Advertisment

Explained: দারিদ্র কমানোর বিরাট দাবি প্রধানমন্ত্রীর, কতটা সত্যি?

উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তন করা হয়েছে মাপকাঠির।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
The new non-poor

শুধুমাত্র আর্থিক মাপকাঠির বিচারে তৈরি ভারতের শেষ সরকারি দারিদ্র্যের পরিসংখ্যান ২০১১ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। সেই তথ্য আপডেট করা হয়নি, কারণ সরকার ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষের খরচ বা ব্যয়কে সমীক্ষা থেকেই বাদ দিয়েছে। আগের সমীক্ষায় গ্রামীণ ভোগ্যসূচকে পতন ঘটেছে বলে দেখানো হয়েছে। পাশাপাশি, সর্বনিম্ন দারিদ্র্য বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও বোঝানো হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে বলেন যে তাঁর সরকারের প্রথম পাঁচ বছরের মেয়াদে, 'আমার ১৩.৫ কোটি গরিব ভাই ও বোনেরা দারিদ্র্যের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হয়ে নতুন মধ্যবিত্ত শ্রেণিতে প্রবেশ করেছে।' পরে বক্তৃতায় তিনি বলেন, 'যখন দারিদ্র্য হ্রাস পায়, মধ্যবিত্ত শ্রেণির শক্তি বহুগুণ বেড়ে যায়। আজ দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে আসা ১৩.৫ কোটি মানুষ মধ্যবিত্তে পরিণত হয়েছে। যখন দরিদ্রদের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ে, তখন মধ্যবিত্তের ব্যবসা করার ক্ষমতাও বাড়ে।'

Advertisment

নীতি আয়োগের দাবি

প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃত ১৩.৫ কোটি সংখ্যাটি দ্বিতীয় জাতীয় বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক প্রতিবেদনে প্রদর্শিত হয়েছে। এই দারিদ্র সূচক ২০২৩ সালের ১৭ জুলাই নীতি আয়োগ প্রকাশ করেছিল। এর আগে ২০২১ সালেও এমন এক দারিদ্র সূচক প্রকাশ করেছিল নীতি আয়োগ। শুধুমাত্র আর্থিক মাপকাঠির বিচারে তৈরি ভারতের শেষ সরকারি দারিদ্র্যের পরিসংখ্যান ২০১১ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। সেই তথ্য আপডেট করা হয়নি, কারণ সরকার ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষের খরচ বা ব্যয়কে সমীক্ষা থেকেই বাদ দিয়েছে। আগের সমীক্ষায় গ্রামীণ ভোগ্যসূচকে পতন ঘটেছে বলে দেখানো হয়েছে। পাশাপাশি, সর্বনিম্ন দারিদ্র্য বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও বোঝানো হয়েছে।

নীতি আয়োগের পরিসংখ্যান

এর মধ্যে ২০২৩ সালের সূচকের সংস্করণ জাতীয় পারিবারিক স্বাস্থ্য সমীক্ষার (২০১৯-২১) সর্বশেষ স্তরের তথ্য ব্যবহার করেছে। সমীক্ষায় এনএফএইচএস-৪ (২০১৫-১৬) ও এনএফএইচএস-৫ (২০১৯-২১)-এর বহুমাত্রিক দারিদ্রের পরিবর্তনগুলোকে তুলে ধরেছে। দারিদ্র্যের এই গণনার অনুপাত, অর্থাৎ দেশের বহুমাত্রিক দারিদ্রের অনুপাত, এনএফএইচএস-এর দুই রাউন্ডের মধ্যে প্রায় ২৫% থেকে কমে ১৫%-এর নীচে নেমে এসেছে। যা বোঝায় যে এই সময়ের মধ্যে ১৩৫ মিলিয়ন (বা ১৩.৫ কোটি) ভারতীয় বহুমাত্রিক দারিদ্র্য থেকে রক্ষা পেয়েছেন।

দারিদ্র্য সূচক (এমপিআই)

জাতীয় দারিদ্র সূচক স্বাস্থ্য, পুষ্টি, শিক্ষা এবং জীবনযাত্রার মান- এই সব মাত্রায় দারিদ্রকে পরিমাপ করে। স্বাস্থ্যের মধ্যে, এটি তিনটি বিষয়ের ওপর নজর রাখে: পুষ্টি, শিশু-কিশোর মৃত্যু এবং মাতৃস্বাস্থ্য। শিক্ষায় জোর দেওয়া হয় দুটি বিষয়ে: স্কুলে পড়ার বছর এবং স্কুলে উপস্থিতি। জীবনযাত্রার মানের ক্ষেত্রে এটি স্যানিটেশন, পানীয় জল, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ইত্যাদির মতো সাতটি বিষয়ের ওপর নজর রাখে।

আরও পড়ুন- বিদ্রোহের আগুনে জ্বলেছিল মিজোরাম, কীভাবে দমন করেছিল ভারতীয় সেনা?

আন্তর্জাতিক ও ভারতের দারিদ্র সূচক

এই সূচকটি অক্সফোর্ড দারিদ্র্য ও মানব উন্নয়ন উদ্যোগ (ওপিএইচআই) এবং রাষ্ট্রসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) দ্বারা ব্যবহৃত পদ্ধতির ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু, ভারতের বহুমাত্রিক দারিদ্র সূচক আন্তর্জাতিক দারিদ্র সূচকের মত নয়। উদাহরণস্বরূপ, ভারতের বহুমাত্রিক দারিদ্র সূচকের ১২টি ক্ষেত্র রয়েছে। যা হল মাতৃস্বাস্থ্য এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। যা আন্তর্জাতিক বহুমাত্রিক দারিদ্র সূচকের বিচার্য নয়।

NITI Aayog Modi Government indian economy
Advertisment