মঙ্গলবার সংসদের স্থায়ী কমিটির পুনর্গঠন সরকার এবং বিরোধীদের সম্পর্ককে আরও খারাপ করতে চলেছে। ঘোষিত ২২টি কমিটির মধ্যে মাত্র একটিতে কংগ্রেসের প্রতিনিধি সভাপতি পদে রয়েছেন। দ্বিতীয় বৃহত্তম বিরোধী দল তৃণমূল কংগ্রেসের সেটাও নেই। স্বরাষ্ট্র, অর্থ, তথ্যপ্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা এবং বিদেশ বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ সব কমিটির সভাপতিত্ব এখন ক্ষমতাসীন বিজেপির হাতে।
সংসদীয় কমিটি কী?
সংসদের উভয়কক্ষে একটি বিল উত্থাপিত হলে শুরু হয় আইনি কার্যকলাপ। কিন্তু আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়া প্রায়শই জটিল হয়ে পড়ে। বিস্তারিত আলোচনার জন্য সংসদের সময় সীমিত। এছাড়াও রাজনৈতিক মেরুকরণ, ক্রমবর্ধমান বিরোধিতা এবং বিতর্কের ফলে আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে সংসদীয় কমিটির গুরুত্ব ক্রমশ বাড়ছে। সংসদীয় কমিটি হল সংসদ সদস্যদের একটি প্যানেল। এই প্যানেল বা কমিটি সংসদ দ্বারা নিযুক্ত বা নির্বাচিত হয়।
কমিটি কীভাবে কাজ করে?
সদস্যরা স্পিকারের দ্বারা মনোনীত হন এবং স্পিকারের নির্দেশে কাজ করেন। সংসদীয় কমিটি তার রিপোর্ট সংসদ বা স্পিকারের কাছে পেশ করে। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের অনুকরণে ১০৫ নম্বর ধারায় এই সংসদীয় কমিটি তৈরি হয়েছে। এই ধারা সংসদ সদস্যদের বিশেষাধিকার দিয়েছে। পাশাপাশি, ১১৮ নম্বর ধারা সংসদকে সংসদের কার্যপ্রণালী চালানো এবং ব্যবসা পরিচালনার জন্য আইন প্রণয়নের ক্ষমতা দিয়েছে।
সংসদের বিভিন্ন কমিটি কী কী?
সংসদীয় কমিটিগুলোকে আর্থিক কমিটি, বিভাগীয়ভাবে সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি, অন্যান্য সংসদীয় স্থায়ী কমিটি এবং অ্যাডহক কমিটিতে ভাগ করা যেতে পারে। আর্থিক কমিটিগুলোর মধ্যে রয়েছে এস্টিমেট কমিটি, পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি এবং কমিটি অন পাবলিক আন্ডারটেকিং। এই কমিটিগুলি ১৯৫০ সালে গঠিত হয়েছিল।
সংখ্যা বেড়েছে কমিটির
১৯৯৩ সালে শিবরাজ পাতিল যখন লোকসভার স্পিকার ছিলেন, বাজেট প্রস্তাবনা এবং গুরুত্বপূর্ণ সরকারি নীতিগুলো পরীক্ষা করার জন্য ১৭টি বিভাগীয় স্থায়ী কমিটি গঠিত হয়েছিল। যার উদ্দেশ্য ছিল, সংসদীয় যাচাই-বাছাই বৃদ্ধি করা, গুরুত্বপূর্ণ আইন পরীক্ষা করার জন্য সংসদের সদস্যদের আরও সময় দেওয়া এবং কমিটির ভূমিকা বৃদ্ধি। কমিটির সংখ্যা পরবর্তীকালে বেড়ে হয় ১৭। এই কমিটির প্রতিটিতে ৩১ জন সদস্য রয়েছেন। যার মধ্যে ২১ জন লোকসভার এবং ১০ জন রাজ্যসভার।
আরও পড়ুন- রাষ্ট্রপতিকে কটাক্ষ করে নিজেই সমালোচিত কংগ্রেসের উদিত রাজ, জুটল মহিলা কমিশনের নোটিস
অ্যাডহক কমিটি
অ্যাডহক কমিটি একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে নিয়োগ করা হয়। কমিটি তার কাজ শেষ করার পরে এবং কক্ষে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পরে কাজ বন্ধ করে দেয়। প্রধান দুটি অ্যাডহক কমিটি হল বিলের ওপর সিলেক্ট এবং জয়েন্ট কমিটি। এছাড়া রেলওয়ে কনভেনশন কমিটি, সংসদ ভবন কমপ্লেক্সে খাদ্য ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত কমিটির মত বিভিন্ন কমিটিও অ্যাডহক কমিটি বিভাগের আওতায় আসে।
কীভাবে গঠিত হয় কমিটি?
সংসদে কোনও বিষয় বা বিলের বিশদ যাচাই-বাছাইয়ের জন্য উভয়কক্ষের সদস্যদের নিয়ে একটি বিশেষ উদ্দেশ্যে যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) গঠন করা যেতে পারে। এছাড়াও, লোকসভা বা রাজ্যসভা- দুই কক্ষের যে কোনও একটি সেই কক্ষের সদস্যদের নিয়ে একটি নির্বাচন কমিটি গঠন করতে পারে। যৌথ সংসদীয় কমিটি এবং সিলেক্ট কমিটিগুলো সাধারণত ক্ষমতাসীন দলের সাংসদদের সভাপতিত্বে থাকে। তারা তাদের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পরে কমিটিগুলো ভেঙে দেওয়া হয়।
Read full story in English