গত সপ্তাহে বেলজিয়ামের স্বাস্থ্য প্রশাসন জানিয়েছে একটি পোষা বিড়াল তার মালিকের থেকে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে। সংবাদ সংস্থা এএফপি এ খবর প্রকাশ করেছে।
এর আগে হংকংয়ে দুটি কুকুর কোভিড ১৯ রোগে সংক্রমিত হয়েছিল। সংক্রমিত মানুষদের সংস্পর্শে আসা ১৭টি কুকুর ও আটটি বিড়ালকে পরীক্ষা করবার পর এই ফল ধরা পড়ে। বেলজিয়ামের খাদ্য নিরাপত্তা সংস্থা বলেছে হংকংয়ের কুকুরদের ক্ষেত্রে কোনও উপসর্গ দেখা গেয়নি, তবে বেলজিয়ামের বিড়ালের ক্ষেত্রে শ্বাসের সমস্যা ও হজমের সমস্যা দেখা গিয়েছিল।
পোষ্যদের কি করোনা সংক্রমণ হতে পারে?
করোনাভাইরাস একটি নির্দিষ্ট প্রজাতির ভাইরাস। মানুষ ছাড়াও বিভিন্ন স্তন্যপায়ী প্রাণী, যেমন শূকর, গবাদি পশু, কুকুর, বিড়াল, উট এবং কিছু পাখিরাও এতে সংক্রমিত হতে পারে।
অন্য করোনাভাইরাসের মত নভেল করোনাভাইরাসও পশু থেকেই মানুষে সংক্রমিত হয়েছে, যদিও এই নতুন ভাইরাসের মূল উৎস এখনও অজানা।
কিছু করোনাভাইরাস কুকুর ও বিড়ালকে সংক্রমিত করে, কিন্তু মানবদেহে সংক্রমণ ঘটায় না। মার্কিন সংস্থা সিডিসি-র মতে এখনও পর্যন্ত কোনও পোষ্য প্রাণী সংক্রমণ ঘটায়নি, এবং কোন কোন ধরনের প্রাণী কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত হতে পারে তা নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন।
আমেরিকান ভেটেরিনারি মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, “হংকংয়ের দুটি কুকুর এবং বেলজিয়ামের একটি বিড়ালের সার্স কোভ ২ সংক্রমণের খবর পাওয়া গিয়েছে। সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞরা এবং গৃহপালিত পশু স্বাস্থ্য সংগঠকরা বলছেন, কোভিড ১৯ সংক্রমণ পোষ্য প্রাণীদের মাধ্যমে অন্য পশু বা মানুষের মধ্যে ছড়াবার কোনও প্রমাণ এখনও অবধি নেই।”
কী ধরনের প্রতিষেধকের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে?
কোভিড ১৯ যাঁদের হয়েছে, তাঁদের পশুর থেকে আলাদা থাকতে বলছে মার্কিন সংস্থা সিডিসি এবং এভিএমএ।
এভিএমএ বলছে, যাঁরা সংক্রমিত নন, তাঁরা পশুদের সঙ্গে স্বাভাবিক দৈনন্দিন ব্যবহার করতে পারেন, হাঁটতে নিয়ে যেতে পারেন, খাবার খাওয়াতে পারেন, খেলা করতে পারেন। তবে সুস্বাস্থ্যের নিয়ম বজায় রাখতে পোষ্যের সংস্পর্শে যাবার আগে ও পরে হাত ধুতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
সংবাদ সংস্থা এএফপি-র প্রতিবেদন অনুযায়ী হাত ধোওয়া ছাড়াও বেলজিয়ামের কর্তৃপক্ষ কোনও পশুকে মুখ চাটতে দিতে বারণ করেছে। এতে পশুতে সংক্রমণ ছড়াবে না, এবং পশু মহামারীর কারণ হয়ে উঠবে না।
পোষ্যের মাধ্যমে কি মানুষের মধ্যে করোনা সংক্রমণ হতে পারে?
কোভিড ১৯ সংক্রমণের যা বিশ্বব্যাপী ইতিহাস বা এই ভাইরাসের জিনগত অভিযোজনের যা ইতিহাস, তা থেকে পোষ্য প্রাণী বা রাস্তার প্রাণীদের থেকে মানুষে এ রোগ ছড়াবার কোনও প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, “বর্তমানে কুকুর বিড়ালের মত পোষ্য প্রাণীদের থেকে নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে পোষ্যের সংস্পর্শে আসার পর সাবান ও জল দিয়ে হাত ধুয়ে নেওয়া ভাল, এতে অন্য ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ভয় কমে।”
এই ভাইরাস মানুষ থেকে পশুতে সংক্রমিত হতে পারে। বেলজিয়ান স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিক ডক্টর ইমানুয়েল আন্দ্রে সংবাদসংস্থা এএফপি-কে বলেছেন, “এরকম ভাবার কোনও কারণ নেই যে আমাদের সমাজে পশুরা মহামারী ঘটানোর কারণ হয়ে উঠতে পারে।”