সোমবার নাগাল্যান্ডের রাজ্যপাল আর এন রবিকে মেঘালয়ের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মেঘালয়ের রাজ্যপাল তথাগত রায়কে ছুটিতে যেতে বলা হয়েছে বলে খবর। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে বিতর্কিত টুইট করেছিলেন তিনি। রাজ্যের মেঘালয় রেসিডেন্টস সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাক্টে সম্মতি না দিয়ে অনেকের বীতশ্রদ্ধার পাত্রও হয়েছিলেন। এই বিলটি অর্ডিন্যান্স হিসেবে মেঘালয় মন্ত্রিসভায় পাশ হয়।
এ অর্ডিন্যান্সে কী ছিল?
২০১৬ সালের এই আইনে মেঘালয়ের বাইরের বাসিন্দাদের রাজ্যে রেজিস্ট্রেশন ও নথিভুক্তি সম্পর্কিত। নভেম্বর মাসে মন্ত্রিসভায় যে অর্ডিন্যান্স পাশ করা হয়, তাতে বলা হয়েছে রাজ্যে আগত বা রাজ্যের বাসিন্দা এমন সকলের জন্যই এই আইন প্রযোজ্য হবে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী প্রিস্টোন টিনসং গত মাসে বলেছিলেন, "যাঁরা রাজ্যে পর্যটক হিসেবে, শ্রমিক হিসেবে বা শিক্ষা অথবা ব্যবসার জন্যে আসতে উৎসুক এই আইন কেবলমাত্র তাঁদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।"
কোন যুক্তিতে এই সংশোধনী ?
আসামের জাতীয় নাগরিকপঞ্জীর প্রেক্ষিতে এ প্রসঙ্গের উত্থাপন। যে নাগরিকপঞ্জির জেরে মেঘালয়ের নাগরিক সমাজ এবং রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা সহ অন্যদের আশঙ্কা, আসাম এনআরসি তালিকাছুটরা সে রাজ্যে ঢুকে পড়তে পারেন। এ ছাড়া মেঘালয়ের রাজনৈতিক দল ও সমাজকর্মীরা বেশ কিছুদিন ধরে সে রাজ্যেও অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড ও মিজোরাম এবং বর্তমান মণিপুরের মত ইনার লাইন পারমিট ব্যবস্থা দাবি করে আসছেন। ইনার লাইন পারমিট ভুক্ত রাজ্যগুলি নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন থেকে ছাড় পেয়েছে। তবে প্রায় পুরো মেঘালয় রাজ্যেই ষষ্ঠ তফশিলভুক্ত হবার কারণে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের আওতা থেকে বাদ পড়বে।
কীভাবে রেজিস্ট্রেশন হবে?
অর্ডিন্যান্স নিয়ে উদ্বেগের মধ্যেই মেঘালয় সরকার গত মাসে বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়ে জানিয়েছিল, ঠিক কী ভাবে রেজিস্ট্রেশন হবে, তা এখনও স্থির হয়নি। পর্যটন দফতরের ডিরেক্টর গত ৫ নভেম্বর এক বিবৃতি জারি করে জানান, "রাজ্যের পর্যটকদের সুবিধা অসুবিধার কথা মাথায় রেখে রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি স্থির হবে। অনলাইন ও অফলাইন উভয় পদ্ধতিতেই রেজিস্ট্রেশন করা যাবে । হোটেলে চেক ইন করার মতই সহজ পদ্ধতিতে বিষয়টি নিষ্পন্ন হবে। রাজ্যে প্রবেশের জন্য কোনও লাইনে দাঁড়ানোর প্রয়োজন নেই। যেসব দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যটক মেঘালয়ের প্রাকৃতিক দৃশ্য প্রত্যক্ষ করতে চান এবং আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে চান, তাঁদের সকলকে আমরা স্বাগত জানাই।"
তাহলে তথাগত রায় সম্মতি দিলেন না?
কেউ কেউ বলছেন, তথাগত রায় সংশোধনীতে স্বাক্ষর করতে রাজি হননি। ২২টি এনজিও ও নাগরিক সমাজ সংগঠন নিয়ে গঠিত কমসো নামক সংস্থার চেয়ারপার্সন রবার্টজুন খারজাহরিন সম্প্রতি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, "মেঘালয় রেসিডেন্টস সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাক্টে সই করতে রাজি না হওয়ায় মেঘালয়ের মানুষের মধ্যে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে প্রভূত ক্ষোভ রয়েছে। উত্তর কোরিয়া নিয়ে তাঁর টুইট আগুনে ঘি ঢেলেছে।"