Ayodhya: অযোধ্যায় রাম মন্দিরের উদ্বোধন হবে ২২ জানুয়ারি। চন্দ্রকান্ত সোমপুরা (৮১) ও তাঁর ছেলে আশিস সোমপুরা (৫১), নাগারা শৈলীতে মন্দির কমপ্লেক্সটির ডিজাইন করেছেন।
স্থাপত্যের 'ভাষা'
মন্দির স্থাপত্যে নাগারা শৈলীর উদ্ভব হয়েছিল খ্রিস্টীয় পঞ্চম শতাব্দীতে, গুপ্ত যুগের শেষের দিকে, উত্তর ভারতে। দক্ষিণ ভারতের দ্রাবিড় শৈলীর সঙ্গে নাগারা শৈলীর ব্যাপক ব্যবহার প্রাচীন ভারতে দেখতে পাওয়া যায়। দুটো শৈলীই একই সময়ে সৃষ্টি হয়েছিল। অ্যাডাম হার্ডি তাঁর দ্য টেম্পল আর্কিটেকচার অফ ইন্ডিয়া (২০০৭)-এ লিখেছেন, 'স্টাইল'-এর বদলে নাগারা এবং দ্রাবিড়কে, 'ভারতীয় মন্দির স্থাপত্যের দুটি মহান শাস্ত্রীয় ভাষা' বলা যেতে পারে। কারণ এই দুই শৈলী, 'বিস্তীর্ণ এলাকা এবং সময়জুড়ে' ব্যবহৃত হয়েছে। স্থাপত্যের এই দুই ভাষা প্রাচীন ভারতে ব্যাপক বিস্তারলাভ করেছিল।
বৈশিষ্ট্য, একটি সুউচ্চ শিখর
নাগারা শৈলীর মন্দিরগুলোর গর্ভগৃহ (গর্ভগৃহ), অর্থাৎ যেখানে দেবতার বিগ্রহ বিশ্রাম নেন, সেটা মন্দিরের সবচেয়ে পবিত্র অংশ। এটা একটি উঁচু চত্বরে নির্মিত হয়ে থাকে। গর্ভগৃহের ওপরে থাকে শিখরা (আক্ষরিক অর্থে 'পর্বত চূড়া')। যা, নাগারা শৈলীর মন্দিরগুলির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক। নাম থেকে বোঝা যায়, শিখর হল প্রাকৃতিক এবং মহাজাগতিক ক্রম-এর মানবসৃষ্ট উপস্থাপনা। যেমনটি হিন্দু ঐতিহ্যে কল্পনা করা হয়। স্টেলা ক্রামরিচ তাঁর দ্য হিন্দু মন্দির প্রথম খণ্ড (১৯৪৬)-এ লিখেছেন, 'প্রারম্ভিক গ্রন্থে বর্ণিত ২০ ধরনের মন্দিরের মধ্যে মেরু, মন্দার এবং কৈলাস হল প্রথম তিনটি নাম… তিনটিই পর্বতের নাম, যা পৃথিবীর অক্ষ। এই নামেই মন্দির, মূর্তি, লক্ষ্য এবং এই বিশ্ব ভবনের গন্তব্যকে বোঝানো হয়েছে।' একটি সাধারণ নাগারা শৈলীর মন্দিরে গর্ভগৃহের চারপাশে একটি প্রদক্ষিণ পথ থাকে। একই অক্ষে এক বা একাধিক মণ্ডপ (হল) থাকে। বিস্তৃত ম্যুরাল এবং রিলিফ প্রায়ই এর দেওয়ালে শোভা পায়।
দ্রাবিড় শৈলীর সঙ্গে পার্থক্য
দ্রাবিড় স্থাপত্যের শিখরের সঙ্গে নাগারা শৈলীর স্থাপত্যের মৌলিক পার্থক্য আছে। দ্রাবিড় শৈলীতে বিমানা, গোপুরম মন্দির স্থাপত্যের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। শিখর আর সীমানা প্রাচীরের স্থাপত্য দ্রাবিড় শৈলীর মন্দিরগুলোর অংশ। আর নাগারা শৈলীতে সীমানা প্রাচীরে নকশা উল্লেখের দাবি রাখে। যা অযোধ্যার রাম মন্দিরের গুরুত্বপূর্ণ অংশবিশেষ। এখানে মন্দির প্রাঙ্গণের চারপাশে একটি ৭৩২ মিটার দীর্ঘ প্রাচীর তৈরি করা হয়েছে। এইসব স্থাপত্যশৈলীই রামায়ণের যুগকে ফিরিয়ে দেবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন- উত্তপ্ত ইরান-পাকিস্তান সীমান্ত, সংঘর্ষের মূলে এক সংগঠন! কী এই জইশ আল-আদল?