বিজেপি সারা পশ্চিমবঙ্গ জুড়েই বাড়ছে। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস যে জেলায় নেতা-কর্মীদের নিয়ে সবচেয়ে বেশি শঙ্কিত তা হল উত্তর ২৪ পরগনা।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা ৪০০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ব্যাপৃত। এর একটা অংশ কলকাতার উত্তর শহরতলি। এর দক্ষিণ এবং পশ্চিমে কলকাতা এবং উত্তর ও পূর্বে বাংলাদেশ। আয়তনের দিক থেকে এ জেলা রাজ্যের মধ্যে দশম, তবে জনসংখ্য়ায় প্রথম। এমনকি ২০১৪ সালে মহারাষ্ট্রের ঠানে জেলা থেকে পালঘর আলাদা হয়ে যাওয়ার পর উত্তর ২৪ পরগনা দেশের সবচেয়ে সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যাসমন্বিত জেলা।
এ জেলার মধ্য়ে পড়ে দমদম, ব্যারাকপুর, বারাসত, বসিরহাট এবং বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্র। এ সবকটি আসনেই সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে। বনগাঁ এবং ব্যারাকপুরে বিজেপি জিতেছে, দমদমে তারা হেরেছে ৫০ হাজারের কিছু বেশি ভোটে। রাজ্যের যে সামান্য কয়েকটি আসনে বিজেপি ২০১৯-এর আগেও জিতেছে তার মধ্যে দমদম একটি। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এ আসন থেকে জিতেছেন ১৯৯৮ এবং ১৯৯৯ সালে। বনগাঁ হল তফশিলি জাতিভুক্ত বৈষ্ণব মতুয়া সম্প্রদায়ের স্বভূমি। এখানে বিজেপি নিজেদের জমি খোঁজার চেষ্টা করেছিল। এবারের জয়ী বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুর মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রয়াত নেত্রী বীণাপাণি ঠাকুরের নাতি। তিনি এবার হারিয়েছেন তৃণমূলের প্রার্থী বিদায়ী সাংসদ মমতা ঠাকুরকে। মমতা ঠাকুরও ওই পরিবারেরই সদস্য।
উত্তর ২৪ পরগনা মুকুল রায়েরও নিজের জায়গা। মুকুল মমতার ঘনিষ্ঠতম সহযোগী ছিলেন, ২০১৭ সালে তিনি বিজেপিতে যোগদান করেন। এ জেলাকে নিজের হাতের উল্টোপিঠের মতই চেনেন তিনি এবং পুরনো দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতানেত্রীদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগও ঘনিষ্ঠ। মঙ্গলবার ৬০ জনেরও বেশি তৃণমূল কাউন্সিলরের বিজেপিতে যোগদানের পর জেলার ২৭টি পুরসভার মধ্যে চারটির দখল নিয়ে নিল দেশের শাসক দল।
মুকুল রায় এবং তাঁর পুত্র তথা দুবারের তৃণমূল বিধায়ক শুভ্রাংশু রায় ছাড়া উত্তর ২৪ পরগনা বাহুবলী অর্জুন সিংয়েরও দাপিয়ে বেড়ানোর এলাকা। চারবারের তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন এখন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ।
১১ সালে বামদের ৩৪ বছরের শাসনের অবসান ঘটানোর পর তৃণমূল কংগ্রেস উত্তর ২৪ পরগনাকে তাদের শক্ত ঘাঁটি বানিয়ে ফেলেছিল, অধিকাংশ আসন এবং পুরসভা নিজেদের দখলেও এনে ফেলেছিল। লোকসভায় বিজেপির জয় এবং বহুল পরিমাণ তৃণমূল নেতাদের বিজেপিতে যোগদানের পর সে কাহিনি বদলাচ্ছে।
Read the Full Story in English