Advertisment

বিশ্লেষণ: পাকিস্তানি মডেল কান্দিল বালোচের হত্যা ও সাজা

২০১৬ সালের ১৫ জুলাই কান্দিল বালোচকে নিজের পিতৃগৃহে ওষুধ খাইয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে তাঁর ভাই মহম্মদ আজিম। বেশ কয়েকদিন পর পুলিশ আজিমকে গ্রেফতার করে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Kandil Baloch

ফাইল ছবি

শুক্রবার পাকিস্তানের মুলতানের এক আদালত পাকিস্তানের সোশাল মিডিয়া সেনসেশন কান্দিল বালোচকে হত্যার দায়ে তার ভাইকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে। তিন বছর আগে এই হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে নিয়েছিল কান্দিল বালোচের ভাই। ২০১৬ সালের কুখ্যাত অনার কিলিং মামলা নিয়ে পাকিস্তানে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছিল, যার জেরে এ ধরনের খুনের ঘটনায় কঠোরতর সাজার সংস্থান করে পাকিস্তান।

Advertisment

পাকিস্তানের সোশাল মিডিয়া তারকা

গ্রামীণ পাকিস্তানের এক গরিব পরিবারে কান্দিলের জন্ম। সে সময়ে তাঁর নাম ছিল ফৌজিয়া আজিম। অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে যায় তাঁর। ফৌজিয়ার স্বামী ছিলেন অত্যাচারী। স্বামীর ঘর থেকে পালিয়ে কান্দিল বালোচ সোশাল মিডিয়া আইকন হিসেবে নিজের কেরিয়ার শুরু করেন কান্দিল বালোচ।

সোশাল মিডিয়ায় খ্যাতি অর্জন করার পর, কান্দিল বালোচ মডেলিং কেরিয়ার শুরু করেন এবং পাকিস্তানে বেশ কয়েকবার কিম কারদাশিয়ার ছবিতে ডাবিংও করেন। বেশ কয়েকটি মিউজিক ভিডিওতেও দেখা গিয়েছিল তাঁকে। সোশাল মিডিয়ায় তািনি প্রায়ই এমন সব ছবি পোস্ট করতেন যা রক্ষণশীল পাক সমাজ ভাল চোখে নেয়নি। পাকিস্তানের গোঁড়া মনোভাবের বিরুদ্ধে বহুবার মুখ খুলেছিলেন তিনি এবং প্রায়শই তাঁকে নারীবিদ্বেষীদের রোষের মুখে পড়তে হত।

ভয়ানক এক হত্যাকাণ্ড

২০১৬ সালের ১৫ জুলাই কান্দিল বালোচকে নিজের পিতৃগৃহে ওষুধ খাইয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে তাঁর ভাই মহম্মদ আজিম। বেশ কয়েকদিন পর পুলিশ আজিমকে গ্রেফতার করে। সে সময়ে আজিম সংবাদমাধ্যমের কাছে বলে সোশাল মিডিয়ায় কাজকর্মের জন্য কান্দিল বালোচকে সে খুন করেছে। সোশাল মিডিয়ায় বোনের কাজকর্ম পরিবারের সম্মানহানি ঘটিয়েছে বলে জানিয়ে আজিম বলে কৃতকর্মের জন্য তার কোনও অনুশোচনা নেই।

হত্যার আগে পাকিস্তানের মৌলবী মুফতি আবদুল কাভির একটি ছবি পোস্ট করেছিলেন কান্দিল বালোচ, যে কারণে নিজের অনুগামীদের তোপের মুখে পড়েন কাভি। বালোচের হত্যায় ওই মৌলবীর হাত ছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল।

বিচার ও শাস্তি

এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে পাকিস্তানে ব্যাপক তোলপাড় হয়। ঘটনার অব্যবহিত পরেই ২০১৬ সালে অনার কিলিংয়ের ঘটনায় অন্তত ২৫ বছর কারাদণ্ডের আইনি বিধি পাশ হয় পাকিস্তানে।

হত্যাকাণ্ডের পরেই বালোচের বাবা-মা আজিমকে অস্বীকার করলেও, মামলা চলাকালীন নিজেদের ছেলের কাজে সমর্থন ব্যক্ত করেন। এমনকি আদালতে তাঁরা এ হত্যাকাণ্ডের দায় নিজেদের কাঁধে নিয়ে আজিমকে মুক্তি দেবার আবেদন জানান। বাবা-মায়ের কথা অবশ্য আদালত কানে তোলেনি।

আদালত তাদের রায়ে আজিমের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের কথা ঘোষণা করেছে। কাভি সহ অন্য ৬জনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

pakistan
Advertisment