Muizzu asks India to withdraw troops by March 15: মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু ভারতকে ১৫ মার্চের মধ্যে তাদের দেশ থেকে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহার করতে বলেছেন। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের জননীতি বিভাগের সম্পাদক আবদুল্লাহ নাজিম ইব্রাহিম রবিবার মালেতে এই ব্যাপারে বলেন, 'ভারতীয় সামরিক কর্মীরা মালদ্বীপে থাকতে পারবেন না। এটি প্রেসিডেন্ট ড. মহম্মদ মুইজ্জু এবং বর্তমান প্রশাসনের নীতি।' মালদ্বীপ এবং ভারত, দুই দেশ বর্তমানে সেনা প্রত্যাহারের ব্যাপারে আলোচনার জন্য একটি উচ্চ-পর্যায়ের কোর গ্রুপ গঠন করেছে। রবিবার সকালে মালেতে বিদেশ দফতরের সদর কার্যালয়ে এই কোর গ্রুপের প্রথম বৈঠক হয়। বৈঠকে ভারতীয় হাইকমিশনার মুনু মাহাওয়ারও উপস্থিত ছিলেন। মালদ্বীপের গণমাধ্যমে এমনটাই দাবি করা হয়েছে। ভারত সরকার অবশ্য এখনও মালদ্বীপের সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।
আরও পড়ুন- ১৫ মার্চের মধ্যেই সেনা প্রত্যাহারের হুঁশিয়ারি, কেন মালদ্বীপে মোতায়েন ভারতীয় সেনা?
মালদ্বীপে ভারতীয় সৈন্যের সংখ্যা কত?
মালদ্বীপে 'ইন্ডিয়া আউট' শব্দগুচ্ছ বেশ জনপ্রিয় হলেও, এই দ্বীপপুঞ্জে কিন্তু ভারতীয় সৈন্যদের খুব একটা বড় দল নেই। সর্বশেষ সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, মালদ্বীপে মাত্র ৮৮ জন ভারতীয় সেনা আছেন। এই সেনাদের পাঠানো হয়েছে মালদ্বীপের সৈন্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য। এছাড়াও, মালদ্বীপে উপস্থিত ওই ভারতীয় সেনারা যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলে, তা সামাল দেওয়া এবং উদ্ধারকাজে তদারকির কাজও করে থাকেন। তবুও মালদ্বীপের রাজনীতিবিদদের একাংশ সেদেশে ভারতীয় সেনাদের উপস্থিতির বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। এই ব্যাপারে মালদ্বীপ এবং ভারত বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, 'ইন্ডিয়া আউট' প্রচার মালদ্বীপে উপস্থিত ভারতীয় সৈন্যদের ভূমিকাকে অতিরঞ্জিত করে দেখাচ্ছে। পাশাপাশি, ভারতীয় সেনাদের উপস্থিতিকে সেদেশের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে তুলে ধরেছে। যা, সম্পূর্ণই মিথ্যে। মালদ্বীপের সাম্প্রতিক প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় এই ভারত-বিরোধী মনোভাব আরও বেড়ে গিয়েছিল। সেখানে ভারতের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তি এবং ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়েছিল। ইব্রাহিম মহম্মদ সোলিহ-এর নেতৃত্বাধীন মালদ্বীপ ডেমোক্রেটিক পার্টি ভারত দ্বারা প্রভাবিত একটি রাজনৈতিক দল। এমন ধারণাকেও মালদ্বীপের নির্বাচনী প্রচারে ছড়ানো হয়েছে। পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেস এবং মালদ্বীপের প্রোগ্রেসিভ পার্টির জোটের প্রতিনিধি প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু। তিনি ২০২৩ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। তাঁকে মালদ্বীপে চিনপন্থী বলেই মনে করা হয়।
মালদ্বীপে ভারতীয় সেনা রয়েছে কেন?
প্রতিরক্ষা-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারত ও মালদ্বীপের সহযোগিতার দীর্ঘ ইতিহাস আছে। একসময় ভারতীয় সৈন্যরা প্রকৃত সামরিক অভিযানের জন্য মালদ্বীপে প্রবেশ করেছিল। সেটা ১৯৮৮ সালের নভেম্বর। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মামুন আবদুল গাইয়ুমের সরকারের অনুরোধে একটি অভ্যুত্থানের চেষ্টা ব্যর্থ করতে মালদ্বীপে প্রবেশ করেছিল ভারতীয় সেনা। একটি দ্রুত অভিযান চালিয়ে, ভারতীয় সৈন্যরা এই দ্বীপরাষ্ট্রে তৎকালীন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টকে রক্ষা করেন। বিদ্রোহীদের দমন করতে সক্ষম হন। তিন দশকের মধ্যে, মালদ্বীপ এই পর্বে ভারতের ভূমিকার প্রশংসা করেছে। মালদ্বীপে 'ইন্ডিয়া আউট' প্রচার শুরু হয়েছে এর অনেক পরে, ২০২০-এর কোনও এক সময়ে। প্রোগ্রেসিভ পার্টির (পিপিএম/PPM) আবদুল্লাহ ইয়ামিন আবদুল গাইয়ুম ২০১৩ সালে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট হন। তারপর থেকেই দ্বীপরাষ্ট্রে ভারতের বিরুদ্ধে অসন্তোষ তৈরি হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।