Advertisment

ভারত বনাম পাকিস্তানের এফ ১৬: তিন তথ্য যা জেনে রাখা জরুরি

১৯৮০ সালে পাকিস্তানের কাছে যখন এফ ১৬ বিক্রি করা হয়, তখন নিষেধাজ্ঞার পরিমাণ ছিল স্বল্পই। কিন্ত টার্কিতে কয়েক বছর আগে যখন ওই বিমানগুলির উন্নীতকরণের সময়ে নতুন করে বেশ কিছু শর্তাবলী আরোপ করা হয়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Pakistan F 16 three things you should know

২৮ ফেব্রুয়ারি যৌথ সামরিক বাহিনী সাংবাদিক সম্মেলনে মিসাইলে ভগ্নাবশেষ দেখায়, যে মিসাইল কেবল এফ ১৬ বিমানের মাধ্যমেই নিক্ষেপ করা সম্ভব

বালাকোটের জৈশ শিবিরে ভারতীয় বিমানবাহিনীর হামলার পর গত ২৭ অক্টোবর নৌশেরা সেক্টরে, নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর কী ঘটেছিল- তা নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। এই বিতর্ক থেকে মূলত তিনটি বিষয়ে।

Advertisment

এক- ওই দিন পাকিস্তান বিমানবাহিনী এফ ১৬ যুদ্ধ বিমান ব্যবহার করেছিল কিনা, দ্বিতীয়, তা ব্যবহার করা হয়ে থাকলে আমেরিকার কাছ থেকে এফ ১৬ কেনার সময়ের বিক্রয়শর্ত লঙ্ঘিত হয়েছে কিনা, এবং তৃতীয়ত, পাকিস্তান ওইদিনের আকাশযুদ্ধে এফ ১৬ বিমান হারিয়েছে কি না।

এফ ১৬-র ব্যবহার

পাকিস্তানের তরফ থেকে প্রথমে সেদিনের বিমান যুদ্ধে এফ ১৬ বিমান ব্যবহারের কথা অস্বীকার করা হয়েছিল। কিন্তু এখন এ কথা প্রমাণিত যে সেদিন সকালে আমেরিকার তৈরি এই যুদ্ধবিমান ব্যবহার করেছিল পাক বিমানবাহিনী। ভারতের তরফ থেকে মিসাইলের ধ্বংসাবশেষের যে ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। এ ধরনের মিসাইল এফ ১৬ বিমান থেকেই নিক্ষেপ করা হয়ে থাকে। এবং পাকিস্তানের অস্ত্রভাণ্ডারের মধ্যে কেবলমাত্র এফ ১৬ বিমানই রয়েছে, যা ওই ধরনের মিসাইল নিক্ষেপে সক্ষম। প্রসঙ্গত এ মিসাইল পাকিস্তানকে ২০১১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই মিসাইল সরবরাহ করে।

বিক্রয় চুক্তি 

পাকিস্তানের তরফে আক্রমণের সময়কালে এফ ১৬ বিমানের ব্যবহার নিষিদ্ধ, কারণ আমেরিকা পাকিস্তাকে এ বিমান বিক্রির সময়ে নির্দিষ্ট কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। এই শর্তাবলী এন্ড ইউজার মনিটরিং এগ্রিমেন্ট (EUMA) বা এক্সটেন্ডেড এন্ড ইউজার মনিটরিং এগ্রিমেন্ট (EEUMA)-র অন্তর্ভুক্ত। এই চুক্তি বিমান বিক্রির সময়ে স্বাক্ষরিত হয়, এবং এই চুক্তির শর্তাবলী গোপনীয় হিসেবে গণ্য।

১৯৮০ সালে পাকিস্তানের কাছে যখন এফ ১৬ বিক্রি করা হয়, তখন নিষেধাজ্ঞার পরিমাণ ছিল স্বল্পই। কিন্ত টার্কিতে কয়েক বছর আগে যখন ওই বিমানগুলির উন্নীতকরণের সময়ে নতুন করে বেশ কিছু শর্তাবলী আরোপ করা হয়। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বিশ্বজোড়া যুদ্ধের সময়ে এই বিমানগুলি পাকিস্তানকে দেওয়া হয়েছিল, এবং এর দাম চোকানো হয়েছিল মার্কিন টাকায়। এর বিক্রয় শর্ত নিয়ে মার্কিন কংগ্রেসে প্রচুর বিতর্ক হয়েছে।

মার্কিন সূত্র বলছে, বিক্রয়শর্তে বলা ছিল এফ ১৬ বিমান কেবলমাত্র আত্মরক্ষার্থেই ব্যবহার করা যাবে। তবে স্পষ্ট কোনও ব্যাখ্যা ছাড়া এ ধরনের কথা ধোঁয়া ধোঁয়া এবং যে কেউ এর যে কোনও অর্থ তৈরি করতে পারে। পাকিস্তান বলতেই পারে যে বালাকোটের বিমান হামলার পর তারা আত্মরক্ষার্থে এফ ১৬ ব্যবহার করেছিল, অথবা রাজৌরির ঘটনার ক্ষেত্রে এফ ১৬ ব্যবহার করা হয়েছিল কেবলমাত্র আত্মরক্ষার্থেই। এরকম দাবি উঠলে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূল ব্যবস্থা গ্রহণ আমেরিকার পক্ষে কষ্টকরই হয়ে পড়বে।

এফ ১৬ কি সত্যিই ধ্বংস হয়েছে

শেষ প্রশ্ন হল ভারতীয় বায়ুসেনার দাবি নিয়ে। উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন কি সত্যিই এফ ১৬কে গুলি করে নামিয়েছিলেন! ভারতের এ হেন দাবির ভিত্তি পরোক্ষ প্রমাণাদি, যার মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানি সরকারি বিবৃতি, বেশ কিছু ইলেক্ট্রনিক প্রমাণও। চূড়ান্ত প্রমাণ অবশ্য উইং কম্যান্ডার অভিনন্দনের মিগ ২১ বিমানের সঙ্গেই ধ্বংস হয়ে গেছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পত্রিকা ফরেন পলিসিতে শুক্রবার দাবি করা হয়েছে আমেরিকা পাকিস্তান বিমানবাহিনীর এফ ১৬ বিমানের সংখ্যা গণনা করে দেখেছে যে তাদের অস্ত্রভাণ্ডারে সব এফ ১৬ বিমানই রয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, পাকিস্তান ২৭ ফেব্রুয়ারি ভারতের বিরুদ্ধে কোনও এফ ১৬ বিমান ব্যবহার করেনি এবং এফ ১৬ বিমানের বিক্রয় চুক্তিও ভঙ্গ করেনি।

Read the Full Story in English

pakistan
Advertisment