সেপ্টেম্বরে দেশে নভেল করোনাভাইরাসের নজিরবিহীন বৃদ্ধি হয়েছে। কিন্তু অক্টোবরে সেই সংখ্যা ক্রমশ কমতির দিকে। যে ভয়টা প্রাথমিকভাবে ছিল যে লকডাউন উঠে গেলে স্বাভাবিক জীবন ফিরে এলে হয়তো আরও বাড়বে করোনার প্রকোপ, তা কিন্তু হয়নি। বরং গত কয়েক সপ্তাহে অনেকটাই কমেছে কোভিড ভাইরাসের দাপট।
ঠিক কী কারণে এই ট্রেন্ড? এখনও এই বিষয়টি অজানা করোনা বিশেষজ্ঞদের কাছে। কোভিড পরীক্ষার সংখ্যা যে কমেছে তেমনটাও নয়। তাহলে? মনে করা হচ্ছে ভারতে হয়ত হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হয়েছে যার জেরেই করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ হচ্ছে বলেই মনে করা হচ্ছে। যদিও সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন জানিয়েছিলেন যে হার্ড ইমিউনিটি তৈরির থেকে বহু দূরে রয়েছে ভারতের মানুষ। আইসিএমআরের দ্বিতীয় সেরো-সার্ভের রিপোর্ট উল্লেখ করে তিনি বলেন, সমীক্ষা বলছে, ভারতের জনগণের মধ্যে এখনও হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হয়নি। এই পরিস্থিতিতে সবাই যাতে মাস্ক পরতে না ভোলেন সেকথা মনে করিয়ে দেন হর্ষবর্ধন।
সরকারের নিযুক্ত বৈজ্ঞানিক কমিটি করোনাভাইরাস সংখ্যা হ্রাসের সম্ভাব্য কারণগুলির মধ্যে এই বিষয়টির কথা জানিয়েছিলেন। কমিটির সদস্য অধ্যাপক মণিন্দ্র আগরওয়াল দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, "“কয়েক সপ্তাহ আগে সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তামিলনাড়ুর সাম্প্রতিক কেস স্টাডিতে দেখা গিয়েছে যে প্রায় ৭০ শতাংশ আক্রান্ত ব্যক্তি অন্যেকে ভাইরাস সংক্রামিত করছে না। ভাইরাসের সংক্রমণ কেবলমাত্র অল্প সংখ্যক লোকদের মধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছিল যাদের সুপার স্প্রেডার হিসাবে অভিহিত করা হয়।"
অধ্যাপক আগরওয়াল বলেন, "এই সুপার-স্প্রেডারদের মাধ্যমে অতিমারীটি প্রাথমিক পর্যায়ে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা বেশি ছিল। সুতরাং সুপার-স্প্রেডাররা ইতিমধ্যেই সংক্রামিত হয়েছে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাতে পরিণত হয়েছে। যেমনটি আমরা দেখেছি, অন্যদের মধ্যে খুব কম লোকই এই রোগ সংক্রমণ করে। আমরা এখনই যা দেখছি তার এটি একটি সম্ভাব্য কারণ হতে পারে হার্ড ইমিউনিটি।"
‘হার্ড ইমিউনিটি’ গড়ে তোলার পক্ষে বড় যুক্তি হল, লকডাউনের সাহায্যে মহামারীর বিস্তারকে খানিক শ্লথ করা যায় ঠিকই। কিন্তু যতক্ষণ না দেশের একটা বড়সড় অংশের মধ্যে সংশ্লিষ্ট অসুখের জন্য ইমিউনিটি গড়ে ওঠে, সংক্রমণ চলতেই থাকবে। ওদিকে দেশের মোটামুটি ৬০-৭০ শতাংশ জনতার যদি এই ইমিউনিটি গড়ে ওঠে, তবেই থেমে যাবে ভাইরাসের বিজয়রথ।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন