Advertisment

Explained: মিজোরামে সেতু ধসে মৃত ২৩ শ্রমিক, দুর্ঘটনার কারণগুলো জানলে চমকে উঠবেন

সেতুটি ৫১.৩৮ কিলোমিটার দীর্ঘ বৈরাবী-সাইরাং রেলপথ প্রকল্পের ১৮৫টি সেতুর অন্যতম। ঘটনার সময় সেতুর স্তম্ভ বা কলামগুলো তৈরি করা হয়েছিল, বসানো হচ্ছিল একটি স্টিলের গার্ডার।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Mizoram bridge

সেতুটি একটি পাহাড়ি বনভূমি এবং একটি নদীর ওপর নির্মিত হচ্ছে - এটি রাজ্যের রাজধানী আইজল পর্যন্ত রেল সংযোগ নিয়ে যাওয়ার জন্য গৃহীত একটি দীর্ঘ প্রকল্পের অংশ। (এক্সপ্রেস ছবি)

মিজোরামে একটি নির্মাণাধীন রেলওয়ে সেতুর একটি স্টিলের গার্ডার চলতি সপ্তাহের শুরুতে ধসে পড়েছিল। ঘটনায় কর্মরত ২৩ জন শ্রমিক মারা গিয়েছেন। ঘটনার সময় ওই শ্রমিকরা মাটি থেকে প্রায় ১০০ মিটার উঁচুতে ছিলেন। মৃতদের বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের মালদায়। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও তিন শ্রমিক। সেতুটি একটি পাহাড়ি বনভূমি এবং একটি নদীর ওপর নির্মিত হচ্ছে। এটি মিজোরামের রাজধানী আইজল পর্যন্ত রেল সংযোগ নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি দীর্ঘ প্রকল্পের অংশ। আইজল থেকে প্রায় ১৯ কিলোমিটার দূরে সাইরাং-এ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। ব্রিজটি সায়রাং স্টেশন পর্যন্ত যাবে। এই সায়রাং হল ব্রডগেজ রেলওয়ে প্রকল্পের শেষ পয়েন্ট।

Advertisment
publive-image

সেতুটি ৫১.৩৮ কিলোমিটার দীর্ঘ বৈরাবি-সাইরাং রেলপথ প্রকল্পের ১৮৫টি সেতুর অন্যতম। ঘটনার সময় সেতুর কলামগুলো তৈরি করা হয়েছিল। বসানো হচ্ছিল একটি স্টিলের গার্ডার। এবিসিআই ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড এবং বিবিজে কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডের মধ্যে যৌথ উদ্যোগে কাজটি চলছিল। এই দুই সংস্থাই কলকাতায় অবস্থিত ভারত সরকারের একটি সংস্থা।

publive-image

নর্থ ইস্ট ফ্রন্টিয়ার রেলওয়ের প্রধান জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে-এর মতে, রেল মন্ত্রক দ্বারা গঠিত চার সদস্যের কমিটি বর্তমানে ধসের কারণ তদন্ত করছে। চলতি বছরের শুরুতে এই কলামের কাজ শেষ করা হবে বলেই উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল। এই স্তম্ভগুলো, 'প্রকল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলোর একটি'। কারণ, এটি কুরুং নদীর মাঝখানে তৈরি হয়েছিল। আর, এই নদীতে জলের স্রোত নিয়মিত বয়ে যায়।

টানেল এবং সেতুর এই প্রচলন হিমালয় অঞ্চলের রেললাইনের বৈশিষ্ট্য। এমনটাই জানিয়েছেন সব্যসাচী দে। তিনি বলেন, 'এই রেললাইনগুলো পৃথিবী পৃষ্ঠের ওপর তৈরি করা যায় না। সেই জন্য একটি উচ্চ সেতুর প্রয়োজন হয়। পার্বত্য অঞ্চলে, যদি আমাদের একটি নীচু উপত্যকা অতিক্রম করতে হয়, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই একটি লম্বা সেতুর প্রয়োজন হয়।'

যাইহোক, পার্বত্য রাজ্যের ভূখণ্ডে এই বিশাল কাঠামোগুলো নিয়ে পর্যবেক্ষকরা বেশ উদ্বিগ্ন। কারণ, 'এই ভূখণ্ডে রেলপথের স্তম্ভগুলি খুব উঁচুতে তৈরি হচ্ছে। এখানে, মাটি খুব রুক্ষ। যার মানে হল মাটি নরম এবং বৃষ্টিপাতের কারণে খুব সহজে ফুলে যায়। আর, তাই নড়বড়ে।' এমনটাই জানিয়েছেন মিজোরাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের প্রধান জিমি লালনুনমাওয়াইয়া। তিনি জানিয়েছেন, এই প্রকল্পটি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে তৈরি হচ্ছে। যাইহোক, আধিকারিকরা বলেছেন যে ২৩ আগস্টের ঘটনার পর প্রকল্পের সময়সীমা বাড়ানোর সম্ভাবনা কম। কারণ কাঠামোটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। ভারতীয় রেলের নথি অনুযায়ী প্রকল্পটি সমাপ্তির বর্তমান সময়সীমা হল ২০২৪ সালের মার্চ মাস।

আরও পড়ুন- ১৪৪ কোটি টাকার দুর্নীতি, তদন্তে সিবিআই, কী এই সংখ্যালঘু বৃত্তি কেলেঙ্কারি?

জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাবটি ২০১১ সালে রাজ্য সরকারের কাছে জমা দেওয়া হয়েছিল। জমিটি ২০১৪ সালের গোড়ার দিকে রেলের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। সেই বছরের পরে প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। রেলওয়ে দীর্ঘ এবং তীব্র বর্ষায় প্রকল্পের গতি কমিয়ে দিয়েছে বারবার। রাস্তা বরাবর ঘনঘন ভূমিধস হওয়ায় শ্রমিকদের যাতায়াত এবং যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে বহুবার। অন্যান্য রাজ্য থেকে উপকরণ আনার প্রয়োজন থাকে। কিন্তু, তাতেও বাধা পড়েছে। ভারী নির্মাণ কাজের জন্য স্থানীয় শ্রমিকের পাওয়া যায়নি। রাজ্যের পার্বত্য অঞ্চলে কাজ করতে ইচ্ছুক শ্রমিকের অভাব দেখা দিয়েছে। সঙ্গে, বড় সমস্যায় ফেলেছে কোভিড-১৯।

Death Bridge Collapse Mizoram
Advertisment