Nehru government recruited from open market: ইউপিএসসিতে 'ল্যাটারাল এন্ট্রি'র মাধ্যমে মোদী সরকারের নিয়োগের বিরোধিতা করে কার্যত কি নেহরু জমানাকেই অস্বীকার করল কংগ্রেস? কারণ, আজকের 'ল্যাটারাল এন্ট্রি'র অনেক আগে, নেহেরু সরকার 'ওপেন মার্কেট' থেকে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। 'ওপেন মার্কেট' নিয়োগে এসসি (SC) এবং এসটি (ST)-দের জন্য সংরক্ষণ প্রয়োগ করা হয়েছিল। তবে, রাষ্ট্রীয় সিভিল সার্ভিস থেকে পদোন্নতি পাওয়া অফিসারদের জন্য কোনও সংরক্ষণ চালু ছিল না। তা যাই হোক, বাস্তবটা হল- নরেন্দ্র মোদী সরকারের আমলাতন্ত্রে 'ল্যাটারাল এন্ট্রি' চালু করার ছয় দশক আগে, কংগ্রেসের জওহরলাল নেহরুর সরকারই প্রার্থীদের দক্ষতা এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতার ভিত্তিতে খোলা বাজার বা 'ওপেন মার্কেট' থেকে কয়েক ডজন আধিকারিক তথা কর্মী নিয়োগ করেছিল।
যা ঘটেছে
মোদী সরকার ২০১৮ সালে 'ল্যাটারাল এন্ট্রি'র জন্য প্রথম শূন্যপদের বিজ্ঞাপন দিয়েছিল। তখন অবশ্য কেন্দ্রে বিজেপির নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল। বর্তমানে কেন্দ্রে শরিক দলগুলোর ওপর বিজেপিকে নির্ভর করে সরকার চালাতে হচ্ছে। বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার বাস্তবিক অর্থেই এনডিএ সরকার। এই অবস্থায় মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সরকার ৪৫টি শূন্যপদ পূরণের জন্য এই ধরনের নিয়োগের পঞ্চম রাউন্ডের জন্য দেওয়া ১৭ আগস্টের বিজ্ঞাপনটি প্রত্যাহার করতে ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশনকে (UPSC) নির্দেশ দিয়েছে। এই নির্দেশ দেওয়ার কারণ, বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর মত বেশকিছু বিরোধী নেতা এবং সরকারের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ শরিক দল সংরক্ষণের নীতি অনুসরণ না করে এই নিয়োগের প্রচেষ্টার তীব্র বিরোধিতা করেছেন। তারপরই নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছে মোদী সরকার।
স্বাধীনতার পরে নিয়োগ
১৯৪৬ সালে, ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এক বৈঠকের পরে, ভারতীয় সিভিল সার্ভিস (ICS) এবং ভারতীয় পুলিশ (IP) বদলে ভারতীয় প্রশাসনিক পরিষেবা (আইএএস) এবং ভারতীয় পুলিশ পরিষেবা (আইপিএস) গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে, দেশের নীতি প্রণয়ন এবং তা বাস্তবায়িত করার জন্য আধিকারিকদের প্রয়োজন ছিল। ১৯৪৩ সালে আইসিএসের শেষ ব্যাচ নিয়োগ করা হয়েছিল। আইএএসের প্রথম ব্যাচটি ১৯৪৮ সালে নিযুক্ত হয়েছিল। সেই সময় যথেষ্ট যোগ্য আধিকারিক পাওয়া যায়নি। সমসাময়িক রিপোর্ট থেকে জানা যায় যে ১৯৫০-এর দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত, প্রায় ৭,০০০ জন আবেদনকারী বার্ষিক সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উপস্থিত হয়েছিলেন। তার মধ্যে প্রায় ২০০ জন নির্বাচিত হন। কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি, বিভিন্ন রাজ্য সরকারেরও নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের জন্য ভালো অফিসারদের খুব দরকার ছিল।
আরও পড়ুন- হাসিনাকে হাতে চাইছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার, শেষ পর্যন্ত তুলে দেবে ভারত?
অভাব মোকাবিলা
অফিসারদের ঘাটতি মেটাতে, বিশেষ দক্ষতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ নিয়োগ ড্রাইভ সেই সময় চালু হয়। ১৯৪৮-৪৯ সালে, সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল তখন উপপ্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। আর নেহরু ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। একই নিয়ম কার্যকার হয়েছিল ১৯৫৬ সালেও। সেই সময়ও ইউপিএসসির (UPSC) পরীক্ষার মাধ্যমে বার্ষিক নিয়োগের পাশাপাশি আমলারা নিযুক্ত হয়েছিলেন। এমারজেন্সি রিক্রুটমেন্ট বোর্ড (Emergency Recruitment Board)-এর পরামর্শে ইউপিএসসি এই নিয়োগগুলো করেছিল।