Advertisment

Model Code of Conduct: জারি হয়েছে আদর্শ আচরণবিধি, জেনে নিন কী করতে পারবেন, কোনটা পারবেন না

Lok Sabha elections: শনিবারই (শনিবার, ১৬ মার্চ) নির্বাচন কমিশন (ইসিআই) ঘোষণা করেছে, দেশে লোকসভা নির্বাচন ১৯ এপ্রিল শুরু হবে। ১ জুন পর্যন্ত সাত ধাপে ভোট হবে। ফল প্রকাশিত হবে ৪ জুন। এই ঘোষণার সঙ্গেই জারি হয়েছে, মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট (এমসিসি)।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Model code of conduct, election commission

Model code of conduct-election commission: অবাধ এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য নির্বাচন কমিশন এমসিসি তৈরি করেছিল। যা ছিল, প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্যের ফলাফল। (ফাইল)

Model Code of Conduct comes into force for 2024 Lok Sabha elections: এবছর, অর্থাৎ ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের দিন ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই কার্যকর হয়েছে আদর্শ আচরণবিধি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার সমস্ত রাজনৈতিক দলকে কঠোরভাবে আদর্শ আচরণবিধি (এমসিসি) মেনে চলতে বলেছেন। এই আদর্শ আচরণবিধি, নির্বাচনের আগে নেতা এবং দলগুলোর কী করণীয়, তার তালিকা। শনিবারই (শনিবার, ১৬ মার্চ) নির্বাচন কমিশন (ইসিআই) ঘোষণা করেছে, দেশে লোকসভা নির্বাচন ১৯ এপ্রিল শুরু হবে। ১ জুন পর্যন্ত সাত ধাপে ভোট হবে। ফল প্রকাশিত হবে ৪ জুন। এই ঘোষণার সঙ্গেই জারি হয়েছে, মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট (এমসিসি)। যা জারি হওয়ায় সরকারও কোনও নীতিগত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে পারবে না।

Advertisment
  • শনিবার সন্ধ্যা থেকেই আদর্শ আচরণবিধি শুরু হয়ে গিয়েছে।
  • আদর্শ আচরণবিধি জারি হওয়ায় সরকারও কোনও নীতিগত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে পারবে না।
  • ভোটগ্রহণের ৪৮ ঘণ্টা আগে থেকে বন্ধ হয়ে যায় প্রচার, যাকে 'নির্বাচনী নীরবতা' বলে।

মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট কী?

নির্বাচন কমিশনের মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট হল, নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দল এবং প্রার্থীদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য জারি নির্দেশিকাগুলোর একটি গুচ্ছ। এই বিধিগুলো বক্তৃতা, ভোটের দিন, ভোটকেন্দ্র, পোর্টফোলিও, নির্বাচনী ইশতেহারের বিষয়বস্তু, মিছিল এবং সাধারণ আচরণের সঙ্গে সম্পর্কিত। যার মাধ্যমে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব হয়।

আদর্শ আচরণবিধি কখন কার্যকর হয়?

নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার তারিখ থেকে ফলাফল প্রকাশের তারিখ পর্যন্ত আদর্শ আচরণবিধি কার্যকর হয়। সেই হিসেবে, শনিবার সন্ধ্যা থেকেই আদর্শ আচরণবিধি শুরু হয়ে গিয়েছে। গোটা নির্বাচন প্রক্রিয়া চলাকালীন, তা কার্যকর থাকবে।

আদর্শ আচরণবিধি কোন কোন বিধিনিষেধ আরোপ করে?

নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার পরই সাধারণ আচরণ, সভা, মিছিল, ভোটের দিনের আচরণ, ভোটকেন্দ্র, পর্যবেক্ষক, ক্ষমতায় থাকা দল এবং নির্বাচনী ইশতেহার সম্পর্কিত ৮টি বিষয়ে আদর্শ আচরণবিধি লাগু হয়েছে।

এর মধ্যে মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ক্ষমতায় থাকা দলকে (কেন্দ্রে হোক বা রাজ্যে) নিশ্চিত করতে হয় যে, সরকার এমন কিছু করবে না, যা নির্বাচনের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। অর্থাৎ, ভোটের আচরণকে প্রভাবিত করতে পারে এমন কোনও নীতি, প্রকল্প বা পরিকল্পনা ঘোষণা করা যাবে না। শাসক দলকে অবশ্যই সরকারি কোষাগারের খরচে বিজ্ঞাপন এড়াতে হবে। নির্বাচনে জয়ের সম্ভাবনা বাড়াতে প্রচারের জন্য সরকারি গণমাধ্যমকে ব্যবহার করা যাবে না।

আদর্শ আচরণবিধিতে আরও বলা হয়েছে, মন্ত্রীরা নির্বাচনী কাজ আর সরকারি সফর একসঙ্গে করতে পারবেন না। নির্বাচনের জন্য সরকারি সুযোগ সুবিধা ব্যবহার করতে পারবেন না। ক্ষমতাসীন দল নির্বাচনী প্রচারে সরকারি পরিবহণ ব্যবহার করতে পারবে না। এটাও নিশ্চিত করতে হবে যে মাঠের মত খোলা জায়গায় নির্বাচনী সভা করা, হেলিপ্যাড ব্যবহার করার মতো সুবিধা শাসক দলের মতই, বিরোধী দলগুলোকেও একই শর্তে দেওয়া হবে।

সংবাদপত্র ও অন্যান্য গণমাধ্যমে সরকারি অর্থ খরচে বিজ্ঞাপন দেওয়ার বিষয়টিও আদর্শ আচরণবিধিতে অপরাধ বলে বিবেচিত হয়। ক্ষমতাসীন দল, ভোটারদের প্রভাবিত করতে পারে, এমন সম্ভাবনা থাকায় কোনও সরকারি, আধাসরকারি প্রতিষ্ঠানে তৎকাল ভিত্তিতে নিয়োগ করা যায় না।

রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীদের শুধুমাত্র তাঁদের কাজের রেকর্ডের ওপর ভিত্তি করে সমালোচনা করা যেতে পারে। ভোটারদের প্রলুব্ধ করার জন্য কোনও জাতি বা সাম্প্রদায়িক অনুভূতি ব্যবহার করা যায় না। মসজিদ, গির্জা, মন্দির বা অন্য কোনও উপাসনালয়কে নির্বাচনী প্রচারে ব্যবহার করা যায় না। ভোটারদের ঘুষ দেওয়া, ভয় দেখানোও নিষিদ্ধ। ভোট শুরুর নির্ধারিত সময়ের ৪৮ ঘণ্টা আগে জনসভা করাও নিষিদ্ধ। এই ৪৮ ঘণ্টার সময়কাল 'নির্বাচনী নীরবতা' বলে পরিচিত। এই সময় দেওয়ার কারণ হল, একজন ভোটারকে তার ভোট দেওয়ার আগে মনস্থির করার জন্য একটি প্রচারমুক্ত পরিবেশ উপহার দেওয়া।

Election dates, election commission of india
ক্রেডিট: ভারতের নির্বাচন কমিশন

মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট কি আইনত বাধ্যতামূলক?

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনের অভিযানের অংশ হিসেবে আদর্শ আচরণবিধি তৈরি হয়েছে। যা ছিল প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্যের ফল। এর পিছনে কোনও আইনি সমর্থন নেই। সহজ কথায়, আদর্শ আচরণবিধির মানে হল, কেউ তা লঙ্ঘন করলে কোনও ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা করা যাবে না। এই বিধি পালনের অধিকার স্বেচ্ছাধীন। নির্বাচন কমিশন যার প্রয়োগে নৈতিক অনুমোদন দিয়েছে। প্রয়োজন অনুযায়ী, যার নিন্দাও করে।

নির্বাচন কমিশন কোনও রাজনীতিবিদ বা কোনও দলকে আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে নিজে থেকে বা অন্য কোনও পক্ষ বা ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে নোটিশ দিতে পারে। একবার নোটিশ জারি করা হলে, ব্যক্তি বা পক্ষকে অবশ্যই লিখিতভাবে তার জবাব দিতে হয়। দোষ স্বীকার করে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হয়। অথবা অভিযোগ খণ্ডন করতে হয়। পরবর্তী ক্ষেত্রে, যদি কোনও ব্যক্তি বা দল দোষী সাব্যস্ত হয়, তাহলে সেই ব্যক্তি বা দল- নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিতভাবে ক্ষমা চাইতে পারে। যাকে অনেকে কমিশনের শাসন হিসেবে দেখেন।

আরও পড়ুন- কোবিন্দের রিপোর্ট আসলে বিজেপিরই এজেন্ডা? ৮৪-তে বাজপেয়ীর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির পথেই এগোচ্ছে কমিশন

আদর্শ আচরণবিধি 'লঙ্ঘন'

২০২৩ সালের নভেম্বরে, মধ্যপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারের সময়, নির্বাচন কমিশন একটি নির্বাচনী সমাবেশের সময় দেওয়া একটি বিবৃতির জন্য কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদঢ়াকে নোটিশ দিয়েছিল। কারণ, প্রিয়াঙ্কা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন কেন তিনি ভেল সংস্থাকে তাঁর বড় শিল্পপতি বন্ধুর হাতে তুলে দিয়েছেন? অপ্রমাণিত অভিযোগ করার জেরে এমসিসির বিধান উল্লেখ করে, কমিশন প্রিয়াঙ্কাকে তাঁর বিবৃতি ব্যাখ্যা করতে বলেছিল।

২০১৭ সালে গুজরাট নির্বাচনের প্রচারে, বিজেপি এবং কংগ্রেস উভয়ই একে অপরকে আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত করেছিল। বিজেপি ভোটগ্রহণের ৪৮ ঘন্টা আগে টিভি চ্যানেলগুলোর সঙ্গে রাহুল গান্ধীর সাক্ষাত্কারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিল। পালটা কংগ্রেস অভিযোগ করেছিল, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর ভোট দেওয়ার পরে আহমেদাবাদে একটি 'রোড শো' করে একই বিধান লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত হয়েছিলেন।

অবশ্য, নির্বাচন কমিশন খুব কমক্ষেত্রেই আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘন করার জন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় কমিশন বিজেপি নেতা এবং পার্টির তৎকালীন সভাপতি অমিত শাহ ও সমাজবাদী পার্টির নেতা আজম খানকে তাঁদের বক্তৃতার মাধ্যমে ভোটের পরিবেশকে আরও খারাপ করা থেকে বিরত রাখতে, এই দুই নেতার প্রচারই নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল। কমিশন নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য সংবিধানের ৩২৪ অনুচ্ছেদের অধীনে তার বিশেষ ক্ষমতা ব্যবহার করেছিল। নেতারা ক্ষমা চাইলে এবং বিধি মেনে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিলে, বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হয় বা প্রত্যাহার করা হয়।

election commission CONGRESS Voter tmc bjp Oppositions loksabha election 2024
Advertisment