Making sense of the political upheaval in Bangladesh: সোমবার বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন। এরপর উচ্ছ্বসিত বিক্ষোভকারীরা ঢাকার রাস্তায় এবং তার বাইরেও আনন্দে মেতে ওঠেন। নোবেল পুরস্কারজয়ী অর্থনীতিবিদ মুহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী সরকার, সেনার সহায়তায় আওয়ামি লিগের কাছ থেকে দায়িত্ব নিয়েছে। অধ্যাপক সঞ্জীব বড়ুয়া জানিয়েছেন, কী কারণে বাংলাদেশের পরিস্থিতি এতটা খারাপ হল।
প্রশ্ন- শেখ হাসিনাকে নিয়ে বাংলাদেশের পরিস্থিতি এতটা খারাপ হল কীভাবে?
উত্তর- জনসমক্ষে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ বাংলাদেশে হামেশাই দেখা যায়। কিন্তু, কয়েক সপ্তাহ আগেও কেউ ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারেনি যে সরকারি চাকরিতে কোটার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেবে। তবে শেখ হাসিনার পদত্যাগের দুই বা তিন দিন আগে এটা স্পষ্ট হয়ে উঠছিল যে বিক্ষোভ আরও গুরুতর আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। বিপুল সংখ্যক বিক্ষোভকারীর মৃত্যু এবং আহত হওয়ার ঘটনা গোটা পরিস্থিতিকে বদলে দিয়েছে। ৩ আগস্ট ছাত্রনেতারা ঘোষণা করেছেন যে শেখ হাসিনার পদত্যাগ এখন তাঁদের একদফা দাবি। বিক্ষোভকারীরা ছাত্রদের পাশাপাশি সমাজের অন্যান্যস্তরের মানুষ, যাঁরা তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল, তাঁদের ওপর পুলিশ এবং আওয়ামি লিগ সমর্থকদের সংগঠিত হিংসার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেই সরাসরি দায়ী করেছেন।
প্রশ্ন- বিক্ষোভকারীদের প্রতি হাসিনার প্রতিক্রিয়া তার চূড়ান্ত ক্ষমতাচ্যুতির ক্ষেত্রে কতটা ভূমিকা পালন করেছিল?
উত্তর- ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে যাঁরা লড়াই করেছিলেন, তাঁদের সন্তান এবং নাতি-নাতনিদের জন্য সরকারি চাকরিতে কোটার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ বাংলাদেশের শিক্ষিত তরুণদের অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের একটি স্তরকে আলোকিত করেছিল। এই প্রতিবাদে হাসিনার প্রতিক্রিয়া বুঝিয়ে দিয়েছে যে তিনি সাধারণ মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। তিনি একজন নেতা হিসেবে বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের প্রতি রাজনৈতিক সংবেদনশীলতা দেখাতে পারেননি। ১৪ জুলাই এক সাংবাদিক বৈঠকে শেখ হাসিনা প্রশ্ন করেছিলেন, 'যদি মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিরা (কোটা) সুবিধা না পায়, তাহলে কে পাবে? রাজাকারদের নাতি?' ছাত্ররা তাঁদের 'রাজাকার' হিসেবে শেখ হাসিনা উপহাসমূলক উল্লেখ করায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায়।
আরও পড়ুন- যখন-তখন, যাঁকে খুশি গ্রেফতার! এবার কি সেই ক্ষমতা হারাতে চলেছে ইডি?