অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা ১ জানুয়ারি জানিয়েছেন যে ২০২২ সালে রাজ্যে কোনও গণ্ডার শিকার হয়নি। বিশেষ ডিজিপি জিপি সিং টুইটারে এই তথ্য পোস্ট করে জানিয়েছেন যে, গত বছর কমপক্ষে ২,০০০টি গণ্ডার অসমে শিকার হয়েছিল। এবছর একটাও গণ্ডার শিকারের ঘটনা ঘটেনি। জিপি সিং টুইট করেছেন, 'গণ্ডার শিকার রোখার চেষ্টা ভালো ফল দিয়েছে। অসমে শেষবার গণ্ডার শিকার হয়েছিল ২০২১ সালের ২৪ ডিসেম্বর। আর, সেটা ঘটেছিল গোলাঘাট জেলার হিলাকুণ্ডা কোহোরায়। আমরা এই মৃত্যুহারকে কমিয়ে রাখার চেষ্টা চালাব।'
ভারতীয় গণ্ডার
ভারতীয় গণ্ডার (Rhinoceros unicornis) শুধুমাত্র ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা, উত্তরবঙ্গের কিছু অংশ এবং দক্ষিণ নেপালের কিছু অংশে পাওয়া যায়। এর মধ্যে একটি কালো শিং রয়েছে যা লম্বায় ৬০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে, এমন গণ্ডারও আছে। এদের ত্বকের ভাঁজ শক্ত, রং ধূসর-বাদামি। এই প্রাণীটির চামড়া ধাতুর বর্মের মত।
আইইউসিএন তার লাল তালিকায় ভারতীয় গণ্ডারকে অরক্ষিত (বিপন্নের চেয়ে ভালো) তালিকাভুক্ত করেছে। আগে অবশ্য পরিস্থিতি আরও খারাপ ছিল। একশৃঙ্গ গণ্ডার ছিল বিপন্ন শ্রেণিভুক্ত। ডব্লিউডব্লিউএফ এই প্রসঙ্গে বলেছে, 'বৃহত্তর একশৃঙ্গ গণ্ডারের পুনরুদ্ধার এশিয়ায় পশু সংরক্ষণের সবচেয়ে বড় সাফল্যের অন্যতম।'
ডব্লিউডব্লিউএফের মতে, বর্তমানে বনাঞ্চলে প্রায় ৩,৭০০ ভারতীয় গণ্ডার আছে। আসামের কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানে (KNP) এই প্রাণীর সংখ্যা ২,৬১৩। গত বছরের মার্চে এক সমীক্ষায় একথা জানা গিয়েছে। বর্তমানে ওরাং, পবিটোরা এবং মানস পার্কে ২৫০-ও বেশি অন্যান্য গণ্ডার রয়েছে।
আরও পড়ুন- সাংসদ, বিধায়কদের বাকস্বাধীনতার অধিকার নিয়ে সুপ্রিম রায়, কী বলল আদালত?
গণ্ডার শিকার
শিঙের লোভেই চোরাশিকারীরা গণ্ডার হত্যা করে থাকে। বেশ কিছু জাতির সংস্কৃতিতে গণ্ডারের সিং অত্যন্ত মূল্যবান। ২০২১ সালে অসমের বনবিভাগের একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, 'প্রথাগত চিনা ওষুধে গণ্ডারের শিং ক্যানসার থেকে শুরু করে হ্যাংওভার এমনকী কামোদ্দীপক হিসেবেও বিভিন্ন রোগ সারাতে ব্যবহৃত হয়।' ভিয়েতনামে, একটি গণ্ডারের শিং স্ট্যাটাস সিম্বল হিসেবে বিবেচিত হয়। এই দেশগুলোতে চাহিদার কারণে গণ্ডার শিকারের সম্ভাবনা সর্বদা বেশি থাকে।
২০১৯ সালে অসম সরকার কাজিরাঙা ন্যাশনাল পার্কে (KNP) গণ্ডার শিকার এবং সেই জাতীয় কার্যকলাপের ওপর নজর রাখার জন্য একটি বিশেষ গণ্ডার সুরক্ষাবাহিনী গঠন করেছিল। ২০২১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর, বিশ্ব গণ্ডার দিবসে KNP-এর বোকাখাতে প্রায় ২,৫০০টি গণ্ডারের শিং প্রকাশ্যে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল। এটা করা হয়েছিল মিথ ভাঙতে। যে মিথ বলে যে, গণ্ডারের শিং আসলে মূল্যহীন।
Read full story in English