মহারাষ্ট্রে কোভিড আবারও বাড়ছে। সে রাজ্যে পজিটিভিটি রেট ঘোরাফেরা করছে ১০ শতাংশের আশেপাশে। এ মাসের ১৯ তারিখ, রবিবার, কোভিড কেস মহারাষ্ট্রে ২৩,৭৪৬। মে-র ১৬ তারিখের থেকে যা ১৫ গুণ বেশি। তখন কোভিড-সংখ্যা ছিল মাত্র ১, ৫২৬। বেশির ভাগ মেট্রো শহরেই কোভিড বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে।
কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন আগে, এমন মানুষজনেরও কোভিড হচ্ছে। এখন প্রশ্ন হল, তা হলে কি করোনা সংক্রমণের ফলে যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছিল কারও দেহে, তা হ্রাস পেয়ে যাচ্ছে? অথবা অ্যান্টিবডিকে ফাঁকি দিয়ে কী ভাবেই বা এই রোগটি হামলা চালাচ্ছে?
এটা সবাই জানে যে, ভাইরাসের চরিত্রই হল নিজেকে বদল করে ফেলা, বা বদলাতে বদলাতে এগিয়ে চলা। যে প্রতিরোধ তৈরি হয়েছিল কোনও একটি ভ্যারিয়েন্টের কোপে, মিউটেশনের পর নতুন ভ্যারিয়েন্ট এসে তাকে এড়িয়ে শরীরে ঢুকে যেতে পারে অনেক সময়তেই। এখন অমিক্রনের বদল-ছবি তৈরি হয়েছে, সাব-ওমিক্রনের রমরমা। তার ডেটা আমাদের কাছে নেই বিস্তারিত। তবে ওমিক্রন হলে যে প্রতিরোধশক্তি জন্মাচ্ছে তার প্রাবল্য কম। ফলে হচ্ছে কি, নতুন করে সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকছে বেশি, সংখ্যাই বলছে হচ্ছেও তো। এমনও সবাই জানেন যে, কোনও রোগের অ্যান্টিবডি শরীরে থাকলে, সেই রোগটি আর কোনও দিন হবে না এটা বলা যাবে না। বলা যেতে পারে, সেই অসুখ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে, হলেও তার দাপট কম থাকবে।
ভ্যাকসিন আমাদের মধ্যে প্রতিরোধশক্তির জন্ম দেয়। অ্যান্টিবডি তৈরি করে। কোভিডের বিরুদ্ধেও তা হয়েছে। এই প্রতিরোধশক্তি ক্ষমতায় আমাদের যে আর কখনও করোনা হবে না, সেটা বলা যায় না। কিন্তু ভ্যাকসিন নেওয়া থাকলে আমরা প্রাণে বেঁচে যাব, এইটা হয়তো বলাই যায়। অন্তত সিংহ ভাগের ক্ষেত্রেই ভ্যাকসিন সেই জিওন কাঠি। পাশাপাশি ভ্যাকসিন আমাদের কড়া উপসর্গের হাত থেকে রক্ষা করবে। মানে সংক্রমণে আপনি ভুগবেনও কম। এখন যাঁদের কোভিড হচ্ছে, তাঁদের কিন্তু বেশির ভাগেরই উপসর্গ মৃদু। অল্পের উপর দিয়েই যাচ্ছে ঝড়টা।
তাই এই জায়গা থেকেই কোভিড বাড়লেও কোভিডাচরণের ধাপপাশ দিয়ে যাচ্ছি না আমরা। ন্যূনতম মাস্কটাও পরার প্রয়োজন বোধ করছি না আর। সেটা কিন্তু ঠিক নয়। কী দরকার মৃদু বা মৃদুতর ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ার? হতেই তো পারে, মোটেই অস্বাভাবিক নয়, হয়েছেও তো, এই মৃদু-ই নানা অন্য অসুখের বৈগুণ্যে মর্মান্তিক এবং প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে। সাবধানতার কোনও বিকল্প নেই। সতর্কতা নিয়ে কোনও তর্ক নেই, তাই মহাজনের উচিত সেই পথেই হাঁটা।