ভারত-চিন সীমান্ত উত্তেজনার মধ্যেই ডোকলাম সংঘর্ষের পর চিন ভারত সম্পর্ক নিয়ে একটি সংসদীয় কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ পেল। সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন, বিদেশ মন্ত্রক ও প্রতিরক্ষ মন্ত্রকের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনার পর এই রিপোর্ট তৈরি হয়েছে। সীমান্ত ইস্যুতে এত বিস্তারিত রিপোর্ট আর নেই।
শশী তারুরের নেতৃত্বাধীন বিদেশমন্ত্রকের স্ট্যান্ডিং কমিটি ডোকলাম সহ চিন ভারত সম্পর্ক, সীমান্ত পরিস্থিতি ও আন্তর্জাতিক সংগঠনে সমন্বয় সম্পর্কিত রিপোর্টে সরকারকে চিন সম্পর্কে স্বাস্থ্যকর সংশয়ী হতে বলেছে। শুক্রবার এক টুইটে তারুর বলেছেন এই রিপোর্ট তৈরি হয়েছে কঠিন প্রশ্ন ও খোলামেলা মূল্যায়নের মাধ্যমে।
বিরোধীরা ডোকলাম সংঘর্ষ নিয়ে দুটি কক্ষেই প্রশ্ন তুললেও সংসদের কোথাও এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়নি। তবে তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ এক বিবৃতিতে বলেছিলেন এই সংঘর্ষ উদ্বেগের বিষয় হলেও সংশ্লিষ্ট দেশগুলির আলোচনার মাধ্যমে এর সমাধান হবে। ২০১৭ সালে ভারত-ভুটান-তিব্বতের দংশনে সংঘর্ষ হয়, যার শুরু ছিল ডোকলামে গণমুক্তি ফৌজ ঢুকে পড়া দিয়ে। পরে আলোচনার মাধ্যমে এর সমাধান হয়।
স্ট্যান্ডিং কমিটির এই রিপোর্ট একটি দ্বিদলীয় রিপোর্ট, কারণ এই কমিটিতে শাসক ও বিরোধী উভয় দলের সদস্যরাই ছিলেন। এরকম রিপোর্ট অতি বিরল কারণ এখানে প্রতিরক্ষা ও বিদেশ মন্ত্রকের সচিবেরা ভারত-চিন সীমান্ত সম্পর্কে সরকারের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন যার মধ্যে ডোকলাম এলাকায় চিনের সীমানা লঙ্ঘনের বিষয়টিও রয়েছে।
রিপোর্টে কী বলা হয়েছে
ডোকলাম নিয়ে আলোচনায় তৎকালীন বিদেশসচিব, বর্তমান বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর, তাঁর উত্তরসূরী বিজয় গোখেল এবং তৎকালীন প্রতিরক্ষা সচিব সঞ্জয় মিত্র প্যানেলের সামনে বক্তব্য পেশ করেন। কমিটি ডোকলাম অঞ্চলে চিনা উপস্থিতি নিয়ে বহু রিপোর্টের প্রক্ষিতে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও প্রতিরক্ষা সচিব কমিটির কাছে বলেন, গণমুক্তি ফৌজের বাহিনী নিজেদের এলাকাতেই রয়েছে এবং তাদের বিন্যাসে কোনও অস্বাভাবিকতা নেই।
তবে ওই রিপোর্টে সাংসদরা তাঁদের অসন্তোষ লিপিবদ্ধ করেছেন। বলা হয়েছে, সরকার প্রকৃত সংঘর্ষের জায়গায় চিনা কার্যকলাপের কথা স্পষ্টত অস্বীকার করলেও এ নিয়ে বিরোধী দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে যেখানে ডোকলাম এলাকায় এ ধরনের কার্যকলাপের কথা নিশ্চিত করে বলা হয়েছে। কমিটি আরও বলেছে, কিছু সময়ের জন্য ওরা ডোকলাম থেকে সেনা সরিয়ে নিলেও, চিনের কৌশলগত লক্ষ্যকে সামান্যভাবে নেওয়া ঠিক হবে না। সে কারণে কমিটি সরকারের কাছে অনুরোধ করছে যেন নজরদারি কমানো না হয়, তাতে ভবিষ্যতে অনভিপ্রেত ঘটনাবলী এড়ানো যাবে।
৩১ সদস্যের এই প্যানেলে ছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, বিজেপি নেতা বরুণ গান্ধী, স্বপন দাশগুপ্ত, বর্তমান বিদেশমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী ভি মুরলীধরন, এনসিপি নেত্রী সুপ্রিয়া সুলে, ডিএমকে-র এম কানিমোঝি, এবং সিপিএমের মহম্মদ সেলিম।