Uttarakhand Haldwani Clash: উত্তরাখণ্ডের হালদোয়ানি জেলায় বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) প্রশাসন নাজুল জমিতে একটি মসজিদ ও মাদ্রাসা ধ্বংস করতে অভিযান চালালে হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। তাতে, পাঁচ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আরও অনেকে আহত হয়েছেন। প্রশ্ন হল এই নাজুল জমি কাকে বলে? কীভাবে এই ধরনের জমি ব্যবহার করা হয়? আর যে জমিতে এই অভিযান চালানো হয়েছিল, সেই জমি কি আদৌ নাজুল জমি?
- গত ৮ ফেব্রুয়ারি ওই ধ্বংস অভিযান চালানো হয়।
- জমি ১৫ থেকে ৯৯ বছরের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ইজারা দেওয়া হয়।
- স্থানীয়রা প্রশাসনকে ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে অনুরোধ করেছিল।
নাজুল জমি কাকে বলে?
নাজুল জমি সরকারের মালিকানাধীন। তবে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সরাসরি রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি হিসেবে পরিচালিত হয় না। রাষ্ট্র সাধারণত ১৫ থেকে ৯৯ বছরের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কোনও সংস্থাকে এই জমি ইজারা দেয়। ইজারার মেয়াদ শেষ হলে, স্থানীয় রাজস্ব বিভাগে তার নবায়নের জন্য লিখিত আবেদন করা যায়। সেই জমির নথিভুক্তকরণ নবায়ন হবে না অন্য কাউকে দেওয়া হবে, সেটা সম্পূর্ণই সরকারের নিজস্ব ব্যাপার। ভারতের প্রায় সমস্ত বড় শহরে, নাজুল জমি নানা প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন উদ্দেশ্যে বরাদ্দ করা হয়েছে।
নাজুল জমি কোথা থেকে এল?
ব্রিটিশ শাসনের সময়, ব্রিটিশদের বিরোধিতাকারী রাজা এবং রাজ্যগুলো প্রায়শই ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল। যার ফলে ওই সব রাজ্য এবং ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর মধ্যে বেশ কয়েকটি যুদ্ধ হয়। ওই সব রাজাদের যুদ্ধে পরাজিত করার পর, ব্রিটিশরা প্রায়ই তাঁদের জমি তাঁদের থেকে কেড়ে নিত। ভারত স্বাধীন হওয়ার পর ব্রিটিশরা এসব জমি খাস করে দেয়। কিন্তু রাজা এবং রাজন্যবর্গের বংশধররা যথাযথ নথিপত্রের অভাব থাকায় ওই সব জমির মালিকানা প্রমাণ করতে পারেননি। তারপরই এই সব জমিগুলোকে নাজুল জমি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। এই সব জমিগুলো বর্তমানে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের মালিকানাধীন।
সরকার কীভাবে নাজুল জমি ব্যবহার করে?
সরকার সাধারণত স্কুল, হাসপাতাল, গ্রাম পঞ্চায়েত ভবন, ইত্যাদি নির্মাণের জন্য নাজুল জমি ব্যবহার করে। প্রায়শই দেখা যায়, সরকার সরাসরি নাজুল জমি পরিচালনা করে না। বরং বিভিন্ন সত্ত্বাকে ওই সব জমি ইজারা দেয়।
নাজুল জমি কীভাবে পরিচালিত হয়?
বেশ কয়েকটি রাজ্য নাজুল জমির জন্য নিয়ম প্রণয়নের উদ্দেশ্যে সরকারি নির্দেশনামা লাগু করেছে। নাজুল জমি (হস্তান্তর) বিধিমালা, ১৯৫৬ হল সেই আইন, যে আইন অনুসারে বেশিরভাগই নাজুল জমির মালিকানা নির্ধারিত হয়।
আরও পড়ুন- এবার কী! এখনও ধন্দে পাকিস্তান?
হালদোয়ানিতে যেখানে ধ্বংস অভিযান চালানো হল, সেটা কি নাজুল জমি হিসেবে নথিবদ্ধ?
হালদোয়ানি জেলা প্রশাসনের মতে, ধ্বংসপ্রাপ্ত দুটি কাঠামো যেখানে ছিল, সেটা নগর নিগমে (পৌরসভার) নাজুল জমি হিসেবে নথিবদ্ধ। প্রশাসন বলছে, গত ১৫-২০ দিন ধরে রাস্তাগুলোকে যানজট মুক্ত করতে নগর নিগমের সম্পত্তিগুলোর বিরুদ্ধে ধ্বংস অভিযান চলছে। এই ব্যাপারে হালদোয়ানির জেলাশাসক বলেন, '৩০ জানুয়ারি জারি করা একটি নোটিশে তিন দিনের মধ্যে দখলদারি অপসারণ করতে হবে বা মালিকানার নথি দেখাতে হবে বলে নোটিস দেওয়া হয়েছিল। ৩ ফেব্রুয়ারি, কয়েকজন স্থানীয় ব্যক্তি আমাদের সঙ্গে আলোচনা করতে নগর নিগমে এসেছিলেন। তাঁরা জানিয়েছিলেন, আদালত যা বলবে মেনে চলবেন। হাইকোর্টে আবেদনের জন্য সময় চেয়ে তাঁরা আবেদনও জানিয়েছিলেন।' ডিএম জানিয়েছেন, আদালত এগিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পরেই কাঠামোগুলো ভেঙে ফেলা হয়। তবে, যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে সেই ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাকিল আহমেদ বলেছেন যে স্থানীয়রা প্রশাসনকে ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে অনুরোধ করেছিল। কারণ, হাইকোর্ট ওই দিন পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে।