Padma and Bharat Ratna: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার ঘোষণা করেছেন যে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পিভি নরসিমহা রাও (১৯৯১-৯৬) ও চৌধুরী চরণ সিং (জুলাই ১৯৭৯-জানুয়ারি ১৯৮০), এবং সবুজ বিপ্লবের প্রবর্তক ড. এমএস স্বামীনাথনকে 'ভারতরত্ন' দেওয়া হবে। এই সম্মান দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান। এর আগে প্রধানমন্ত্রী গত ৩ ফেব্রুয়ারি, প্রবীণ বিজেপি নেতা এলকে আদবানি, ওবিসি সংরক্ষণ আন্দোলনের মুখ, বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কার্পুরী ঠাকুরকে 'ভারতরত্ন' দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেছিলেন।
- গত ৩ ফেব্রুয়ারি এলকে আদবানি, কার্পুরী ঠাকুরকে 'ভারতরত্ন' দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করা হয়।
- শুক্রবার আরও তিনটি নাম তালিকায় যুক্ত হয়েছে।
- পিভি নরসিমহা রাও, চৌধুরী চরণ সিং, ড. এমএস স্বামীনাথনকেও 'ভারতরত্ন' দেওয়া হবে।
নির্বাচনের ইঙ্গিত এবং বিজেপি
শুক্রবারের ঘোষণাগুলো বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, এই ঘোষণা করা হয়েছে লোকসভা নির্বাচনের মাত্র কয়েক মাস আগে। ড. স্বামীনাথন ও চরণ সিংকে 'ভারতরত্ন' দেওয়ার মাধ্যমে, সরকার বোঝাতে চেয়েছে কেন্দ্র কৃষক এবং কৃষির প্রতি যত্নশীল। দেশের শীর্ষস্থানীয় জাঠ নেতাদের মধ্যে চরণ সিং অন্যতম। যদিও জাঠরা ২০১৪ সাল থেকে উত্তরপ্রদেশে বিজেপির পিছনে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়েছে, কিন্তু এই সম্প্রদায় এবার হরিয়ানায় বিজেপির প্রতি অসন্তুষ্ট বলেই অভিযোগ উঠছে।
চরণ সিং ও জাঠ ক্ষোভ সামালের চেষ্টা
চরণ সিং-এর জন্য দীর্ঘদিন ধরেই 'ভারতরত্ন' সম্মানের দাবি জানাচ্ছিল জাঠবলয়ের সংগঠন- 'রাষ্ট্রীয় লোকদল'। এবার আরএলডির সেই দাবি পূরণ হল। যা বিজেপিকে বড় স্বস্তি দিল। জাঠবলয়ে বিজেপির অবস্থানকে পোক্ত করল বলা যায়। রাষ্ট্রীয় লোকদলের নেতৃত্বে বর্তমানে রয়েছেন চরণ সিংয়ের নাতি জয়ন্ত চৌধুরী। এমনিতে আরএলডি বিরোধী ভারত জোটের অংশ। কিন্তু, এখন বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে তৈরি। জয়ন্ত সোশ্যাল মিডিয়া এক্স-এ বার্তায় বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা তাঁর, 'হৃদয় জয় করেছে'। পরে সাংবাদিকদের জয়ন্ত জানান, 'এনডিএ-তে আরএলডির যোগদানের সম্ভাবনা অস্বীকার করার মত মুখ তাঁর আর নেই।'
আরও পড়ুন- লক্ষ্য চারশো আসন, ভারতরত্নেই বাজিমাত মোদীর, অঙ্কটা কী?
নরসিমহা রাওকে সম্মান জানানোও তাৎপর্যপূর্ণ
শুধু চরণ সিং-ই নন। নরসিমহা রাওকে 'ভারতরত্ন' সম্মান দেওয়াও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এটা স্পষ্ট করে দিল যে, কংগ্রেস বছরের পর বছর ধরে তার সবচেয়ে দক্ষ প্রশাসকদের একজনকে উপেক্ষা করে গিয়েছে। যে প্রশাসক দেশকে গভীর আর্থিক সংকট থেকে টেনে এনে অর্থনৈতিক বৃদ্ধির পথে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেই তাঁকেই কংগ্রেস বছরের পর বছর উপেক্ষা করে গিয়েছে শুধুমাত্র সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে তাঁর মতপার্থক্যের কারণে। প্রধানমন্ত্রী চলতি সপ্তাহে সংসদে বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন। তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন যে, বিজেপি দেশকে অন্য সব কিছুর ওপরে রাখে। কিন্তু, দেশ নয়। নেহেরু-গান্ধী পরিবারকেই কংগ্রেস সর্বদা প্রথম বলে মনে করে। পাশাপাশি, অযোধ্যায় রাম মন্দির ইস্যুতেও রাওকে সম্মান জানানো বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। বাবরি মসজিদ যখন ধ্বংস হয়েছিল, তখন কেন্দ্রে ছিল কংগ্রেসের নরসিমহা রাওয়ের সরকার। সেই সময়ে প্রধানমন্ত্রী পদে রাও ছিলেন।