Advertisment

তুর্কমেনিস্তান- যে দেশে একটিও করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েনি

ফেব্রুয়ারির শুরুতে চিন সহ যে সব দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার বেশি ছিল, সে সব দেশে যাওয়ার বিমান বাতিল করে তুর্কমেনিস্তান।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Covid less Country

তুর্কমেনিস্তান প্রেসিডেন্ট গুরবাঙ্গুলি বেরিমুহামেদৌ

কোভিড-১৯ প্রকোপ শুরু হওয়ার পর থেকে মধ্য এশিয়ার তুর্কমেনিস্তানে কোনও করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েনি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন কোনও একটি দেশে অতিমারী স্পর্শ করল না এমন হওয়ার কথা নয়। তাঁরা তুর্কমেন সরকারের বিরুদ্ধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংকট ও দেশে তার প্রভাব সম্পর্কে জানানোর ব্যাপারে এগিয়ে না আসার অভিযোগ তুলেছেন।

Advertisment

কয়েক মাস সে দেশের সরকারের সঙ্গে আলোচনার পর ৬ জুলাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপের রিজিওনাল ডিরেক্টর হান্স ক্লুগ টুইট করে জানিয়েছেন একটি বিশেষ দল তুর্কমেনিস্তানের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সে দেশে গিয়েছন।

কোভিড-১৯ নিয়ে তুর্কমেনিস্তানের অবস্থান কী?

ফেব্রুয়ারির শুরুতে চিন সহ যে সব দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার বেশি ছিল, সে সব দেশে যাওয়ার বিমান বাতিল করে তুর্কমেনিস্তান। যেসব বিমান সে দেশে আসছিল তার রুট ঘুরিয়ে অবতরণ করানো হয় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর তুর্কমেনাবাতে। সেখানে যাত্রীদের উপসর্গ পরীক্ষার জন্য বিশেষ কোয়ারান্টিন জোন তৈরি করা হয়। তবে বিবিসি জানিয়েছে, স্থানীয়রা বলেছেন কিছু যাত্রী ঘুষ দিয়ে কোয়ারান্টিন জোন এবং দু সপ্তাহের বাধ্যতামূলক আইসোলেশন এড়িয়ে যান।

এর পর মার্চ মাসে তুর্কমেনিস্তান সমস্ত সড়ক সীমান্ত বন্ধ করে দেয়, বন্ধ করে দেয় বাইরের দেশের যাত্রী আসাও। তথ্য প্রকাশের ব্যাপারে সরকারের নিয়ন্ত্রণ কঠোর হওয়ার কারণে সে দেশে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি ঠিক কীরকম তা বোঝা শক্ত।

জুন মাসে রাজধানী আশগাবাতের মার্কিন দূতাবাস একটি স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সতর্কতা জারি করে। বলা হয়, "তুর্কমেনিস্তানে কোনও কোভিড-১৯ পজিটিভের সরকারি রিপোর্ট পাওয়া না গেলেও মার্কিন দূতাবাসের কাছে খবর স্থানীয় নাগরিকদের মধ্যে কোভিড-১৯-এর উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। তাঁদের কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হচ্ছে এবং সংক্রামক রোগীদের জন্য নির্দিষ্ট হাসপাতালে ১৪ দিনের জন্য কোয়ারান্টিনে রাখা হচ্ছে।"

আরও পড়ুন, কেরালার সোনা পাচার, কূটনৈতিক কার্গো ও এক পলাতক মহিলা

তুর্কমেনিস্তান সরকার বলে মার্কিন দূতাবাসের তথ্য সঠিক নয়।

তুর্কমেনিস্তানের আসল পরিস্থিতি কী হতে পারে?

৭ এপ্রিল তুর্কমেনিস্তানে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস হিসেবে গণ জমায়েত হয়। দেশের সরকারি টেলিভিশনে দেখা যায় শয়ে শয়ে মানুষ ট্র্যাকসুট পরে আশগাবাতের কাছে সাইকেল চালাচ্ছেন। আরেকটি ছবিতে দেখা যায় সরকারি কর্মী ও চিকিৎসা কর্মীরা সরকারি দফতরের ভিতরে ও বাইরে কসরৎ করছেন।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন জনস্বাস্থ্য সংকটের সময়ে এই প্রক্রিয়া তুর্কমেন প্রেসিডেন্ট গুরবাঙ্গুলি বেরিমুহামেদৌ-এর শারীরিক সক্ষমতা আগ্রহের কারণে হতে পারে। জনগণের কাছে ইমেজ তৈরিও আরেকটি সম্ভাব্য কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিবিসির রিপোর্টে বলা হয়েছে তুর্কমেনিস্তানগামী বিমান যাত্রীদের কোভিড-১৯ টেস্ট করা হলেও ঠিক কতজনের পরীক্ষা হয়েছে তা জানানো হয়নি। রিপোর্টে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, দেশের হাসপাতালগুলিকে সম্ভাব্য করোনার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছ এবং দেশের মধ্যের শহরে যাতায়াতে বিধিনিষেধ লাগু করা হয়েছে। গত কয়েক মাস ধরে কাফে ও রেস্তোরাঁর মত জায়গা চালু রয়েছে এবং বিয়ের মত অন্যান্য অনুষ্ঠানও চলছে, মাসক পরার কোনও ব্যবস্থাও নেই।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এতদিন পর পরিদর্শনে কেন?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোনও দেশের সরকারের অনুমতি ছাড়া সে দেশের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে পারে না। এপ্রিল মাসে হু ইঙ্গিত দিয়েছিল তাজিকিস্তান ও তুর্কমেনিস্তান, দু দেশ থেকে হু-কে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার জন্য ডাকা হয়েছে। তবে সংস্থার প্রতিনিধিরা তাজিকিস্তান গেলেও অজ্ঞাত কারণে তাঁরা তুর্কমেনিস্তানে যান নি।

এখন কী অবস্থা?

হুয়ের দল তুর্কমেনিস্তানে পৌঁছনোর পর সে দেশের পরিস্থিতি নিয়ে কোনও আপডেট দেয়নি বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।

গত সপ্তাহে সরকার ঘোষণা করেছে সকলের মাস্ক পরা উচিত, কিন্তু দাবি করা হয়েছে এ কেবল ধুলোর হাত থেকে বাঁচতেই। দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রক সুপারিশ করেছে নুন জসে ইউজারলিক মিশিয়ে মুখ ধুতে। ইউজারলিক একটি পুরনো ভেষজ যা ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এ ব্যাপারে সুপারিশ করেছেন স্বয়ং প্রেসিডেন্টয

এপ্রিল মাসে প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন এই ভেষজ পোড়ালে ভাইরাস চলে যায়, যদিও এর কোনও বিজ্ঞানসম্মত প্রমাণ মেলেনি। প্রেসিডেন্টের সুপারিশের পর দেশের বিভিন্ন অফিস ও বাজারে ওই ভেষজের ধোঁয়া দেওয়া হয় বলে খবর।

COVID-19
Advertisment