পাকিস্তানের ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে তা নিয়ে এখন ব্যস্ত রয়েছে ভারত সরকার। কিন্তু যে প্রশ্নটা এখন বারবার উঠে আসছে তা হল ভারতীয় বিমানবাহিনীর পাইলট উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে কীভাবে পাকিস্তানের হেফাজত থেকে নিরাপদে ফিরিয়ে আনা যায়, এবং কখন তা ঘটে উঠবে!
নয়া দিল্লি ইসলামাবাদকে ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে যে তাদের পাইলটের যেন কোনও রকম ক্ষতি না করা হয়। একই সঙ্গে পাক সেনাও ইঙ্গিত দিয়েছে যে তারা মানবিক আচরণ করবে।
আরও পড়ুন, পাকিস্তানের হেফাজতে ভারতের অফিসার: কী বলছে জেনিভা কনভেনশন
পাইলট যে নিরাপদে রয়েছেন, সে কথা ইসলামাবাদ নয়া দিল্লিকে জানানোর পরেই ওই পাইলটের চা খাওয়ার ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে।
সূত্র মারফৎ জানা গেছে, যুদ্ধবন্দিদের সঙ্গে কীরকম ব্যবহার করা হবে সম্পর্কে ১৯৪৯ সালের জেনিভা কনভেনশনে নির্দিষ্ট গাইডলাইন ছাড়াও পাকিস্তান সেনা এবং ভারতীয় সেনার মধ্যে এবং বিএসএফ ও পাকিস্তান রেঞ্জার্সের মধ্যে বেসরকারি ভাবে বোঝাপড়া রয়েছে।
সূত্রটি জানিয়েছে, বছরে বার তিনেক এ ধরনের প্রত্যর্পণ ঘটে থাকে। একবার পরিচিতি নিশ্চিত হয়ে গেলে কয়েক ঘণ্টা বা কয়েক দিনের মধ্যে ফেরতের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। সাধারণভাবে ডাক্তারি পরীক্ষা করে তাঁদের ফেরৎ পাঠানো হয়।
জেনিভা কনভেনশন অনুযায়ী এই প্রত্যর্পণের কোনও সময়সীমা নেই, এক্ষেত্রে পাইলটকে ফেরানোর ব্যাপারে ভারত ও পাকিস্তানকে সহমত হতে হবে।
সরকারিভাবে ভারতের তরফ থেকে পাক সরকারকে বলা হয়েছে যে তারা দ্রুত ও নিরাপদ প্রত্যর্পণ চায়। ১৯৯৯ সালে বিমানবাহিনীর পাইলট কে নচিকেতা পাক বাহিনীর হাতে ধরা পড়ার ৮ দিন পর তাঁকে ফেরত পাঠানো হয়।
সূত্র বলছে, যদি পাকিস্তান চায় তাহলে তারা অভিনন্দনকে এক সপ্তাহ থেকে থেকে ১০ দিনের মধ্যে ফেরৎ পাঠাতে পারে। অন্যদিকে তারা অভিনন্দনকে নিজেদের হেফাজতে রেখে দিতে পারে ভারতের পরবর্তী অ্যাকশনকে নিয়ন্ত্রণ করার ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহার করার জন্য।
সূত্র জানাচ্ছে, ভারতীয় বিমানবাহিনীর পাইলটকে যত দ্রুত সম্ভব যাতে ছেড়ে দেওয়া হয়, তা দেখার জন্য কূটনীতিকদের ওভারটাইম করতে বলা হয়েছে। আরেকটা কারণেও দ্রুত অভিনন্দনকে ছেড়ে দিতে পারে পাকিস্তান। ভারতের চেয়ে নৈতিকভাবে এগিয়ে থেকে সারা দুনিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করার আকাঙ্ক্ষা রয়েছে ইমরান খানের।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, পাক সেনার হেফাজতে অভিনন্দনের উপস্থিতি দু দেশের মধ্যে উত্তেজনার বাতাবরণ কমিয়ে আলোচনার পথ খুলে দিতে পারে।
সূত্রের বক্তব্য, দুটি দেশই তাদের লক্ষ্য পূরণ করেছে। ভারত বালাকোটে জঙ্গি ঘাঁটিতে আঘাত হেনেছে এবং পাকিস্তান প্রত্যাঘাত করেছে। এবার দু পক্ষই সম্ভবত তীব্রতা কমাতে চাইবে।
Read the Full Story in English