Advertisment

এভারেস্টের পথে এত মৃত্যু কেন?

"এরা যে খাবার দেয় তা যথেষ্ট নয়, থাকার ব্যবস্থাও অপ্রতুল। এগুলো ভয়ানক ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। সবচেয়ে বিপজ্জনক হল, খরচ বাঁচাতে গিয়ে এরা রাঁধুনিকেও অভিজ্ঞ শেরপা বলে চালিয়ে দিচ্ছে।"  

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Everest Expedition Death

নেপালের দিক দিয়ে এভারেস্টে ওঠার পথে মৃত্যু হয়েছে ১১ জন পর্বতারোহীর

এ বছর নেপালের দিক দিয়ে এভারেস্ট পর্বতশৃঙ্গে ওঠার পথে ৯ জন মারা গিয়েছেন। ২০১৫ সালের ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর শিখর উত্তোলন মরশুমে এত মৃত্যু আর হয়নি। তবে এ বছরের এই মৃত্যু সংখ্যার বাড়াবাড়ির জন্য় পর্বতারোহী এবং গাইডরা অন্য় বেশ কিছু বিষয়কে দায়ী করছেন-

Advertisment

ভিড়

এ বছর নেপালি সরকার এভারেস্টে ওঠার অনুমতি দিয়েছেন ৩৮১ জনকে, যা একটি রেকর্ড। এঁদের প্রত্যেকের কাছ থেকে অনুমতির জন্য ১১ হাজার ডলার করে নেওয়া হয়েছে।

পর্বতারোহীরা বলছেন, শৃঙ্গের অব্যবহিত নিচে, ৮০০০ ফুটের বেশি উচ্চতায়, যাকে ডেথ জোন বলে অভিহিত করা হয়, সেখানে বহুল পরিমাণ ভিড় হচ্ছে। এই এলাকাতেই অক্সিজেনের অভাবে অনেকের মৃত্যু হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।

অমেক অপারেটরের তরফ থেকেই সরকারের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে পারমিটের সংখ্যা কমানোর, এবং ক্রমবর্ধমান ভিড় কমাতে এভারেস্টে চড়ার মূল্য হিসেবে ২০ হাজার ডলার করে নেওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে।

মার্কিন সংস্থা আল্পেনগ্লো এক্সপিডিশনের তরফ থেকে আদ্রিয়ান বেলিঞ্জার বলেছেন, আত্মবিশ্বাসী পর্বতারোহী এবং অভিজ্ঞ গাইড ও শেরপারা এভারেস্টের পথে ট্রাফিক জ্যামের কথা জানেন। তাঁরা উপরে ওঠার নিরাপদ সুযোগের জন্য  অপেক্ষা করেন।

বেড়েছে অনভিজ্ঞ পর্বতারোহীর সংখ্যা। এভারেস্টে ওঠার পারমিট পাওয়ার আগে অপেক্ষাকৃত কম উঁচু কোনও শৃঙ্গে চড়ার মত কোনও পরীক্ষা নেওয়ার বন্দোবস্ত নেপাল সরকারের তরফে নেই। গাইডরা বলছেন এর ফলে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে।

মার্কিন সংস্থা ম্য়াডিসন মাউন্টেনিয়ারিংয়ের গ্যারেট ম্যাডিসন এ প্রসঙ্গে বললেন, নিজেদের সাধ্যের সীমার বাইরে চলে যাচ্ছেন অনভিজ্ঞরা।

ফিটনেসের অভাব

কোনও কোনও ট্রেকিং সংস্থা অভিযান শুরুর আগে সম্ভাব্য অভিযাত্রীদের স্বাস্থ্য় পরীক্ষা করলেও তা বাধ্যতামূলক হয়ে ওঠেনি।

এশিয়ান ট্রেকিংয়ের প্রতিষ্ঠাতা আং শেরিং শেরপা বললেন, "কিছু সংস্থা রয়েছে তারা কেবল ব্যবসার উপরেই জোর দেয়। পর্বতারোহীর ফিটনেসের ব্যাপারে তারা নজর দেয় না। এর ফলে অভিজ্ঞ আরোহী এবং শেরপারাই পর্বত যাত্রা করছেন, এই পরিস্থিতি থাকছে না।"

সমর্থনের অভাব

৩৫ হাজার ডলারের কমে সামিট করিয়ে দেওয়ার অফার নিয়ে বেশ কিছু ছোট দেশি কোম্পানির উত্থান ঘটেছে। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য নামজাদা সংস্থাগুলির অর্ধেক দামে সমস্ত বন্দোবস্ত করে তারা, জানাচ্ছেন পর্বতারোহীরাই।

মলয় মুখোপাধ্যায় নামে এক পর্বতারোহী বললেন, "এরা যে খাবার দেয় তা যথেষ্ট নয়, থাকার ব্যবস্থাও অপ্রতুল। এগুলো ভয়ানক ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। সবচেয়ে বিপজ্জনক হল, খরচ বাঁচাতে গিয়ে এরা রাঁধুনিকেও অভিজ্ঞ শেরপা বলে চালিয়ে দিচ্ছে।"

আবহাওয়া

মে মাসের অনেক গুলো দিনেই ঝোড়ো হাওয়ার জন্য উপরে ওঠা যায়নি, অথচ মে মাসই এভারেস্টে চড়ার সর্বোত্তম সময় বলে স্বীকৃত। এর ফলে আরোহীদের হাতে উপরে ওঠার সময় খুব কমে এসেছিল, সঙ্গে ট্র্যাফিক জ্যাম তো ছিলই।

শেরপা বলছিলেন, "এবার সামিটের দিনতারিখ তৈরির সময়ে কোনও নজরদারিও ছিল না এবং একই সঙ্গে অন্যান্য অভিযানের সঙ্গে সমন্বয় করার চেষ্টাও হয়নি। এর ফলে যখনই আবহাওয়া একটু ভাল হয়েছে, সকলে রওনা দিয়েছেন। ফলে একই দিনে পথে মানুষের জট সৃষ্টি হয়েছে।"

Everest Explained
Advertisment