সুপ্রিম কোর্ট, সোমবার (১১ ডিসেম্বর) সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের হওয়া পিটিশনের ওপর একটি রায় ঘোষণা করবে। সংবিধানের ৩৭০ ধারা, পূর্ববর্তী জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যকে একটি বিশেষ মর্যাদা প্রদান করেছিল। এই ধারা ২০১৯ সালের আগস্টে বাতিল হয়। পরবর্তীতে, জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়েছিল- জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ। গত চার বছরে, এই বিভাজনের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে একাধিক পিটিশনও দায়ের হয়েছে। যা বর্তমানে বিচারাধীন।
J&K ক্যাডারের অবলুপ্তি
৩৭০ ধারা বাতিলের অনেক আগেই ২০১৭ সালের অক্টোবরে জম্মু-কাশ্মীরকে একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করা হয়। ওই রাজ্য থেকে ক্যাডারের কোটার অবলুপ্তি ঘটানো হয়। আমলাদের প্রতিবাদ সত্ত্বেও জম্মু-কাশ্মীর উপত্যকাকে ভারতের অরুণাচল প্রদেশ-গোয়া-মিজোরাম এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল (AGMUT)-এর ক্যাডারের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়।
নতুন আবাসিক আইন
এপ্রিল ২০২০-তে কেন্দ্রীয় সরকার জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠন (রাজ্য আইনের অভিযোজন) আইন, ২০২০-এর মাধ্যমে জম্মু-কাশ্মীরের জন্য আবাসিক আইন চালু করে। পূর্ববর্তী রাজ্যের জন্য বাসস্থান এবং নিয়োগের নিয়মগুলোকে যা নতুন সংজ্ঞা দিয়েছে। নতুন আইন অনুযায়ী, কোনও ব্যক্তি জম্মু-কাশ্মীরে ১৫ বছর ধরে বসবাস করলে বা সাত বছর ধরে লেখাপড়া করলে বা উপত্যকার কোনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দশম অথবা দ্বাদশ শ্রেণিতে পরীক্ষা দিলেই আবাসিক শংসাপত্রের জন্য যোগ্য।
রাজনীতিবিদদের আশঙ্কা
পূর্বে জারি করা জম্মু ও কাশ্মীরের স্থায়ী বাসিন্দার শংসাপত্রের বদলে এই নতুন আইন চালু করা হয়েছে। নতুন আইনের জেরে স্থানীয় রাজনীতিবিদরা উপত্যকার জনবৈচিত্র্য বদলে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। কিন্তু, এই নিয়ম পশ্চিম পাকিস্তানের ৩.৬ লক্ষ উদ্বাস্তু, প্রায় ৪,০০০ বাল্মীকি গোষ্ঠীর সদস্য এবং দীর্ঘ সময় ধরে জম্মু-কাশ্মীরে বসবাসকারী প্রায় ২৪,০০০ পরিযায়ী শ্রমিকের কাছে আশীর্বাদ হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন- বিরাট চমক বিজেপির! ছত্তিশগড়ের কুর্সিতে নতুন মুখ, জানেন কে?
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সংশোধনী
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, ২০২০ সালের অক্টোবরে ভূমি আইনের সংশোধন করেছে। যার মাধ্যমে উপত্যকার পুরোনো ১৪টি আইনে সংশোধনী এনেছে। আরও ১২টি আইন বাতিল করেছে। জম্মু ও কাশ্মীর ল্যান্ডস অ্যাক্ট (১৯৩৮), বিগ ল্যান্ডস এস্টেটস অ্যাবলিশন অ্যাক্ট (১৯৫০) স্থায়ী বাসিন্দাদের জমির অধিকারের সুরক্ষা দিয়েছিল। তার মধ্যে ল্যান্ডস অ্যাক্টের ধারা ৪ বলেছিল যে, 'রাজ্যের প্রয়োজন ছাড়া কোনও ব্যক্তির জমি হস্তান্তর নিষিদ্ধ।' একইভাবে, বিগ ল্যান্ডস এস্টেটস অ্যাবলিশন অ্যাক্টের ধারা ২০এ বলেছিল যে, 'রাজ্যের উন্নয়নের বিষয় ছাড়া কোনও জমি কোনও ব্যক্তির কাছে হস্তান্তর করা যাবে না।'