বিশ্লেষণ: মহারাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসন, এবার কী

রাষ্ট্রপতি শাসন প্রত্যাহারের জন্য সংসদের অনুমোদন প্রয়োজন নেই।

রাষ্ট্রপতি শাসন প্রত্যাহারের জন্য সংসদের অনুমোদন প্রয়োজন নেই।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Mahrashtra, Presidents Rule

মুম্বইয়ে কংগ্রেস নেতা আহমেদ প্যাটেল ও এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ার

মঙ্গলবার মহারাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির সুপারিশের আগে সেখানকার রাজ্যপাল ভগবত সিং কোশিয়ারি বলেছেন, রাজ্যে নির্বাচনের ফল ঘোষণার ১৫ দিন পরেও কোন স্থায়ী সরকার গঠন সম্ভব না হওয়ায় এই পরিস্থিতির উদ্রেক হয়েছে।

Advertisment

রাষ্ট্রপতি শাসন কীভাবে জারি হয়

রাষ্ট্রপতি শাসন জারির অর্থ রাজ্য সরকার বরখাস্ত এবং সরাসরি কেন্দ্রের শাসন জারি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পরিষদের পরামর্শে রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৩৫৬ নং ধারা প্রয়োগের মাধ্যমে এই ব্যবস্থা লাগু করতে পারেন। ৩৫৬ ধারার অধীনে এই পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে "(১) যদি রাষ্ট্রপতি রাজ্যের রাজ্যপাল বা অন্য কারও কাছ থেকে রিপোর্ট পেয়ে এ কথা অনুধাবন করেন যে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে সংবিধানের বিধি অনুসারে রাজ্য সরকার কাজ চালাতে অক্ষম..."

রাষ্ট্রপতি শাসন কতদিন থাকতে পারে

Advertisment

রাষ্ট্রপতি শাসনের ঘোষণা প্রত্যাহৃত হতে পারে যদি কোনও একটি দলের নেতা বিধানসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সমর্থনের চিঠি দিয়ে দাবি করতে পারেন যে তিনি সরকার গঠনে সক্ষম। রাষ্ট্রপতি শাসন প্রত্যাহারের জন্য সংসদের অনুমোদন প্রয়োজন নেই।

আরও পড়ুন, অযোধ্যা রায়: মণ্ডল-করমণ্ডল রাজনীতির বৃত্ত সম্পূর্ণ

মহারাষ্ট্রের সরকার গড়ার রাস্তা তাই শেষ হয়ে গেছে, এ কথা বলা চলে না। কার্যত, সমস্ত দলেই এখন নিজেদের সম্ভাব্য জোটসঙ্গীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার সময় পেয়ে গেল। এর পর তারা রাজ ভবনে গিয়ে সরকার গঠনের দাবিও জানাতে পারবে।

৩৫৬ ধারা ৬ মাস লাগু থাকে। এই সময়কালের মধ্যে এর আওতায় যে কোনও ঘোষণা সংসদের পরবর্তী অধিবেশনে দুটি কক্ষ দ্বারাই অনুমোদন প্রয়োজন। ৬ মাসের সময়সীমা ধাপে ধাপে ৩ বছর পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে।

পূর্ববর্তী উদাহরণ

নির্বাচনের পর সরকার গঠন করতে না-পারার জেরে রাষ্ট্রপতি শাসন এই প্রথম জারি হল, এমন নয়। ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বিহার বিধানসভাতেও কোনও দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় নি। ২০০৫ সালের ৭ মার্চ সেখানে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয়। ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত, মোট ২৬২ দিন সেখানে এই অবস্থা জারি ছিল। অক্টোবর-নভেম্বর মাসে নতুন করে ভোট নেবার পর রাষ্ট্রপতি শাসন প্রত্যাহৃত হয়।

২০০২ সালে জম্মু কাশ্মীরে ত্রিশঙ্কু বিধানসভার জেরে সেখানে ১৮ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ১৫ দিনের জন্য রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয়। ন্যাশনাল কনফারেন্স সবচেয়ে বেশি আসন পেলেও প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। দীর্ঘ আলাপ-আলোচনার পর সেখানে জোট সরকার গড়ে কংগ্রেস ও পিডিপি। পিডিপি নেত্রী মুফতি মহম্মদ সঈদ প্রথম ৩ বছরের জন্য এবং কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ পরবর্তী তিন বছরের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। এ জোটে অংশীদার ছিল প্যান্থার পার্টিও।

২০০২ সালের উত্তর প্রদেশ বিধানসভা ভোটে কোনও দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। এর ফলে সেখানে ৩ মার্চ থেকে ২ মে, এই ৫৬ দিনের জন্য রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হয়। এরপর বসপার মায়াবতী এবং বিজেপির মধ্যে সমঝোতা হয়, মায়াবতী মুখ্যমন্ত্রী হন। এক বছর পর জোট ভেঙে যায়, ২০০৩ সালের অগাস্টে ইস্তফা দেন মায়াবতী। বসপার বিদ্রোহীদের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসে সমাজবাদী পার্টি।

পড়তে ভুলবেন না, টুইটার ছেড়ে ভারতীয়রা ম্যাস্টোডনের দিকে ঝুঁকছেন কেন?