Kalaram temple Modi-Ambedkar: এ এক অন্য রামমন্দির, যেখানে শ্রীরামের রং কালো, পিছনে বিরাট ইতিহাস, কী সেটা?
Nashik’s Ram Temple: এলাকায় পাঁচটি বটগাছের অস্তিত্ব থেকে পঞ্চবটী নামটি এসেছে। রামায়ণ মহাকাব্য অনুসারে ভগবান রাম, সীতা এবং লক্ষ্মণ এখানে একটি কুঁড়েঘর স্থাপন করেছিলেন। কারণ, পাঁচটি বটবৃক্ষের উপস্থিতি এই অঞ্চলটিকে শুভ করেছে। পঞ্চবটী অঞ্চলেই লঙ্কার রাক্ষস রাজা রাবণ ছলনা করে সীতাকে লক্ষ্মণ দ্বারা সৃষ্ট নিরাপদ অঞ্চল (গণ্ডী) থেকে বের করে আনেন। সীতাকে অপহরণ করেন। তাঁকে বন্দি করেন।
Nashik’s Ram Temple: এলাকায় পাঁচটি বটগাছের অস্তিত্ব থেকে পঞ্চবটী নামটি এসেছে। রামায়ণ মহাকাব্য অনুসারে ভগবান রাম, সীতা এবং লক্ষ্মণ এখানে একটি কুঁড়েঘর স্থাপন করেছিলেন। কারণ, পাঁচটি বটবৃক্ষের উপস্থিতি এই অঞ্চলটিকে শুভ করেছে। পঞ্চবটী অঞ্চলেই লঙ্কার রাক্ষস রাজা রাবণ ছলনা করে সীতাকে লক্ষ্মণ দ্বারা সৃষ্ট নিরাপদ অঞ্চল (গণ্ডী) থেকে বের করে আনেন। সীতাকে অপহরণ করেন। তাঁকে বন্দি করেন।
Narendra Modi Kalaram Mandir: নাসিকের শ্রীকালারাম মন্দিরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। (ছবি X.com এর মাধ্যমে)
Nashik’s Kalaram temple: মহারাষ্ট্রের নাসিকে তার রোড শো-র পরে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) শহরের পঞ্চবটি এলাকায় গোদাবরীর তীরে কালারাম মন্দির পরিদর্শন করেন। একদিন আগে, শিবসেনা (ইউবিটি) প্রধান উদ্ধব ঠাকরে বলেছিলেন যে তিনি ২২ জানুয়ারি- অযোধ্যায় রাম মন্দিরের অভিষেক অনুষ্ঠানের দিন এই মন্দিরে কাটাবেন। মন্দিরটি ৯০ বছরেরও বেশি আগে দলিতদের মন্দিরে প্রবেশের অধিকারের দাবিতে বাবাসাহেব আম্বেদকরের নেতৃত্বে একটি যুগান্তকারী আন্দোলনের স্থান। দশকের পর দশক ধরে বড় রাজনৈতিক নেতারা কেন এই মন্দিরে এসেছেন?
Advertisment
কালারাম মন্দিরের নামটি প্রভু রামের একটি কালো মূর্তি থেকে এসেছে। কালা রাম-এর আক্ষরিক বাংলা অনুবাদ হল, 'কালো রাম'। (শ্রী কালারাম মন্দির সংস্থার মাধ্যমে প্রাপ্ত ছবি)
স্থানমাহাত্ম্য রামায়ণে রয়েছে। তাই হিন্দু ধর্মে পঞ্চবটির একটি বিশেষ স্থানমাহাত্ম্য রয়েছে। ভগবান রামের মহাকাব্যে বর্ণিত বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা এখানে ঘটেছিল। রাম, সীতা এবং লক্ষ্মণ, তাঁদের ১৪ বছরের নির্বাসনের প্রথম কয়েক বছর দণ্ডকারণ্যে কাটিয়েছিলেন। এটি মধ্য ভারতের ঘন অরণ্য। যার একটি অংশ ছিল পঞ্চবটী। এলাকায় পাঁচটি বটগাছের অস্তিত্ব থেকে পঞ্চবটী নামটি এসেছে। রামায়ণ মহাকাব্য অনুসারে ভগবান রাম, সীতা এবং লক্ষ্মণ এখানে একটি কুঁড়েঘর স্থাপন করেছিলেন। কারণ, পাঁচটি বটবৃক্ষের উপস্থিতি এই অঞ্চলটিকে শুভ করেছে। পঞ্চবটী অঞ্চলে লঙ্কার রাক্ষস রাজা রাবণ ছলনা করে সীতাকে লক্ষ্মণ দ্বারা সৃষ্ট নিরাপদ অঞ্চল (গণ্ডী) থেকে বের করে আনেন। সীতাকে অপহরণ করেন। তাঁকে বন্দি করেন। যার জেরে শ্রীরামচন্দ্র দক্ষিণে লঙ্কায় অভিযান করেছিলেন। যার পরিণামে ভয়ংকর যুদ্ধ হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী সন্ত একনাথের মারাঠি ভাষায় লেখা ভাবার্থ রামায়ণ পাঠে অংশ নেন। (X.com এর মাধ্যমে)
Advertisment
দলিত আন্দোলন এই স্থান দলিত সত্যাগ্রহের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৩০ সালে, বিআর আম্বেদকর ও মারাঠি শিক্ষক এবং সামাজিক কর্মী পান্ডুরং সদাশিব সানে (গুরুজি নামে পরিচিত) হিন্দু মন্দিরে দলিতদের প্রবেশাধিকারের দাবিতে একটি আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। ১৯৩০ সালের ২ মার্চ, আম্বেদকর কালারাম মন্দিরের বাইরে একটি বড় প্রতিবাদ আয়োজন করেন। দলিত বিক্ষোভকারীরা ট্রাকে করে নাসিকে পৌঁছন। মন্দির ঘেরাও করেন। পরের কয়েকদিন, তাঁরা গান করেন। স্লোগান দেন। মন্দিরে প্রবেশের অধিকারের দাবি জানান। বিক্ষোভকারীরা বিরোধিতার মুখে পড়েন। রাম নবমীর মিছিলকে মন্দির প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। মিছিলের উদ্দেশ্যে পাথর নিক্ষেপের ঘটনাও ঘটেছিল। ধনঞ্জয় কিরের বই, 'ডক্টর আম্বেদকর: লাইফ অ্যান্ড মিশন'-এ সত্যাগ্রহের বিবরণ অনুসারে বাবাসাহেব ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। কালারাম মন্দিরের সত্যাগ্রহ ১৯৩৫ সাল পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। এমনটাই লিখেছেন কির। এর আগে, ১৯২৭ সালে, আম্বেদকর জনসাধারণের জায়গায় ব্যবহৃত জলে দলিতদের অধিকার নিশ্চিত করতে আরেকটি সত্যাগ্রহ শুরু করেছিলেন। সানে গুরুজিও, দলিত অধিকারের জন্য প্রচারের সময় মহারাষ্ট্রজুড়ে ভ্রমণ করেছিলেন। পন্ধরপুরের বিঠল মন্দিরে একটি প্রতিবাদ অনশনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। উদ্ধব ঠাকরে ৬ জানুয়ারি এই প্রসঙ্গে জানান, '২২ জানুয়ারি আমরা নাসিকের কালারাম মন্দিরে ভগবান রামের দর্শন করব। এটি সেই রাম মন্দির যেখানে ড. বাবাসাহেব আম্বেদকর এবং সানে গুরুজিকে প্রবেশের অনুমতি পেতে সংগ্রাম করতে হয়েছিল।'
শ্রীরামের কালো রঙের মূর্তি এই মন্দিরে ভগবান রামের একটি কালো রঙের মূর্তি রয়েছে। গর্ভগৃহে রাম, সীতা এবং লক্ষ্মণের মূর্তি আছে। প্রধান প্রবেশদ্বারে হনুমানের একটি কালো মূর্তি আছে। শ্রী কালারাম মন্দির সংস্থার ওয়েবসাইট অনুসারে মন্দিরটিতে প্রতিদিন কয়েক হাজার ভক্তের ভিড় হয়। ১৭৯২ সালে সর্দার রাঙ্গারাও ওধেকারের চেষ্টায় মন্দিরটি নির্মিত হয়েছিল। কথিত আছে যে, সর্দার ওধেকার স্বপ্ন দেখেছিলেন যে গোদাবরীতে ভগবান রামের একটি কালো রঙের মূর্তি আছে। সেই মত, নদী থেকে মূর্তিগুলো উদ্ধার হয়। যে স্থানটিতে মূর্তিগুলো পাওয়া গেছে, তার নাম রামকুণ্ড। এমনটাই দাবি মন্দির সংস্থার। মূল মন্দিরে ১৪টি ধাপ রয়েছে। যা ভগবান রামের ১৪ বছরের নির্বাসনের প্রতীক। এই মন্দিরে ৮৪টি স্তম্ভ আছে। যা ৮৪ লক্ষ প্রজাতির চক্রের প্রতিনিধি। হিন্দু শাস্ত্রমতে, ৮৪ লক্ষ প্রজাতি শেষে মেলে মানুষ রূপ। মন্দির সংস্থার ওয়েবসাইট বলছে, এখানে একটি বহু পুরনো গাছ আছে। যার নীচে পাথরে ভগবান দত্তাত্রেয়ের পদচিহ্ন রয়েছে।