দুপুর পর্যন্ত যা ধারা দেখা যাচ্ছে মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানার বিধানসভার ভোটের ফল বিজেপির পক্ষে দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠবে। ভোটের আগে যে হাইপ তৈরি হয়েছিল, দল সে তুলনায় খারাপ ফলই করছে বলা চলে।
বিজেপি-শিবসেনা জোট ২৮৮-র মধ্যে অর্ধেক আসন পেয়ে গিয়েছে বটে, কিন্তু বিজেপি সরকার গড়তে পারলেও বিদর্ভ সহ বেশ কিছু এলাকায় প্রত্যাশিত ফল করতে পারেনি।
তবে তাদের সহযোগী শিবসেনা যথেষ্ট ভাল ফল করেছে। কংগ্রেস ও এনসিপি প্রত্যাশার থেকে ভাল ফল করেছে।
বিজেপি নেতারা এখনও পর্যন্ত বলে আসছেন উপমুখ্যমন্ত্রীর কোনও পদ থাকবে না, সে বিষয়ে স্থির করবে জোট সরকার। কিন্তু শিবসেনার অপ্রত্যাশিত ভাল ফল তাদের সে দাবিকে আরও জোরালো করবে তাতে সন্দেহ নেই।
আরও পড়ুন, বিশ্লেষণ: মহারাষ্ট্রের ভোটে শিবসেনার উত্থানে বিজেপির চাপ
মহারাষ্ট্রে বিজেপি ২০১৪ সালে ১২২টি আসন পেয়েছিল, তাদের ভোট শেয়ার ছিল ২৭.৫৯ শতাংশ।
হরিয়ানায় যেখানে ৯০ আসনের বিধানসভায় বিজেপির শ্লোগান ছিল মিশন ৭৫, সেথানে তারা এখনও পর্যন্ত অর্ধেক আসন অতিক্রম করতে পারেনি। অন্যদিকে আভ্যন্তরীণ কারণে পর্যুদস্ত কংগ্রেস প্রত্যাশাতীত ভাল ফল করেছে।
কংগ্রেস ২৯টি আসনে এগিয়ে রয়েছে এবং নতুন দল জেজেপি কিংমেকার হিসেবে উঠে আসতে চলেছে। হরিয়ানার ছবি এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয়, তবে সেখানে নির্দলরাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
এখনও পর্যন্ত যা বোঝা যাচ্ছে:
ভোটাররা নিশ্চিতভাবে লোকসভা এবং রাজ্যের ভোটের মধ্যে ফারাক করে ফেলেছেন। এই ধারা থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্য এ ভোট হয়নি, এবং বিজেপি যে জাতীয়তাবাদ এবং ৩৭০ ধারার অবলুপ্তির উপর ভর করে ছিল, তা বিধানসভা ভোটের একমাত্র ইস্যু হয়ে ওঠেনি তাও স্পষ্ট।
যে বিদর্ভে বিজেপি এবং শিবসেনা গতবারে ভাল ফল করেছিল সেখানে এবার তারা প্রত্যাশিত ফল করেনি। এবারের ভোট শেয়ারে তাদের পতনের একটা অন্যতম কারণ এই বিদর্ভই। বিদর্ভ নিতিন গড়করির এলাকা, কানাঘুষোয় শোনা যাচ্ছে তাঁকে বর্তমান নেতৃত্ব কিছুটা সাইডলাইন করে দিয়েছে।
বিদর্ভের কৃষি ক্ষেত্রে যে সংকট দেখা দিয়েছে, তাও বিজেপির পক্ষে যে শুভ হয়নি সে কথাও স্পষ্ট। এ অঞ্চলের ভোটাররা রাজ্য সরকারের প্রশাসনিক রেকর্ড নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
একদিকে মহারাষ্ট্রে বিজেপির অবস্থা মহারাষ্ট্রে যেমন তাদের প্রশাসনিক দক্ষতার কারণে খারাপ হয়েছে, তেমনই হরিয়ানায় বিজেপির সরকার চালানোর ব্যাপারে যে আত্মপ্রসাদ তাও তাদের সমস্যার মুখে ফেলেছে।
জাতীয় নেতৃত্বের সক্রিয় সহযোগিতার অবর্তমানেও কংগ্রেস বিশেষত ভুপিন্দর সিং হুডা যথেষ্ট ভাল ফল করেছেন।
এই ফল প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর পক্ষে শুভ সংবাদ নয়, কারণ বর্তমান সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর পুরনো নেতৃত্বকে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হরিয়ানায় ভাল ফল দিয়েছে। রাহুল যাঁকে পদে বসিয়েছিলেন, সেই অশোক তানওয়ার নির্বাচনের আগে পদত্যাগ করেন, এবং হুডাই রাজ্যে দলের ব্যাপারে শেষ সিদ্ধান্ত নেন, যদিও প্রদেশ কংগ্রেসের নেতৃত্ব রয়েছে কুমারী সেলিজার হাতে।
এই ভোটের আরেকটি তাৎপর্যপূর্ণ ফল হল- এবারের ভোটে দেখা যাচ্ছে বিধানসভা ও লোকসভায় ভোটাররা পৃথক ভাবে ভাবেন। এক দেশ এক ভোটের যে প্রস্তাব উঠেছে, এই প্রেক্ষিতে তা আরেকবার ভেবে দেখার মত।
Read the Full Story in English