মোট গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স (জিএসটি) সংগ্রহ আগস্টে (জুলাই মাসে বিক্রির জন্য) বেড়ে হয়েছে ১,৪৩,৬১২ কোটি টাকা। যা আগের মাসের তুলনায় কম। কিন্তু, বাৎসরিক জিএসটির তুলনায় ২৮.২ শতাংশ বেশি। বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রকের প্রকাশিত তথ্যে একথা জানা গিয়েছে। ভোগে গতি আসা, মূল্যস্ফীতির উচ্চ হার, ১৮ জুলাই থেকে কার্যকর হওয়া ৪৭তম জিএসটি কাউন্সিলের সভায় গৃহীত হার বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের আংশিক প্রভাব, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পুনরুদ্ধার এই জিএসটি (রাজস্ব) বৃদ্ধির কারণ বলে অর্থনীতিবিদরা জানিয়েছেন। এর পাশাপাশি, চুরি আটকাতে সরকারি পদক্ষেপকেও তাঁরা কৃতিত্ব দিয়েছেন। নথি বলছে, পণ্য আমদানি থেকে রাজস্ব ৫৭ শতাংশ বেড়েছে। অভ্যন্তরীণ লেনদেন (পরিষেবা আমদানি-সহ) থেকে আয় ১৯ শতাংশ বেড়েছে।
জিএসটির উচ্চহার নিয়ে সরকারের মূল্যায়ন কী?
মাসিক জিএসটি থেকে প্রাপ্ত রাজস্ব গত ছয় মাস ধরেই ১.৪ লক্ষ কোটি টাকার ওপরে। বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রক তার বিবৃতিতে জানিয়েছে যে ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে আগস্টের এর মধ্যে জিএসটি থেকে প্রাপ্ত রাজস্বের বার্ষিক বৃদ্ধি ঘটেছে ৩৩ শতাংশ। এজন্য প্রশাসন রীতিমতো উচ্ছ্বসিত। এই ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রকের বক্তব্য, 'অতীতে জিএসটি কাউন্সিল খুব ভালো পদক্ষেপ নিয়েছে। তার ফলেই রাজস্ব আদায়ের বৃদ্ধি ঘটেছে। অর্থনৈতিক অগ্রগতির ফলেও জিএসটি বেড়েছে।' অর্থমন্ত্রক সূত্রে খবর, এর পাশাপাশি, আন্তঃরাজ্য বাণিজ্য বেড়েছে। ২০২২ সালের জুলাইয়ে ৭.৬ কোটি ই-ওয়ে বিল তৈরি হয়েছিল। যা জুনের ৭.৪ কোটি বিলের চেয়ে বেশি। ২০২১ সালের জুলাইয়ে হওয়া ৬.৪ কোটি বিলের চেয়েও ১৯ শতাংশ বেশি।
রাজস্বে উন্নতি বলতে কী বোঝায়?
৪৭তম জিএসটি কাউন্সিলের সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুসারে, 'প্যাকেট করা এবং লেবেলযুক্ত' খুচরো প্যাকগুলো থেকে জিএসটি ছাড় প্রত্যাহার করা হয়েছিল। যার মধ্যে রয়েছে দই, লস্যি, চাল, গমের আটা এবং বাটার মিল্কের মতো খাদ্যবস্তু। তবে এই সমস্ত বস্তুর মধ্যে যেগুলো আলগা বা লেবেলবিহীন বিক্রি হয়, সেগুলোতে জিএসটি ছাড় অব্যাহতই থাকছে। প্যাকেট করা বা লেবেলযুক্ত খাদ্য সামগ্রী যেমন শস্য, দই, লস্যি, পনির, গুড়, গমের আটা, পাফ করা চাল, বাটার মিল্ক, মাংস/মাছ (তাজা এবং হিমায়িত বাদে)-এ এখন ব্র্যান্ডেডের সমতুল্য ৫ শতাংশ হারে কর ধার্য করা হয়েছে। এছাড়াও, শুল্ক কাঠামোর সংশোধন, গৃহস্থালির সামগ্রী যেমন LED বাতি, মুদ্রণ বা আঁকার কালি, বিদ্যুৎচালিত পাম্প, টেট্রাপ্যাকে ১২ শতাংশ থেকে ১৮ শতাংশ জিএসটি বেড়েছে। সোলার ওয়াটার হিটার এবং ফিনিশড লেদারের জিএসটি ৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ১২ শতাংশ হয়েছে।
আরও পড়ুন- হেমন্তকে কি মুখ্যমন্ত্রী থাকতে দেবেন? ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপালকে প্রশ্ন শাসক জোটের নেতাদের
আর্থিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অর্থনৈতিক কার্যকলাপ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গেই জিএসটি থেকে প্রাপ্ত রাজস্ব বাড়বে। উৎসবের মরশুমে আর্থিক গতি বাড়বে। তাতেই জিএসটি থেকে প্রাপ্ত রাজস্বও বাড়বে। ডেলয়েট ইন্ডিয়ার পার্টনার এমএস মানি থেকে শুরু করে কেপিএমজির পার্টনার অভিষেক জৈন, সকলেই একই কথা বলছেন। করোনা আবহে জিএসটি সংগ্রহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অর্থনৈতিক অগ্রগতি ব্যাহত হয়েছে। তারপরও অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য বিশেষজ্ঞরা প্রশাসনের প্রশংসা করেছেন। নথি বলছে, অন্তত ১৬টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জিএসটি সংগ্রহ ২০ শতাংশের বেশি বাড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞদের আশা, মোট জিএসটি থেকে আয় চলতি অর্থবর্ষের জন্য নির্ধারিত বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
জিএসটি থেকে আয়ের বিভাজন কীরকম?
১,৪৩,৬১২ কোটি টাকা জিএসটি থেকে প্রাপ্ত রাজস্বের মধ্যে, CGST বা কেন্দ্রের দ্বারা আন্তঃরাজ্যের পণ্য ও পরিষেবা সরবরাহের ওপর ধার্য কর ২৪,৭১০ কোটি টাকা এবং SGST বা পণ্য ও পরিষেবাগুলোর আন্তঃরাজ্য সরবরাহের ওপর রাজ্যগুলোর দ্বারা ধার্য কর ৩০,৯৫১ কোটি টাকা বলেই অর্থ মন্ত্রক জানিয়েছে।
Read full story in English