Naxalism Maharashtra’s urban areas: মহারাষ্ট্র সরকার বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিধানসভার চলমান বাদল অধিবেশনে বিশেষ জননিরাপত্তা (MSPC) বিল, ২০২৪ পেশ করেছে। সরকার বলেছে যে এই বিলের উদ্দেশ্য হল, 'শহরে নকশালবাদের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি' নিয়ন্ত্রণ করা। বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই বিল আসলে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের নকশালবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের ভাবনার প্রতিফলন।
১. MSPC বিলের আইনগুলো কী কী?
এমএসপিসি বিল পাশ হলে এবং একটি আইন হয়ে উঠলে, শহরাঞ্চলে যারা নকশালবাদের সঙ্গে জড়িত থেকে হিংসাত্মক 'মতাদর্শের প্রসার ঘটায়। হিংসাত্মক মতাদর্শে নিয়োগ করে। হিংসাত্মক মতাদর্শের জন্য অর্থ সংগ্রহ করে। অস্ত্র সরবরাহ করে। অথবা, হিংসাত্মক মতাদর্শবাদীদের সহায়তা দেয়, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুবিধা হবে। প্রস্তাবিত বিলে, 'নকশাল ফ্রন্টাল সংগঠনগুলোর মাধ্যমে শহরাঞ্চলে নকশালবাদের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি' মোকাবিলায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে আরও ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। বিলে বলা হয়েছে, 'নকশালবাদের হুমকি শুধু নকশাল প্রভাবিত রাজ্যের প্রত্যন্ত অঞ্চলেই সীমাবদ্ধ নয়। এর উপস্থিতি শহরাঞ্চলেও বাড়ছে নকশাল ফ্রন্টাল সংগঠনগুলোর মাধ্যমে। নকশালদের ফ্রন্টাল সংগঠনগুলো তাদের সশস্ত্র ক্যাডারদের নানা কিছু সরবরাহ করে থাকে। পাশাপাশি, তাদের নিরাপদ আশ্রয় দেয়। পাশাপাশি, কার্যকরী সহায়তাও দান করে।' নকশাল সাহিত্য মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে মাওবাদী নেটওয়ার্কের 'নিরাপদ বাড়ি' এবং 'শহুরে আড্ডা' দেওয়ার জায়গা থেকে বাজেয়াপ্ত করা প্রমাণ করে যে, নকশালদের ফ্রন্টাল সংগঠনগুলোর বেআইনি কার্যকলাপের ওপর আইনি পথে নিয়ন্ত্রণ দরকার।'
২. নকশালবাদের বিরুদ্ধে আইন কী কী?
১ জুলাই ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস/BNS) কার্যকর করার আগে, তদন্তকারী সংস্থাগুলো ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩এ (ধর্ম, বর্ণের ভিত্তিতে বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতা প্রচার করা)-এর মত ধারাগুলো নকশালবাদ দমনের পিছনে ব্যবহার করেছিল। বিএনএসে ধর্ম, বর্ণের ভিত্তিতে বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতা প্রচার করার ফৌজদারি অভিযোগটি ১৯৬ ধারা হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছে। সংস্থাগুলো সন্ত্রাসবিরোধী আইন, বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইনের মতো বিশেষ আইনও নকশালবাদ দমনে ব্যবহার করছে। এতে তদন্তকারী সংস্থাগুলো চার্জশিট দাখিলের জন্য অতিরিক্ত সময় (১৮০ দিন) পাচ্ছে। পাশাপাশি, এতে অভিযুক্তদের জামিন নিশ্চিত করাও কঠিন হয়ে উঠছে। ২০১৯ সালে, কেন্দ্রীয় সরকার (UAPA) আইনে সংশোধনী এনেছিল। যা তদন্তকারী সংস্থাগুলোকে বিস্তৃত ক্ষমতা দিয়ে এই আইনকে আরও 'কঠোর' করে তুলেছে। আর, তার জন্য সমালোচিতও হয়েছে। এইসব সংশোধনীর মধ্যে রয়েছে, ব্যক্তিদের সন্ত্রাসবাদী বা জঙ্গি হিসেবে চিহ্নিত করা। আগের আইনে ছিল, প্রথমে কোনও সংগঠনকে নিষিদ্ধ বা সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। পরে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সেই ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। এবার, সেই কাজ আরও সহজ করে দিয়েছে নতুন আইন।
আরও পড়ুন- ট্রাম্প আমেরিকায় আক্রান্ত! কোনওমতে মৃত্যু এড়ালেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট
৩. মহারাষ্ট্র সরকারের নতুন আইন
মহারাষ্ট্র সরকারের দাবি, নকশালবাদ শহর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। বর্তমান আইনে তার মোকাবিলা করা অসম্ভব। মহারাষ্ট্র পুলিশ বলছে, অনেক ক্ষেত্রেই অভিযুক্তরা মুক্ত হয়ে যাচ্ছে কারণ, আদালত মনে করছে যে অভিযুক্তরা কোনও সহিংস কাজে জড়িত ছিল না। নতুন বিলে বলা হয়েছে, কোনও বেআইনি সংগঠনের সদস্য হলে তিন থেকে সাত বছর পর্যন্ত জেল এবং তিন লক্ষ থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। বিলটি একটি সংস্থাকে বেআইনি ঘোষণার ক্ষমতা মহারাষ্ট্র সরকারকে দিয়েছে। মহারাষ্ট্রের আগে ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং ওড়িশা নকশাল সংগঠনগুলোর বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধের জন্য জননিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করেছে। আর, এজাতীয় ৪৮টি সংগঠনকে ইতিমধ্যেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।