অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (এডিআর) একটি পিটিশনে ভোটার ভেরিফাইয়েবল পেপার অডিট ট্রেইল (ভিভিপ্যাট) স্লিপের ১০০% গণনা চেয়েছে। জবাবে, নির্বাচন কমিশন (ইসি) ৪ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টকে বলেছে, প্রতিটি নির্বাচনে যদি ১০০% স্লিপ গণনা করা হয়, তাহলে দেশ ম্যানুয়াল ভোটের সময়ে ফিরে যাবে। যা, পরোক্ষভাবে কাগজের ব্যালট পুনরায় চালু করারই সমান হবে। এখনও পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন বিধানসভা কেন্দ্র বা বিভাগপ্রতি পাঁচটি এলোমেলোভাবে নির্বাচিত ভোটকেন্দ্রে সমস্ত ভিভিপ্যাট স্লিপের গণনা বাধ্যতামূলক করেছে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের এখনও কয়েক মাস বাকি। এডিআরের দায়ের করা পিটিশন এবং জবাবে নির্বাচন কমিশনের ৯৬২-পৃষ্ঠার হলফনামা, ভিভিপ্যাটের আসল উদ্দেশ্য কী, এই ইস্যুটিকে আবারও প্রাসঙ্গিক করে তুলেছে।
ভিভিপ্যাট কী?
যখন একটি ভোট দেওয়া হয়, তখন ভোটার ভেরিফাইয়েবল পেপার অডিট ট্রেইল (ভিভিপ্যাট) মেশিন, যা ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)-এর ব্যালট ইউনিট (বিইউ)-এর সঙ্গে যুক্ত থাকে, তাতে ভোটারের পছন্দ প্রকাশের জন্য কাগজের একটি স্লিপও থাকে। যা মেশিনে প্রিন্ট হয়। যদিও এটি কাচের পিছনে থাকে, ছাপানো স্লিপটি সাত সেকেন্ডের জন্য দৃশ্যমান হয় যা ভোটার দেখতে পান যে ভোটটি সঠিকভাবে রেকর্ড করা হয়েছে, তারপর স্লিপটি নীচে একটি বাক্সে পড়ে যায়। ভিভিপ্যাট মেশিনের ধারণাটি ২০১০ সালে প্রথমবার সামনে এসেছিল। সেই সময় নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইভিএম এবং ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ করার উপায় নিয়ে আলোচনা করার জন্য একটি বৈঠক ডেকেছিল। আলোচনার পর কমিশন বিষয়টি তাদের কারিগরি বিশেষজ্ঞ কমিটিকে জানিয়েছিল। তাদেরকেই ব্যাপারটা দেখার দায়িত্ব দিয়েছিল।
যে পদ্ধতিতে নকশা অনুমোদন
ভারত ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড (বিইএল) এবং ইলেকট্রনিক্স কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া (ইসিআইএল) - ইভিএম তৈরি করে এমন দুটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা একটি নমুনা তৈরি করেছিল। তারপরে ২০১১ সালের জুলাইয়ে লাদাখ, তিরুবনন্তপুরম, চেরাপুঞ্জি, পূর্ব দিল্লি এবং জয়সলমেরে ভিভিপ্যাটের পরীক্ষা হয়। নির্বাচন কমিশনের হলফনামা অনুযায়ী, অবশেষে প্রথমের সেই ভিভিপ্যাটের নকশাটি দীর্ঘ পরীক্ষার পরকরে এবং রাজনৈতিক দলগুলির মতামত নেওয়ার পরে, বিশেষজ্ঞ কমিটি ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ভিভিপ্যাটের মূল নকশার অনুমোদন করেছিল।
আরও পড়ুন- বড় আঘাত চিনের ওপর! বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে ইতালি, কারণটা কী?
শুরু হল ভিভিপ্যাট ব্যবহার
তার মধ্যেই ১৯৬১ সালের নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা ২০১৩ সালে সংশোধন করা হয়েছিল। যাতে একটি ড্রপ বক্স-সহ একটি প্রিন্টার ইভিএমের সাথে সংযুক্ত করা হয়েছিল। ২০১৩ সালে নাগাল্যান্ডের নকসেন বিধানসভা কেন্দ্রের ২১টি ভোটকেন্দ্রে প্রথমবারের মতো ভিভিপ্যাট ব্যবহৃত হয়েছিল। তারপরে নির্বাচন কমিশন পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন নির্বাচনে ভিভিপ্যাট চালুর সিদ্ধান্ত নেয়। ২০১৭ সালের জুন থেকে, নির্বাচনে ১০০% ভিভিপ্যাট ব্যবহার শুরু হয়। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনই ছিল প্রথম সাধারণ নির্বাচন, যেখানে ১০০% ইভিএমের সঙ্গে ভিভিপ্যাট যুক্ত করা হয়।