আন্টার্কটিকা ছাড়া সব মহাদেশে নভেল করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়লেও প্রশান্ত মহাসাগরের বেশকিছু দ্বীপ রাষ্ট্রে এখনও অতিমারীর ছায়া পড়ে না।
২ এপ্রিলে প্রকাশিত বিবিসি-র এক রিপোর্ট অনুসারে কিরিবিতি, মারশাল দ্বীপপুঞ্জ, মাইক্রোনেশিয়া, নাউরু, পলাউ, সামোয়া, সাও টোম ও প্রিন্সেপ, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, টোঙ্গা, তুভালু, ভানুয়াটুতে কোভিড ১৯ সংক্রমণ পরিলক্ষিত হয়নি।
আল জাজিরার রিপোর্ট অনুসারে ১ এপ্রিল পর্যন্ত বৃহত্তর প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় ভাইরাস সংক্রমণের পরিমাণ ছিল কম, ২২টি দ্বীপরাষ্ট্র ও অঞ্চলে সংক্রমিতের সংখ্যা মাত্র ১১৯।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলি কীভাবে বাইরে থাকতে সক্ষম হল?
নভেল করোনাভাইরাসের প্রকোপ চিনে দেখা দেওয়া মাত্র বেশ কিছু প্রশান্ত মহাসাগরীয় রাষ্ট্র যাতে তাদের এলাকায় এ ভাইরাস না পৌঁছয়, সে কারণে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছিল, ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একে অতিমারী বলে ঘোষণার অনেক আগেই।
মাইক্রোনেশিয়া জানুয়ারি মাসেই কোভিড ১৯ সংক্রমিত দেশ থেকে ভ্রমণে আসা নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল, পাপুয়া নিউ গিনি এশিয়া থেকে সমস্ত বিমান আসা বন্ধ করে গেয়। ইন্দোনেশিয়া সংলগ্ন সীমান্তও বন্ধ করে দেয় তারা।
দ্য ইকোনমিস্ট পত্রিকার প্রতিবেদন অনুসারে, কুক আইল্যান্ড, ফিজি, ফ্রেঞ্চ পলিনেশিয়া, নিউ ক্যালেডোনিয়া, পাপুয়া নিউগিনি, টোঙ্গা এবং ভানুয়াটুতে ক্রুজও নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়।
১ মার্চ, সামোয়ায় যেসব পর্যটকরা দেশে প্রবেশ করতে ইচ্ছুক, তাঁদের মেডিক্যাল টেস্ট বাধ্যতামূলক বলে ঘোষণা করে। ৯ মার্চ মারশাল আইল্যান্ড সমস্ত আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
মার্চের পরেরদিকে জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি হয় নাউরু, কিরিবাতি, টোঙ্গা ও ভানুয়াটু-তে।
করোনাভাইরাস- এ সত্ত্বেও প্রশান্ত মহাসাগরের কিছু দেশের বিপদ কেন এখনও কাটেনি
এই দেশগুলির ভৌগোলিক অবস্থান তাদের সুরক্ষা দিলেও, দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন বলছে তারা অনির্দিষ্টকাল ধরে এরকমটা পেরে যাবে এ কথা কল্পনা করা কষ্টকর।
এর মধ্যে বেশ কয়েকটি দেশ ঘনবসতিপূর্ণ, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা তাদের পক্ষে দুঃসাধ্য। এনেক দেশেরই স্বাস্থ্য ব্যবস্থা খুব ভাল নয়, ফলে একবার গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে গেলে তা সামলানো তাদের পক্ষে চাপের হবে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলিতে ডায়াবেটিস ও হৃদরোগীর সংখ্যাও বেশি, কোভিড ১৯ এ ধরনের রোগীদের সবার আগে আক্রমণ করে, ফলে সেটা আরেকটা বিপদের দিক।
দুনিয়া ব্যাপী অতিমারীর ফলে উদ্ভূত আর্থিক ক্ষতি এই অঞ্চলের পক্ষে আরও বিপজ্জনক কারণ এখানকার প্রায় সব দেশই আমদানির উপর নির্ভরশীল এবং এদের মূল কর্মসংস্থানই হল পর্যটন। জোগান শৃ্ঙ্খল ইতিমধ্যেই ভেঙে পড়েছে, এর মধ্যে পর্যটকরা আসা বন্ধ করে দিলে এই দেশগুলি আর্থিক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন