একসময় ইউক্রেনের লোককথা গিলত বাংলার কমবয়সিরা, উল্টিয়ে দেখত বেশি বয়সিরাও, এখন শুধু 'উপ'-টা বাদ গিয়েছে। ইউক্রেনের লোককথার সংকলন করেছিলেন ভ্লাদিমির বইকো। আর এখনকার ইউক্রেন কথা-র মূল লেখক ভ্লাদিমির পুতিন। পুতিন যদি লেখক হন, তা হলে প্রকাশক অবশ্যই ভলোদিমির জেলেনস্কি (প্রকাশক ও লেখকের মধ্যে তো আজন্ম বৈরিতা, লেখক বলেন আমায় পয়সা দিচ্ছে কম, প্রকাশক বলেন আমি না ছাপলে তো লেখকই হত না)। এই যুদ্ধের বাজারে সকলেই জানেন বোধ হয় পুতিনের এক নম্বর টার্গেট জেলেনস্কি, তাঁকে জেলে না পোরা কিংবা নিকেশ না করা পর্যন্ত রুশ প্রেসিডেন্টের নাওয়াখাওয়ার টাইম নেই। কিন্তু ইউক্রেনে পুতিনের টার্গেট নম্বর-টু কে? সেটি হলেন জেলেনস্কির স্ত্রী, অতি সুন্দরী, ওলেনা জেলেনস্কা। রাশিয়ার এক নম্বর টার্গেট থুড়ি প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি নিজেই বলেছিলেন এ কথা, তবে স্ত্রী নন শুধু, পুতিনের লক্ষ্য-দুইয়ের তালিকায় রয়েছে জেলেনস্কি-জেলেনস্কা-র দুই সন্তান আলেকসান্দ্রা এবং কিরিল।
ইউক্রেনের ফার্স্ট লেডি রূপসি জেলেনস্কা সম্পর্কে একটু জেনে নেই আসুন, এই যুদ্ধ-পরিসরে!
ওলেনা জেলেনস্কা। একজন স্ক্রিপ্টরাইটার। এখন অবশ্য তাঁর জীবনের স্ক্রিপ্টটা নিজের হাত থেকে বেরিয়ে গিয়েছে অনেকটা। কিন্তু যেটুকু হাতে রয়েছে, তাতেই তাঁর কলমের শক্তির প্রমাণ দিচ্ছেন। তিনি স্বামীর পাশে দাঁত কামড়ে রয়েছেন। বলা যায়, ৪৪ বছরের এই মহিলা যাঁর গলায় হার-মানা-হার পরিয়েছিলেন, সেই স্বামীর জন্য তিনি হার-না-মানা। ফলে সারা পৃথিবীর চওড়া আলো পড়েছে তার উপর। ইউক্রেনের ফার্স্ট লেডির জন্য কোনও আলাদা অফিস ছিল না, কিন্তু যুদ্ধের ডাঙ্কা বাজার পর, সেইটিই হয়েছে প্রায়। সামনে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলেনস্কা আরও নানা ভাবে। স্বামীর জয় চাইছেন কর্মে ও প্রাণে।
ওলেনার প্রথম জীবন
২০১৯-এর এপ্রিল, জেলেনস্কি একজন কৌতুকাভিনেতা হিসেবে খ্যাতিমান, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জিতে গেলেন, তখন তাঁর স্ত্রী জেলেনস্কা সম্পর্কে বিনোদুনিয়ার বাইরে ক'জন আর জানতেন! 'আমি মানুষের সামনে নয়, নেপথ্য-চারণ পছন্দ করি। আমার স্বামী সামনের দিকে থাকেন, আমি তাঁর ছায়া হয়ে থাকি স্বচ্ছন্দে। পার্টির জন্য জীবন নই আমি। আমি জোক বলতে পছন্দ করি না।' ভোগ ম্যাগাজিনকে (Vogue, Ukraine) একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন জেলেনস্কা।
জেলেনস্কা ওলেনা কিয়াশকো জন্মেছেন মধ্য ইউক্রেনের শিল্প শহর ক্রিভি রিহ-তে। এখানেই প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বড় হয়েছেন, প্রাধান ভাষা যেখানে রুশ। দু'জন ক্রিভি রিহ ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে পড়াশুনো করেছেন। স্বাভাবিক ভাবেই কমন বন্ধু ছিল এক গোছা। জেলেনস্কা স্থাপত্য নিয়ে পড়াশুনো করেন, আর জেলেনস্কি পড়েছেন আইন নিয়ে। হ্যাঁ, এখানেই দোঁহের প্রথম দেখা হয়েছিল। তার পরেরটা ইতিহাস, যা সামান্য একটু মাত্র বললাম। আর যে নয়া ইতিহাসের রচনা হতে চলেছে আগামীতে, সেই বিচারে এটা ট্রেলার মাত্র।
Read story in English