ভারতের সভাপতিত্বে জি২০ স্বাস্থ্যক্ষেত্রে তিনটি বিষয়ে অগ্রাধিকার দিয়েছে। শনিবার প্রকাশিত জি২০-র নয়াদিল্লি ঘোষণাপত্রে এই তিনটি বিষয়ের কথা জানানো হয়েছে। ঘোষণায় প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবা, স্বাস্থ্যকর্মীদের দল এবং প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরিষেবাকে প্রাক-অতিমারির চেয়ে ভালো করার কথা বলা হয়েছে। আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে এই লক্ষ্য পূরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
করোনায় নজরদারি
যক্ষ্মা এবং এইডসের মতো অতিমারিতে নজর রাখার পাশাপাশি, জি২০ কোভিডের ওপর দীর্ঘ গবেষণায় জোর দিয়েছে। ঘোষণাপত্রে স্বাস্থ্য পদ্ধতির ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছে। এই স্বাস্থ্য পদ্ধতিতে গাছপালা, প্রাণী এবং মানুষের কী কী রোগ হতে পারে, নজর রাখার পদ্ধতির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল প্রতিরোধের জোর দিতে হবে। গত মাসে শেষ হওয়া জি২০-র স্বাস্থ্য ক্ষেত্র দুর্দান্ত সাফল্য অর্জন করেছে। ভারত শুধুমাত্র স্বাস্থ্যক্ষেত্রে তার তিনটি অগ্রাধিকারেই ঐকমত্য গড়ে তোলেনি। এটি ডিজিটাল স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের জন্য একটি আর্থিক ভাণ্ডারও গড়ে তোলায় জোর দিয়েছে।
করোনায় ক্ষতি রোধ
কোভিড-১৯ এর কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক এবং সামাজিক সমস্যা ও ভবিষ্যতে এ থেকে হওয়া ক্ষতি রোধে কী করা যেতে পারে, ভারতের নেতৃত্বাধীন জি২০ তা অগ্রাধিকারের তালিকায় রেখেছে। কিছু ক্ষেত্রে ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে- ডিজিটাল স্বাস্থ্য প্রকল্পের জন্য ২০ কোটি ডলারের তহবিলে অবদান রাখা, গবেষণা ক্ষেত্র এবং ভ্যাকসিনের ওপর অধিকার বজায় রাখা, ডায়াগনস্টিকস এবং থেরাপিউটিকস ক্ষেত্রের বিকাশের যে সমস্ত উপায়গুলো আছে, তার দায়িত্ব নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেওয়ার জন্য একটি স্থায়ী মঞ্চ তৈরি।
যে বিষয়ে অগ্রাধিকার
- স্বাস্থ্যক্ষেত্রে জরুরি প্রতিরোধ, প্রস্তুতি এবং প্রতিক্রিয়ার কথা মাথায় রেখে ব্যবস্থা তৈরি।
- অতিমারি চলাকালীন ভ্যাকসিন, ডায়াগনস্টিকস এবং থেরাপিউটিকগুলোতে ন্যায়সঙ্গত প্রাপ্যতা এবং তার সাহায্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করা। ওষুধ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করা।
- কোউইন এবং ই-সঞ্জীবনীর মত উন্নত এবং সর্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজ নিশ্চিত করতে ডিজিটাল স্বাস্থ্য উদ্ভাবন এবং সমাধানগুলোর পদ্ধতি ভাগ করে নেওয়ার জন্য একটি মঞ্চ তৈরি করা।
ডিজিটাল স্বাস্থ্য প্রকল্প
করোনা অতিমারি ডিজিটাল স্বাস্থ্য প্রকল্প উদ্ভাবনের গুরুত্ব আরও বেশি করে তুলে ধরেছে। ভারত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-এর অধীনে পরিমাপযোগ্য সমাধানগুলোর দায়-দায়িত্ব নিজেদের মধ্যে ভাগ কর নেওয়ার জন্য একটি মঞ্চ তৈরি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানিয়েছে। এই মঞ্চ জি২০-র সদস্য রাষ্ট্রগুলো ব্যবহার করতে পারবে। ভারতের সেই লক্ষ্যকে মাথায় রেখে গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন ডিজিটাল হেলথ (জিআইডিএইচ) কয়েকটি প্রধান ক্ষেত্রে চালু করেছে। যা হল, বিনিয়োগে নজরদারি, বর্তমান ডিজিটাল স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধানগুলোর জন্য অর্থভাণ্ডার, অতিমারির মত সমস্যা মোকাবিলার জন্য জ্ঞানের আদান-প্রদান। সমস্যা সমাধানের জন্য দেশভিত্তিকভাবে নির্দিষ্ট ব্যবস্থা এবং একটি 'আস্ক ট্র্যাকার'। আর, বিভিন্ন দেশের চাহিদার ওপর নজরদারি।