চিনে করোনা সবেমাত্র নতুন রেকর্ড গড়েছে। প্রথমবারের জন্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সংক্রমণ ৩০ হাজার অতিক্রম করেছে। চিনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন বৃহস্পতিবার সকালে জানিয়েছে, ৩১,৪৪৪টি নতুন সংক্রমণের খোঁজ মিলেছে। যা এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে তৈরি হওয়া আগের রেকর্ডের চেয়ে বেশি।
সংক্রমণ বাড়ছে
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ফ্রান্সেও এই মুহূর্তে করোনার দৈনিক হার অত্যন্ত বেশি। কিছু দিন আগে পর্যন্ত, সংখ্যাটা জার্মানিতে ৩০ হাজারের বেশি ছাড়িয়েছিল। তবে চিনের পরিস্থিতিটা আলাদা। কারণ, সেখানে করোনা রুখতে নানা কঠোর নিয়ম চালু হয়েছিল। কিন্তু, সেগুলো যে কোনও কাজেই আসেনি, তা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত হয়েছে। মার্চ-এপ্রিলেই সংখ্যাটা ছিল দৈনিক ১,০০০-এর বেশি। মধ্যে পরিস্থিতি একটু আশাপ্রদ হওয়ায় চিন বিধি শিথিল করেছিল। বাইরের দেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের কোয়ারান্টাইনের মেয়াদ কমিয়ে পাঁচ দিন করেছিল। সংক্রমিত ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ পরিচিতকেই কেবল কোয়ারান্টাইনে রাখার নির্দেশ দিয়েছিল। আর, তারপরই জিনপিঙের দেশে ব্যাপকহারে বেড়ে গিয়েছে সংক্রমণ।
ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা
এই সংক্রমণ বৃদ্ধির পরে, হেনান প্রদেশের রাজধানী ঝেংঝুতে শুক্রবার শুরু হয় পাঁচ দিনের লকডাউন। গত কয়েকদিন ধরে সেখানে অ্যাপল কারখানার শ্রমিকরা বড় আকারের বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। বিক্ষোভের অন্যতম কারণ সরকারের কোভিড নীতি।
শূন্য কোভিড-নীতি
বেশিরভাগ দেশই স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েও সংক্রমণকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে না-দেওয়ার দিকে মনোনিবেশ করেছে। চিন কিন্তু শুরু থেকেই শূন্য-কোভিড নীতি নিয়েছে। প্রাদুর্ভাবের প্রতিটি ঘটনা তো বটেই, এমনকী উপসর্গহীনদেরও বাধ্যতামূলকভাবে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। অল্প প্রাদুর্ভাবেই কঠোর লকডাউন জারি করেছিল। সন্দেহজনক কাউকে পেলেই তাঁর সমস্ত পরিচিতিদের কোয়ারান্টাইনে রাখা হয়েছে। আর্থিক রাজধানী সাংহাইয়ে ২ কোটি ৫০ লক্ষেরও বেশি লোকের বাস। গোটা মার্চ মাস তাঁদের কার্যত তালাবন্ধ হয়ে কাটাতে হয়েছে।
আরও পড়ুন- ভোট আসে ভোট যায়, গুজরাটের মুসলিমদের নির্বাচন নিয়ে আগ্রহই নেই
চিনের হাল
চিনের দাবি, ব্যাপারগুলো কষ্টকর হলেও তা কাজে দিয়েছিল। আওয়ার ওয়ার্ল্ড ইনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে অতিমারী শুরুর পর থেকে এখনও পর্যন্ত চিনে মাত্র ১০ লক্ষ ৩৮ হাজার বাসিন্দা সংক্রমিত হয়েছেন। সেই তুলনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংখ্যাটা বেশ বেশি। কিন্তু, চিনের এই সফলতাই এখন দুর্বলতায় পরিণত হয়েছে। চিনের জনসংখ্যার বিরাট অংশ করোনায় আক্রান্ত হননি। তাই তাঁদের মধ্যে এই ভাইরাস প্রতিরোধের ইমিউনিটি তৈরি হয়নি। আর, যে ভ্যাকসিনগুলো চিনের বাসিন্দাদের দেওয়া হয়েছে, সেই ভ্যাকসিনগুলোও এই কারণে ওমিক্রন রুখতে পারছে না।
Read full story in English