Physicist Peter Higgs passes away: মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) প্রয়াত হয়েছেন পদার্থবিদ পিটার হিগস। ১৯৬০ সালে তিনি 'ঈশ্বর কণা'র তত্ত্ব সামনে এনেছিলেন। তাঁর এই 'গড পার্টিকেল' বা 'ঈশ্বর কণা' বা 'হিগস বোসন' হল সেই কণা, যা অন্য প্রতিটি মৌলিক কণার ভরের জন্য দায়ী।
২০১২ সালে শনাক্ত হয়েছিল 'হিগস বোসন'। এই শনাক্ত করতে প্রায় ৫০ বছর সময় লেগেছিল। আর, প্রয়োজন হয়েছিল বিশ্বের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে জটিল গবেষণার মেশিনের। ইলেকট্রন, কোয়ার্ক, ফোটন বা নিউট্রিনোর মত 'হিগস বোসন' একটি কণা, যা অন্য প্রতিটি কণাকে ভর সরবরাহ করার জন্য বর্তমান দুনিয়ায় পরিচিত। ১৯৬০-এর দশকে এর অস্তিত্বের ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল। তার প্রায় ৫০ বছর পর, ২০১২ সালে ফ্রান্স এবং সুইজারল্যান্ডের সীমান্তে অবস্থিত লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডারের মাধ্যমে হওয়া বিস্তৃত পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এই কণার হদিশ মিলেছিল। তখনও পর্যন্ত লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে ব্যয়বহুল গবেষণার মেশিন।
'হিগস বোসন'-এর আবিষ্কার, পদার্থবিদ্যার স্ট্যান্ডার্ড মডেল হিসেবে পরিচিত। এই আবিষ্কার, ইলেকট্রন এবং প্রোটনের মতো সমস্ত মৌলিক কণা এবং ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিজম, মাধ্যাকর্ষণ বা পারমাণবিক শক্তির মতো শক্তিগুলোকে বর্ণনায় সাহায্য করেছে। পাশাপাশি, পদার্থের উপাদানের গঠনকে আরও স্পষ্ট করেছে। তবে, এখনও অনেক গবেষণাই বাকি। যেমন, ডার্ক ম্যাটার বা ডার্ক এনার্জির মতো এখনও অনেক বিষয় আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি। তবে, হিগস এই কণার ভবিষ্যদ্বাণী একা করেননি। আর, এই কণার নামকরণ তাঁর নামে করার পিছনে তিনিই একমাত্র ব্যক্তি নন। বেশ কয়েকজন গবেষক 'হিগস বোসন' কণার ধারণাটিতে অবদান রেখেছিলেন। তাঁদের মধ্যে একজন হলেন ফ্রাঙ্কোইস এঙ্গলার্ট। তিনি হিগসের সঙ্গেই ২০১৩ সালে পদার্থবিজ্ঞানের নোবেল পুরস্কার ভাগ করে নিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন- নির্বাচনী হলফনামায় তথ্য গোপন করলেই কি জয় বাতিল? পথ দেখাল সুপ্রিম কোর্ট
যাঁর নামে এই কণার নামকরণ করা হয়েছে, সেই পিটার হিগস ছিলেন একজন অত্যন্ত লাজুক ব্যক্তি। তিনি একজন আণবিক জীববিজ্ঞানী হিসেবে নিজের কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। হিগস বাইরের পরিবেশ থেকে বিচ্ছিন্নভাবে নিজের গবেষণার কাজ করা পছন্দ করতেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কখনও মোবাইল ফোন বা ইন্টারনেট ব্যবহার করেননি। এডিনবার্গে তাঁর বাড়ির ল্যান্ডলাইনই ছিল হিগসের কাছে পৌঁছনোর একমাত্র উপায়। ২০১২ সালের জুলাইয়ে সুইজারল্যান্ডের সার্ন (CERN)-এ 'হিগস বোসন' আবিষ্কারের ঘোষণার পর সাংবাদিকরা হিগসকে খুঁজে বেড়াচ্ছিলেন। আর, ৮২ বছরের হিগস বাড়ি ছেড়ে এডিনবার্গের রাস্তায় সাংবাদিকদের এড়াতে ঘুরে বেড়িয়েছিলেন। এমনকী, নোবেল কমিটিও তাঁকে খুঁজে পায়নি। শেষে এক প্রাক্তন প্রতিবেশী তাঁকে রাস্তায় হাঁটতে দেখে গাড়ি থামান আর নোবেল পাওয়ার খবরটি দিয়েছিলেন।