ্য সরকারের মন্ত্রী পদাসীন) পদত্যাগপত্র মঞ্জুর করেছেন। তাঁদের স্বাক্ষর পরীক্ষার জন্য ডেকেও পাঠানো হয়েছে। তবে ওই বিধায়করা অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করার জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেননি।

৬ জনের পদত্যাগ গ্রহণ করবার পর, ২৩০ সদস্যের বিধানসভার সংখ্যা কমে এল ২২২-এ। এখন সংখ্যাগরিষ্ঠতা হবে ১১২ ভোটে। কংগ্রেসের বিধানসভায় ১০৮টি আসন রয়েছে, বিজেপির রয়েছে ১০৭টি।

অধ্যক্ষ এদিন বিধায়কদের আইনের শাসন ঊর্ধ্বে তুলে ধরবার কথা বলেন এবং মধ্য প্রদেশের গৌরব অক্ষুণ্ণ রাখবার কথা বলেন।

মধ্য প্রদেশের রাজ্যপাল আস্থা ভোট চান

শুক্রবার রাজ্যপাল লালজি ট্যান্ডন অধ্যক্ষকে আস্থাভোট করতে বলেন। বিধানসভায় নিজের অবস্থান নিয়ে আলোচনার জন্য শুক্রবার তিনি ডেকে পাঠিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথকে। কমল নাথ বলেছিলেন তিনি আস্থাভোটের জন্য প্রস্তুত।

আজকের অধিবেশন শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে কমল নাথ রাজ্যপালকে লেখা এক চিঠিতে জানান আস্থাভোটের বিষয়টি তাঁর সাংবিধানিক অধিকারের মধ্যে পড়ে না এবং অধ্যক্ষের কাজকর্মে হস্তক্ষেপ রাজ্যপালের কাজের আওতাধীন নয়।

চিঠিতে কমল নাথ দাবি করেন, কর্নাটকে বেশ কিছু বিধায়ককে আটকে রাখা হয়েছে এবং যখন বিধায়করা সমস্ত রকম চাপ থেকে মুক্ত হতে পারবেন, তখনই আস্থাভোট করা উচিত।

অধিবেশন ২৬ মার্চ ফের শুরু হবে, ফলে কংগ্রেসের হাতে এখনও ১০ দিন সময় রয়েছে।

এ পদক্ষেপ কি আইনি?

এর আগে বারবার প্রমাণিত হয়েছে যে রাজ্যপালের অধ্যক্ষকে দেওয়া নির্দেশ মানা বাধ্যতামূলক নয়। রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীকে নির্দেশ দিতে পারেন, কিন্তু অধ্যক্ষকে পারেন না। তবে আর্থিক বছর শেষ হবার আগে অধিবেশন বসতে হবে এবং রাজ্য বাজেট পাশ করাতে হবে, নচেৎ এপ্রিল থেকে সরকারের কাজ করা মুশকিল হবে।

কিন্তু এক বরিষ্ঠ মন্ত্রী ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করে দিয়েছে যে কর্নাটকে পদত্যাগ গ্রহণ করতেই হবে। তিনি বলেন, বিজেপি এখন সন্তোষজনক জায়গায় রয়েছে- যদি বিধায়কদের পদত্যাগ গৃহীত হয়, তাহলে তাঁরা ভোট দিতে পারবেন না, আর যদি দিতে পারেন, তাহলে দলের হুইপ অমান্য করে ভোট দেবেন তাঁরা।

এরপর কী?

কর্নাটক রাজ্য বিজেপি আস্থাভোট চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে।

সকালে বিজেপি বলেছিল তারা অধ্যক্ষের সিদ্ধান্তের পর পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করবেন। দলের এক নেতা বলেছিলেন, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে, আমরা অধ্যক্ষের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছি। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে আমরা যথাসময়ে সিদ্ধান্ত নেব।

Advertisment