ভারতের সংক্রমণবৃদ্ধি উদ্বেগজনক। এই আশঙ্কায় ভারতীয়-সহ নিউজিল্যান্ডের নাগরিকদের সে দেশ প্রবেশ নিষিদ্ধ। বৃহস্পতিবার ওয়েলিংটনে এই সিদ্ধান্তের কথা জানালেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডেন। আগামি ১১-২৮ এপ্রিল ভারত থেকে কিউই পাখির দেশে প্রবেশ নিষিদ্ধ। ভারতে বসবাসকারী নিউজিল্যান্ড নাগরিকদের জন্যও একইভাবে দরজা বন্ধ করল তাঁদের দেশের সরকার। জানা গিয়েছে, সম্প্রতি সেদেশের সীমান্ত লাগোয়া শহরে নতুন করে ২৩ জন সংক্রমিত হয়েছেন। যাঁদের মধ্যে ১৭ জন ভারতীয়। এর আগে প্রায় ৪০ দিন করোনামুক্ত ছিল দক্ষিণ গোলার্ধের এই ছোট্ট দেশ। তারপরেই নতুন করে সংক্রমিতের খোঁজ মেলায় পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে নিউজিল্যান্ড সরকারের এই সিদ্ধান্ত। সংবাদমাধ্যকে জানান প্রধানমন্ত্রী আর্ডেন।
বর্তমানে আন্তর্জাতিক যাত্রী বিমান পরিষেবা বন্ধ রেখেছে ভারত সরকার। একমাত্র এয়ার বাবল পদ্ধতি মেনে কয়েকটি দেশ থেকে এদেশে বিমান ওঠানামা করছে। সেই পদ্ধতিতে তালিকাভুক্ত হয়েছে ২৭টি দেশ। যাদের মধ্যে অন্যতম ইউএস, ইউএক, ইউএই, জাপান, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া এবং কাতার। তবে বিদেশ মন্ত্রক এখনও নিশ্চিত নয় এই দেশও ভারতের জন্য তাদের আকাশপথ নিয়ন্ত্রিত করবে কিনা। তবে শুধু নিউজিল্যান্ড নয় আরও একাধিক দেশে হঠাৎ করে সংক্রমণবৃদ্ধির জন্য ভারত থেকে আসা যাত্রীদের কাঠগড়ায় তুলেছেন।
কানাডা স্বাস্থ্য মন্ত্রক সুত্রে ৩-১৯ মার্চের মধ্যে মাত্র তিনটি বিমান ভারত থেকে সে দেশে নেমেছে। বেশিরভাগ যাত্রীদের নমুনা পরীক্ষায় সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। যারা দিল্লি থেকে সেই বিমান ধরেছিলেন। এর আগে গত বছর হংকংয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ হয়েছিল এয়ার ইন্ডিয়ার। সে দেশে প্রবেশের পরেই নমুনা পরীক্ষায় যাত্রীদের সংক্রমণ ধরা পড়ায় প্রায় দু’সপ্তাহ এয়ার ইন্ডিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল হংকং।
এদিকে, বুধবারে দেশে ফের রেকর্ড তৈরি করেছে করোনা ভাইরাস। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১ লক্ষ ২৬ হাজার জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। সেই আবহে টিকা নিয়ে সংক্রমণকে রোখার কথা জানান তিনি। বৃহস্পতিবার সকালে করোনাভাইরাস টিকার (কোভ্যাক্সিন) দ্বিতীয় ডোজ নিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
ভারতে যে হারে বেড়ে চলেছে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন। একটি টুইটবার্তায় মোদী বলেন, ‘আজ এইমসে কোভিড-১৯ টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিলাম। ভাইরাস হারানোর যে হাতেগোনা কয়েকটি উপায় আছে, তার অন্যতম হল টিকাকরণ। আপনি যদি টিকা পাওয়ার যোগ্য হন, তাহলে ডোজ নিন। কো-উইনে রেজিস্ট্রার করে নিন।’
দেশে একম মোট অ্যাক্টিভ আক্রান্তের সংখ্যা ৯ লক্ষ ৫ হাজার ২১। এদিকে দেশের যাবতীয় চিন্তা বাড়িয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় মহারাষ্ট্রের করোনা আক্রান্ত হয়েছে ৫৯ হাজার ৯০৭ জন। মোট আক্রান্তের নিরিখে এরপরই রয়েছে কেরল, কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশের মতো দক্ষিণী রাজ্যগুলি।
গত ২৪ ঘণ্টায় ছত্তিশগড়ে করোনা আক্রান্ত হয়েছে ১০ হাজার ৩১০ জন। কর্ণাটকে করোনা আক্রান্ত ৬ হাজার ৯৭৬ জন। উত্তরপ্রদেশে করোনা আক্রান্ত ৬ হাজার ২৩ জন। দিল্লিতে করোনা আক্রান্ত ৫ হাজার ৫০৬ জন। মধ্যপ্রদেশে করোনা আক্রান্ত ৪ হাজার ৪৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়েছেন দু’হাজার ৩৯০ জন। ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।