প্রায় দুই বছর আগে, ২০২২ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বলেছিলেন যে, 'এটি যুদ্ধের যুগ নয়।' তবুও, ২০২৩-এ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামেনি। এই লড়াই ২০২৪-এ তৃতীয় বছরে প্রবেশ করতে পারে। পাশাপাশি, হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলার ফলে গাজা উপত্যকায় শুরু হওয়া যুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি। যা, সাম্প্রতিক দশকের সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক সংঘাত। সেই সংঘাত এখনও চলছে। চিন-তাইওয়ান সংঘাত মেটেনি। যা ভারত এবং পশ্চিমী দুনিয়াকে রীতিমতো উদ্বিগ্ন করেছে।
ভারত-মার্কিন সম্পর্কে টানাপোড়েন
প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ওয়াশিংটন এবং নয়াদিল্লি সফরের পর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে খালিস্তানি জঙ্গিকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উঠেছে। তাতে ভারত-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে সামান্য হলেও চিড় ধরেছে। কানাডার মত এক্ষেত্রেও ভারত প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, উপযুক্ত তথ্য পেলে মার্কিন ষড়যন্ত্রে ভারতীয় নাগরিকদের ভূমিকা খুঁজে দেখা হবে।
ভারত-মালদ্বীপ সম্পর্ক
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু নির্বাচনে 'ইন্ডিয়া আউট' বা ভারত-বিরোধী প্রচার চালিয়েছিলেন। তিনি মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনাকে প্রত্যাহার করতে নয়াদিল্লিকে অনুরোধ করেছেন। তিনি একটি জল সমীক্ষা চুক্তি বাতিল করতে চাইছেন। চিনের উসকানিতেই মুইজু এসব করছেন বলে নয়াদিল্লি মনে করছে।
কাবুলে ব্যস্ততা
নয়াদিল্লির আফগানিস্তান দূতাবাসে রাষ্ট্রদূতের পরিবর্তন হয়েছে। মুম্বই এবং হায়দরাবাদের দূতাবাস থেকেও আফগানিস্তানের কূটনীতিকরা পদত্যাগ করেছেন। ভারত তাঁদের আশ্বস্ত করেছে যে এদেশের দূতাবাসে তালেবানের পতাকা উড়বে না। ভারতের সরকারি চিঠিপত্রেও তালেবান নাম থাকবে না। যদিও, ভারত তালেবানদের রাজধানী কাবুলের দূতাবাসে একটি টেকনিক্যাল টিমকে রেখেছে। আর, নয়াদিল্লিতে আফগান দূতাবাসের বর্তমান দলটি আফগান নাগরিকদের জন্য পাসপোর্ট এবং ভিসা পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্যে তালেবান সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। ভারতের ঠিক উলটো পরিস্থিতিতে চিন। তারা কাবুলে একজন পুরো সময়ের রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত করেছে।
আরও পড়ুন- ২০২৪-এ খেলার দুনিয়া, টি২০ থেকে অলিম্পিক, কতটা প্রভাব ফেলবে রাজনীতিতে?
পাকিস্তানে নতুন সরকার
২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পর থেকে পাকিস্তানের প্রতি উদাসীনতা বজায় রাখছে ভারত। তারমধ্যেই ইসলামাবাদ এবং রাওয়ালপিন্ডিতে রাষ্ট্রদূত পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু, তাতে চিত্রটা খুব একটা বদলায়নি। পাকিস্তানে বর্তমানে নির্বাচন হওয়ার কথা, ফেব্রুয়ারির পরে সেখানে একটি নতুন সরকার তৈরি হতে পারে। ভারতেও ২০২৪ সালেই নির্বাচন। সেই নির্বাচনের ফলের ওপর ভিত্তি করে দুই দেশের সম্পর্কে কতটা পরিবর্তন আসবে, তা ঠিক হবে।
আরও পড়ুন- রামমন্দির এবং রামায়ণ নিয়ে তো এখন বিপুল চর্চা, আসল ব্যাপারটা জানেন কী?
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক
শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্গে গত ১৫ বছরে ভারতের সম্পর্ক ইতিবাচক গতি অর্জন করেছে। নয়াদিল্লি চাইবে নতুন বছরের শুরুর দিকে নির্বাচনে হাসিনাই ক্ষমতায় ফিরুক। কারণ, ২০০০-এর দশকের গোড়ার দিকে খালেদা জিয়া সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছিল। এই পরিস্থিতিতে ভারতও এদেশের উত্তর-পূর্ব এবং বাংলাদেশের মধ্যে সংযোগ উন্নত করার চেষ্টা চালাবে। যাতে উভয় দেশই উপকৃত হবে।