কোভিড নিয়ে গবেষণা জারি বিশ্বজুড়ে। সম্প্রতি ইউনিভার্সিটি অফ মেরিল্যান্ড স্কুল অফ মেডিসিন যে তথ্য সামনে এনেছে তা চমকপ্রদ। যদিও গোটা বিষয়টি এখনও পরীক্ষামূলক পর্যায়ে। কিন্তু এবার মাইক্রোস্কোপ নয় ১০ মিনিটের মধ্যে খালি চোখেই দেখা যাচ্ছে সারস-কোভ-২ ভাইরাস।
অর্থনীতি ফেরাতে ভারতের মত বিশ্বের অন্যান্য দেশেও লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। ফলে বিশ্বজুড়েই বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। এই সময় তাই অতি দ্রুততার সঙ্গে আরও ছড়িয়ে যেতে থাকে ভাইরাসটি। সেই আবহে যেন অল্প সময়েই এই ভাইরাসটির উপস্থিতি টের পাওয়া যায় সেই কারণে এই পরীক্ষার আবিষ্কার করা হয়েছে ইউনিভার্সিটি অফ মেরিল্যান্ড স্কুল অফ মেডিসিন-এর তরফে।
জানা গিয়েছে পরীক্ষায় একটি সুনির্দিষ্ট অণু ব্যবহার করা হয় যা সোনার ন্যানো পার্টিকেলগুলির সঙ্গে প্রথমে নিজেকে যুক্ত করে। এর ফলে এই যৌগটি একটি নির্দিষ্ট প্রোটিন সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। এর ফলে ভাইরাসের জেনেটিক সিকোয়েন্স বের করা খুবই সহজ হয়ে পড়ে। সম্প্রতি গোটা পদ্ধতিটি এসিএস ন্যানো জার্নালে প্রকাশিত করেছেন এই পরীক্ষার গবেষকরা।
কীভাবে কাজ করে এই টেস্ট?
এই পরীক্ষা করতে হলে কোনও মাইক্রোস্কোপ বা যন্ত্রও লাগবে না। প্রথমে রোগীর লালারস নেওয়া হবে। এরপর সেই নমুনার মধ্যে সোনার ন্যানোপার্টিকালগুলি দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করা হয়। যদি এই মিশ্রিত সলিউশনটি নীল বর্ণের হয়ে যায় সেক্ষেত্রে বুঝে নিতে হবে যে রোগীর দেহে ভাইরাস রয়েছে। আর যদি বর্ণে কোনও পরিবর্তন না হয় কিংবা বেগুনি মিশ্রণে পরিণত হয় তবে বুঝতে হবে সেখানে সারস-কোভ-২ ভাইরাসের কোনও উপস্থিতি নেই।
ইউএমএসএম-র জারি করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান হয়েছে যে ইউএমএসএম-এর ডায়াগনস্টিক রেডিওলজি এবং নিউক্লিয়ার মেডিসিন এবং শিশু বিশেষজ্ঞের অধ্যাপক দীপঞ্জন পান বলেন, “আমাদের প্রাথমিক ফলাফলের ভিত্তিতে আমরা বিশ্বাস করি যে এই নতুন পরীক্ষা ভাইরাসের আরএনএ সনাক্ত করতে পারে। তবে এই বিষয়টি আরও নিশ্চিত করতে কয়েকটি পরীক্ষারও প্রয়োজন।
করোনা ভাইরাসের অন্যান্য পরীক্ষার থেকে এটি কতটা আলাদা?
এই পদ্ধতিটি অন্যান্য পরীক্ষাগুলির থেকে দ্রুততর। কারণ প্রচলিত আরটি-পিসিআর পরীক্ষার জন্য এটি উন্নত পরীক্ষাগারের প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে সেই প্রয়োজন হয় না। পিসিআর পরীক্ষায় প্রথমে রিভার্স ট্রান্সক্রিপশন করে আরএনএ ভাইরাসকে ডিএনএ-তে রূপান্তরিত করা হয়। তারপর সেই ডিএনএ-এর প্রতিলিপি তৈরি করে তার সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়। পিসিআর পরীক্ষার মাধ্যমে রিপোর্ট পেতে তাই নয় থেকে দশ ঘন্টা সময় লাগে। আর নমুনা নিয়ে তারপর এত পদ্ধতি অবলম্বন করে গোটা কাজটি করতে প্রায় একদিন সময় লাগে। এর কারণ হল লালারসের নমুনা নেওয়ার সময় ভাইরাসটি কোন ফ্যামিলির সেটাও তখন বিবেচনা করা হয়। তারপর সেটি নভেল করোনাভাইরাস ফ্যামিলির অন্তর্গত হলে তবেই বাকি পরীক্ষা করা হয়।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন