দেশকে কেবল আত্মনির্ভর নয়, ডিজিটালি উন্নত করতেও বদ্ধপরিকর প্রধানমন্ত্রী মোদী। ৭৪ তম স্বাধীনতা দিবসে সেই ডিজিটাল ভারত গড়ার লক্ষ্যে তিনটি বড় ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী। এক, ন্যাশনাল ডিজিটাল হেলথ মিশন, দুই নতুন সাইবার সিকিউরিটি পলিসি এবং ১০০০ দিনের মধ্যে দেশের ছ'লক্ষ গ্রামে অপটিকাল ফাইবার কানেকশন দেওয়া। কিন্তু ডিজিটাল ভারত তৈরি করতে এই তিন ঘোষণা এত গুরুত্বপূর্ণ কেন?
অপটিকাল ফাইবার কানেক্টিভিটি
এই প্রকল্পকে মোদী সরকার বলেছে 'বিশ্বের বৃহত্তম সংযোগ প্রকল্প'। কিন্তু ভারতনেট যে হিসেব দিয়েছে তা অত্যন্ত তাৎপর্য্যপূর্ণ। দেশবাসীকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মোদী এর অর্থ হল আড়াই লক্ষের বেশি গ্রামপঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় ৮ লক্ষ কিলোমিটার অপটিকাল ফাইবার দিয়ে কানেক্ট করতে হবে। যার আনুমানিক খরচ ৪২ হাজার ৬৮ কোটি টাকা।
ডিজিটাল ইন্ডিয়া প্রকল্পের ইন্টারনেট সংযোগের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল চলতি বছরের মার্চ মাসেই। কিন্তু করোনার জেরে সেই সময়সীমা বাড়িয়ে তা ২০২১ সালের অগাস্ট মাস অবধি করে দেওয়া হয়েছে। এদিকে চিনের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যার পরবর্তীতে চিনা দ্রব্য ব্যবহারে এসেছে নিষেধাজ্ঞা। এখনও পর্যন্ত ইন্টারনেটের সংযোগ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোনও সংস্থা পায়নি বিএসএনএল। ৪জি কানেকশন আরও উন্নত করতে অর্থের যেমন প্রয়োজন তেমন লোকবলও দরকার। কিন্তু এর কোনওটিই লকডাউনে পাওয়া যাচ্ছে না।
এমনকি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতেও সরকারি সংস্থারা দিশা দেখাতে পারছে না। বেসরকারি সংস্থারাই একচেটিয়া ব্যবসা করছে সেখানে। গত বছর এ প্রসঙ্গে বিএসএনএল-এর এক আধিকারিক বলেন, "অনেক জায়গায় অপটিকাল ফাইবার কানেক্টিভিটিই নেই। অথচ তা থাকার কথা। অনেক জায়গায় তার কেটে পড়ে রয়েছে আর তা মেরামতেরও কোনও সুযোগ নেই।" প্রসঙ্গত ২০১১ সালে ইউপিএ সরকারের সময় এই ইন্টারনেট সংযোগের কাজ শুরু হয়েছিল। মোদী সরকার ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর ফের নতুন উদ্যমে শুরু হয়েছিল সেই কাজ। তবে প্রত্যন্ত যে সব অঞ্চলে এই অপটিকাল ফাইবার পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে না। সেখানে রেডিও এবং স্যাটেলাইট কানেক্টিভিটির ব্যবস্থা করা হবে।
ন্যাশনাল ডিজিটাল হেলথ মিশন
২০১৭ সালে জাতীয় স্বাস্থ্য নীতিতে বড়সড় বদল আনা হয়। স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে ডিজিটাল করার জন্য চলতি মাসের ৭ তারিখ কীভাবে কী করা হবে তার যাবতীয় তথ্য প্রকাশ করে ন্যাশনাল ডিজিটাল হেলথ মিশন। যার মাধ্যমে ভারতে চিকিৎসক, হাসপাতাল, ওষুধের দোকান, ইনস্যুরেন্স সংস্থা-সহ একাধিক বিষয় জানা যাবে এক ক্লিকেই। সেখানে রোগীরা চাইলে নিজেদের হেলথ আইডিও তৈরি করতে পারবেন। এর গুরুত্ব হল ভবিষ্যতে কেউ যদি স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে কোনও সুযোগ সুবিধা নিতে চান তাহলে এই আইডি দিয়েই আবেদন করতে হবে।
সাইবার সিকিউরিটি পলিসি ২০২০
এই নীতি বদলের নেপথ্যে কিন্তু রয়েছে চিন এবং সীমান্ত সমস্যা। ভারতে বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে জনগণের তথ্য চুরি করছে চিন এ নিয়ে দেশে জলঘোলা কম হয়নি। তবে শুধু চিন নয় ওয়াকিবহাল মহলের মত নাসাও ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পর্যবেক্ষণ চালাচ্ছে। তাই সবদিক বিচার করে এই নীতিও বদলের প্রয়োজন ছিল বলেই মনে করা হচ্ছে। গত বছরেই ১২১ জন ভারতীয় হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাকয়ের খবর প্রকাশ্যে এসেছিল। আইনের মাধ্যমে কীভাবে সুরক্ষা দেওয়া যাবে সব তথ্যকে সেই বদলই আসতে চলেছে।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন